২০১৬ সালের অক্টোবরে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ঢাকা সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে এফটিএ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একটি যৌথ সমীক্ষা যাচাই গ্রুপ গঠনে সমঝোতা স্মারক সই হয়। সে অনুযায়ী দুই দেশ গ্রুপ গঠন করে।
সূত্র জানায়, আগামী ২০-২১ জুন অনুষ্ঠেয় এ বৈঠকে বাংলাদেশের ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেবে। এই দলের নেতৃত্ব দেবেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শফিকুল ইসলাম।
তবে চীনের সঙ্গে এফটিএ বাস্তবায়নে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এর নানা দিক যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এই চুক্তি প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ কোনো ধরনের তাড়াহুড়ো করতে চায় না। কেননা চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের অনেক বেশি বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। চীন থেকে বাংলাদেশ বছরে ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি করে। আর বিপরীতে বাংলাদেশ চীনে রফতানি করে বছরে মাত্র এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য। সে কারণেই এফটিএ চুক্তির আগে নানা দিক খতিয়ে দেখতে চায় বাংলাদেশ। বিশেষ করে বাংলাদেশের শিল্প বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হবে কি না তা নিয়ে প্রথমে নিশ্চিত হতে চায় সরকার। পরে সে অনুযায়ীই পদক্ষেপ নেবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) হিসেবে চীনের বাজারে চার হাজার ৮৮৬টি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা পেয়ে আসছে। এছাড়া এশিয়া প্যাসিফিক ট্রেড এগ্রিমেন্টের (এপিটিএ) আওতায় ২০১০ সাল থেকে চীনা বাজারে প্রায় পাঁচ হাজার পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধাও পাচ্ছে বাংলাদেশ।
চীন ছাড়াও আরও বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ। সে অনুযায়ী চীনের সঙ্গেও বাংলাদেশ চুক্তিতে আগ্রহী। তবে বাংলাদেশের সঙ্গে এফটিএ করার এ প্রস্তাব প্রথমে চীনের পক্ষ থেকেই দেওয়া হয়েছিল। এফটিএ করার পক্ষে চীনের যুক্তি হলো- এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে অধিক হারে চীনের বিনিয়োগ আসবে। আর বাংলাদেশের রফতানিও বহুমুখী হবে।
ঢাকার চীনা দূতাবাসের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কাউন্সিলর লি গুয়াং জুন বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য উদ্বৃত্ত রাখতে চীনের কোনো ইচ্ছা নেই। আমরা বাংলাদেশ থেকে অধিক হারে পণ্য চীনে রফতানি কামনা করি। এজন্যই এফটিএ নিয়ে আলোচনা চলছে। এফটিএতে শুধু পণ্য নয়, বিনিয়োগের প্রবাহও অবারিত হবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, ০৬ জুন, ২০১৮
টিআর/টিএ