তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। তাদের ভাষান চরেই একটা ব্যবস্থা করতে হবে।
মঙ্গলবার (০৬ মার্চ) সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ে যুক্তরাজ্যের ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ডিএফআইডি) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে অর্থমন্ত্রী এমএ মুহিত সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
ভাষান চরে রোহিঙ্গাদের স্থায়ী আবাসের প্রসঙ্গে মুহিত বলেন, আমার ধারণা এখানে থাকতে থাকতে যাদের অধিকাংশ বাঙালি হয়ে গেছে তাদের জন্যই এই প্রজেক্ট। তবে নতুনদেরও কিছু নিতে হবে। তবে যাই হোক, এক মিলিয়ন রাখার মতো অবস্থা ভাষান চরে নেই। এছাড়া আমাদের অন্য কোথাও খালি নেই।
রাখাইনে ফেরত যাওয়া নিয়ে তিনি বলেন, আমরা ধারণা, রোহিঙ্গারা বার্মায় (মিয়ানমার) খুব কমই ফেরত যাবে। একে তো তারা (মিয়ানমার সরকার) নেবে কম, আবার যাওয়ার পরেও অনেকে সেখানে ফের বিতারিত হতে পারেন-এ আশঙ্কাতেই যাবে না।
‘সুতরাং তাদের দায়ভার এখন আমাদের। দায়ভারের অংশ হিসেবে সরকার ভাষণ চরে কাজ চলছে। আর যেখানেই জায়গা পাওয়া যাবে সেখানেই রাখতে হবে। এজন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা দরকার। আমরা হয়তো ঘর-বাড়ি বানিয়ে দিচ্ছি কিন্তু আমাদের তো টাকা নেই, আমাদের টাকার অভাব আছে। ’
তিনি বলেন, আগামী বাজেটে রোহিঙ্গাদের জন্য বরাদ্দ রাখা হবে। সেটা হবে বেশ বড় আকারের।
‘ভাষান চর ৬ মাস পানির নিচে থাকে’ এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘নো নো... যে চর এ ঘাস হবে সেটা স্থায়ী। ভাষান চর অনেক আগেই স্থায়ী হয়ে গেছে। আর রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রসেস আছে। তবে সেটা অনেক সময়ের ব্যাপার। ’
রোহিঙ্গাদের এতো সুযোগ সুবিধা দিলে তো ওরা যেতে চাইবে না এমন প্রশ্নের জবাবে উল্টো প্রশ্ন করেন অর্থমন্ত্রী এমএ মুহিত, ‘কোনো রোহিঙ্গা যাচ্ছে?’
তিনি বলেন, এটা (রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন) আসলে সম্ভব না। একমাত্র উপায় আছে, রাখাইন রাজ্য থেকে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে মগদের বিতারিত করতে হবে। ১৯৮০ সাল পর্যন্ত এটা রাখাইনদের ছিল। রাখাইন রাজ্য আসলে ‘অকুপাইড’ (দখল) করে নিতে হবে। আর সেটা ওরাই (রোহিঙ্গা) করবে।
তবে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে কূটনৈতিক ঘাটতি দেখছেন না অর্থমন্ত্রী এমএ মুহিত। তিনি বলেন, বিশ্বের অধিকাংশ দেশ আমাদের সমর্থন দিচ্ছে। কিন্তু তারা (মিয়ানমার) কয়জন নেবে? তারা হয়তো ১০ থেকে ১৫ জন নেবে। দে আর ভেরি অ্যাপসুলিউটলি এভিল গভর্মেন্ট।
অর্থমন্ত্রী আবার এও বলেন, ৫০ বছর পরে হলেও তাদের ফেরত যেতে হবে। তাদের যে সম্পদ আছে তখন তারা এটা চাইবে। তখন এই উর্দিওয়ালারা (সেনা কর্মকর্তা) যাবে কই? আর মিয়ানমারও বিশ্বে টিকে থাকবে না।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এমএ মুহিত বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বাতিল করলেও কোনো লাভ হবে না। এখন তো তাদের সঙ্গে বসা যায়, কথা বলা যায়। মিয়ানমারের সম্পর্ক রাখলেও লাভ নেই, না রাখলেই নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০১ ঘণ্টা, মার্চ ০৬, ২০১৮/আপডেট: ২০৪০ ঘণ্টা
এসএম/এমএ