চট্টগ্রাম থেকে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল পর্যন্ত ১৬ ইঞ্চি ব্যাসের ২৩৮ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণ করা হবে। এছাড়া গোদলাইন থেকে ফতুল্লা পর্যন্ত ১০ ইঞ্চি ব্যাসের ৮ কিলোমিটার এবং কুমিল্লা থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত ৬ ইঞ্চি ব্যাসের ৫৯ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ পাইপলাইন নির্মাণ করা হবে।
‘পাইপলাইন ফর ট্রান্সপোর্টেশন অব হোয়াইট পেট্রোলিয়াম অয়েল ফ্রম চিটাগাং টু ঢাকা, কুমিল্লা অ্যান্ড চাঁদপুর’ প্রকল্পের আওতায় পাইপলাইন নির্মিত হবে। ২ হাজার ৮৬৮ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে।
জরিপ ও সম্ভাব্যতা যাচাই করে প্রকল্পের ডিপিপি(প্রকল্পের উন্নয়ন প্রস্তাব) তৈরি করেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন(বিপিসি)। বিপিসি এরই মধেই পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগে ডিপিপি পাঠিয়েছে। চলতি মাসে প্রকল্পটি নিয়ে কয়েক দফা প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির(পিইসি) সভা হয়েছে। পিইসি সভায় সভাপতিত্ব করেন শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য(সচিব) বেগম শামীমা নার্গিস। সর্বশেষ ১৩ মে প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করে পিইসি সভা।
প্রকল্প প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের (শিল্প ও শক্তি বিভাগ) উপ-প্রধান ওমর মোহাম্মদ ইমরুল মহসিন বাংলানিউজকে বলেন, প্রকল্পটি নিয়ে সফল পিইসি সভা হয়েছে। দেশে এমন প্রকল্প এবারই প্রথম নেয়া হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম থেকে গ্রামে-গঞ্জে কম সময়েই হোয়াইট পেট্রোলিয়াম পৌঁছে দেয়া সম্ভব হবে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। খুব কম সময়েই প্রকল্পটি পিইসি সভায় উপস্থাপন করা হবে।
নানা কারণেই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে সরকার। বর্তমানে বাংলাদেশে পেট্রোলিয়ামের বার্ষিক চাহিদা ৫৫ লাখ মেট্রিক টন। দেশে গ্যাসের চাহিদা দিনদিন বাড়ছে। পেট্রোলিয়ামেরও চাহিদা বাড়ছে। ২০২১ সালের পর দেশের পুরাতন বিভিন্ন ফিল্ড থেকে গ্যাস উত্তোলন কমতে থাকবে। দেশে আর কোনো নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করা না গেলে বিকল্প জ্বালানি হিসেবে পেট্রোলিয়ামের চাহিদা দ্রুত বাড়তে থাকবে। ঢাকা ও এর আশেপাশে বার্ষিক পেট্রোলিয়ামের চাহিদা ১৫ লাখ মেট্রিক টন। বর্তমানে তা গোদলাইন ও ফতুল্লা ডিপোসমূহের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়।
অন্যদিকে চাঁদপুরে অবস্থিত তেল বিপণন কোম্পানিসমূহের ডিপোতে পেট্রোলিয়ামের চাহিদা ১ দশমিক ৫৫ লাখ মেট্রিক টন।
চট্টগ্রাম থেকে কোস্টাল ট্যাংকারযোগে বর্তমানে গোদলাইন, ফতুল্লা ও চাঁদপুরে জ্বালানি তেল পরিবহন করা হয়। এতে বিপুল খরচ হয়। পরিবহনের জন্য পরিবহন ঘাটতিও হয়। পাশাপাশি নদীপথে ট্যাংকারযোগে জ্বালানি তেল পরিবহনে পরিবেশ দূষণগত ঝুঁকিও রয়েছে।
বর্তমানে জলপথে ৯০ শতাংশ জ্বালানি তেল পরিবহন করা হয়। এর জন্য রয়েছে ২০০টি কোস্টাল ট্যাংকার। দিনদিন নদীগুলোর নাব্যতা কমে যাচ্ছে। এছাড়া আবহাওয়া খারাপ হলে ট্যাংকার পরিচালনা করা যায় না। ফলে জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়লেও সঠিক সময়ে পরিবহন করা অনেক সময় সম্ভব হয়ে ওঠে না। সঠিক সময়ে ও নির্বিঘ্নে হোয়াইট পেট্রোলিয়াম পরিবহনের জন্যই নির্মিত হতে যাচ্ছে ভূগর্ভস্থ পাইপলাইন।
বাংলাদেশ সময়: ০৩০৫ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৮
এমআইএস/জেএম