ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

দিনে বাড়ছে ৩/৪ টাকা, পেঁয়াজের ঝাঁজ কমছে না সহসাই!

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৭
দিনে বাড়ছে ৩/৪ টাকা, পেঁয়াজের ঝাঁজ কমছে না সহসাই! পোঁজের দাম জানুয়ারির আগে কমার সম্ভাবন‍া দেখছেন না দোকানিরা। ছবি: জি এম মুজিবুর

ঢাকা: দিনে কেজিপ্রতি গড়ে ৩ থেকে ৪ টাকা করে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। তবে শুক্রবারের (২৭ অক্টোবর) তুলনায় শনিবার (২৮ অক্টোবর)  হঠাৎ করেই পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজে একলাফে ১০ টাকা দর বেড়েছে।

বৃষ্টিতে চলমান মৌসুমের পেঁয়াজ নষ্ট হওয়ায় দামের এ বলে ঊর্ধ্বগতি বলে মনে করছেন বিক্রেতারা। আগামী জানুয়ারি মাসের নতুন মৌসুমের পেঁয়াজ ওঠার আগে এ দাম কমার সম্ভাবনা নেই।

রাজধানীর মিরপুর-১ নম্বরে ইকবাল বাণিজ্যালয়ে শনিবার পাইকারিতে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকা ও ক্রস পেঁয়াজ (ভারতের  বীজ থেকে দেশে উৎপাদন) ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ শুক্রবার কেজিপ্রতি উভয় ধরনের পেঁয়াজের দাম পাইকারিতে ১০ টাকা করে কম ছিলো। অন্যদিকে একদিনের ব্যবধানে পাইকারিতে কেজিপ্রতি  পাঁচ টাকা বেড়ে ভারতের নাসিক পেঁয়াজ ৫৫ টাকা, বার্মিজ ৫০ টাকা ও নেপালি মোটা পেঁয়াজ ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
 
পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতারা জানান, প্রতিদিনই পেঁয়াজের দাম গড়ে ৩ থেকে ৪ টাকা করে বাড়ছে। তবে শুক্রবারের তুলনায় শনিবার হঠাৎ করেই পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজে কেজিপ্রতি ১০ টাকা দাম বেড়েছে। আগামী ১৫ নভেম্বর মুড়িকাটা পেঁয়াজ কৃষকের ঘরে ওঠার কথা। কিন্তু  এ পেঁয়াজ বৃষ্টির পানিতে নষ্ট হয়েছে। এক ধরনের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। ফলে সহসাই পেঁয়াজের দাম কমছে না। আগামী বছরের জানুয়ারি মাসের শুরুতে নতুন করে আবারও কৃষকের ঘরে পেঁয়াজ ওঠবে। তখনই দাম কমতে শুরু করবে।
 
ফলে পেঁয়াজের দাম কমতে এখনও প্রায় দু’মাস বাকি।

ভারত থেকে বর্তমানে পেঁয়াজের আমদানিও কম বলে জানিয়েছেন মেসার্স ছাত্তার ট্রেডার্সের মালিক আব্দুস ছাত্তার। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, মুড়িকাটা পেঁয়াজ বৃষ্টিতে নষ্ট হওয়ায় দেশে সংকট চলছে। জানুয়ারি মাসে নতুন পেঁয়াজ না ওঠা পর্যন্ত দাম কমবে না।
 
পাইকারি বিক্রেতারা জানান, বর্তমানে ফরিদপুর, পাবনা, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন হাটে পেঁয়াজ কম উঠছে। তবে কোনো আড়তদারের ঘরে এখন পেঁয়াজ নেই, শুধু কৃষকের চাঙ্গে (কৃষকের সংরক্ষণ পদ্ধতি) রয়েছে। ভারত থেকে আমদানি কম ও মুড়ি কাটা পেঁয়াজ নষ্ট হওয়ার কারণে কৃষকরাও এখন হাটে কম তুলছেন। হয়তো সামনে পেঁয়াজের দাম বাড়বে- এ আশায়। ফলে দেশি হাটগুলোতেও পেঁয়াজের সংকট।
 
পাইকারি বাজারের দাম বৃদ্ধির এ প্রভাব পড়েছে খুচরায়ও। তবে যেসব খুচরা ব্যবসায়ী মজুদ রাখা পেঁয়াজ বিক্রি করছেন, তারাই কিছুটা কম দামে দিতে পারছেন।
 
বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। পেঁয়াজের দাম সহনীয় পর্যায়ে আনার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে রোববার (২৯ অক্টোবর) বৈঠক করবে মন্ত্রণালয়।
 
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুন্সী সফিউল হক বাংলানউজকে বলেন, পেঁয়াজের দাম হঠাৎ করেই বাড়তি। এ বিষয়ে আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে। পেঁয়াজের দাম কেন বাড়ছে- এর সঠিক কারণ উদঘাটন করতে হবে। তবে প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি, ভারতের বাজারে পেঁয়াজের দাম চড়া, এদেশে আমদানিও কম। আমাদের দেশি বাজার -বাদলায় কিছু পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে। ফলে সংকট দেখা দিয়েছে। এ সংকট উত্তরণে সবাইকে নিয়ে বসবো’।
 
বাংলা‌দেশ সময়: ১৮০৪ ঘণ্টা, অ‌ক্টোবর ২৮, ২০১৭
এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।