কুড়িগ্রাম জেলা শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে সবজি গ্রাম খ্যাত কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের ধরলা নদীর ভাঙন কবলিত কুয়েত পল্লি এলাকায় আলু রপ্তানির প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যস্ত সময় কাটছে এ জনপদের নারী শ্রমিকদের। সেই শ্রমিকদের সঙ্গে আলাপেই জানা গেল এই বৈষম্যের কথা।
আরওয়া অ্যাগ্রো ইন্টারন্যাশনাল এক্সর্পোট কোম্পানির এক একর জমির ওপর নির্মিত চালাঘারে নির্দিষ্ট মাপের আলু বাছাই, গ্রেডিং, ওজন, প্যাকিং করে রপ্তানি উপযোগী করা হচ্ছে। রপ্তানির জন্য আলু প্রক্রিয়াজাতকরণে নিজ এলাকায় কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় খুশি এসব নারী শ্রমিকরা। এখানে প্রতিদিন কাজ করছে প্রায় ৩ শতাধিক নারী।
প্রতিষ্ঠানটি কুড়িগ্রাম জেলার আলু মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে রফতানি করার সুবাদে নারী শ্রমিকরা যেমন ব্যস্ত সময় পার করছে, তেমনি অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করে সংসারে আনছে স্বচ্ছলতা।
তবে তাদের ক্ষোভও রয়েছে মজুরি বৈষম্যের কারণে। পুরুষদের মজুরি দেওয়া হচ্ছে ২৫০ টাকা, আর নারী শ্রমিকদের দেওয়া হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা। শুধু এখানেই নয়, সর্বক্ষেত্রে নারী শ্রমিকরা প্রকৃত মজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
আলু বাছাই, গ্রেডিং, ওজন, প্যাকিং কাজে নিয়োজিত নারী শ্রমিক আজিরন নেছা (৫০). রাশেদা বেগম (৪০), রঞ্জিনা খাতুনসহ (২৫) আরও অনেক নারী শ্রমিকের বাংলানিউজের সঙ্গে কথা হয়।
তারা বলেন, এ গ্রাম থেকে বিদেশে আলু রপ্তানি হওয়ায় কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তাই বাড়ির পাশেই কাজ করে সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে পারছেন তারা।
তারা আরও বলেন, কাজের মূল্য পুরুষদের সমান হলে তাদের জন্য আরও ভালো হতো। নারী-পুরুষ শ্রমিকের মজুরি সমান হলে আমাদের কাজের গতি যেমন বৃদ্ধি পেতো, তেমনি অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতো এ অঞ্চলের নারীরা।
আরওয়া অ্যাগ্রো ইন্টারন্যাশনাল এক্সর্পোট কোম্পানির ম্যানেজার লোকমান হোসেন শ্রমিকদের মজুরি প্রসঙ্গে বাংলানিউজকে বলেন, রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণের কাজে শ্রমিকদের দক্ষতা অনুযায়ী মজুরি নির্ধারণ করা হয়। সেই মোতাবেক চুক্তি অনুসায়ী মজুরি দেওয়া হয়। তবে বাইরে অন্য কাজের চেয়ে এখানে তুলনামূলক বেশি মজুরি পাচ্ছেন নারী শ্রমিকরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৯ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০১৮
এফইএস/জিপি