পড়ুন বাংলানিউজের বর্ষপূর্তির ই-ম্যাগ
পশুর নদীর জয়মনির গোলে ১৯৫০ সালে ‘দ্যা সিটি অব লিয়নস’ নামে ব্রিটিশ বাণিজ্যিক জাহাজ নোঙরের মাধ্যমে মোংলা বন্দরের কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৭৬ সালে একটি অধ্যাদেশের আওতায় ১৯৭৭ সালে চালনা বন্দর কর্তৃপক্ষ নামে একটি স্বশাসিত সংস্থা হিসেবে রূপ নেয়।
কোনো এক সময়ের লোকসানি ও অবহেলিত এ বন্দর গত এক দশক ধরে দেশের জাতীয় আয়ে, বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্যে অবদান রাখছে। বিদেশ থেকে আমদানি করা দ্রব্য দেশে আনা অথবা দেশ থেকে দ্রুত গন্তব্যস্থলে রপ্তানি মালামাল পৌঁছে দেওয়ার স্বর্ণদ্বার ৬৭ বছরের পুরনো এ বন্দর।
চলতি বছরের ৪ এপ্রিল মোংলা বন্দরের ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এসময় তিনি দু’টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও দু’টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।
যেভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে মোংলা বন্দর
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ব্যবসায়ীদের আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে আশির দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত মোংলা লাভজনক বন্দর হিসেবে পরিচিতি ছিল। এরপর থেকে ধীরে ধীরে বন্দরের অবস্থা অবনতি হতে থাকে। বিশ্ব বাজারে পাট ও পাটজাত পণ্যের মন্দা, দেশের পাটকলগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়া ও রপ্তানি বাণিজ্য পরিবর্তন হওয়ায় এ বন্দর দিয়ে রপ্তানি কমে যায়। বন্দরের মাথাভারী প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনায় অদক্ষতা বন্দর ব্যবহারকারীদের বিমুখ করে তোলে।
পরবর্তী বছরগুলোতে বিশেষ করে ৯০ এর দশক থেকে বিভিন্ন সরকারের অবহেলা ও পশুর নদের চ্যানেলে নাব্যতা কমে গিয়ে মোংলা বন্দরের ব্যবহার উপযোগিতা কমিয়ে দেয়। এক পর্যায়ে মোংলা বন্দর প্রায় জাহাজশূন্য হয়ে পড়ে। ২০০৩-২০০৪ অর্থবছর থেকে ২০০৭-২০০৮ অর্থবছর পর্যন্ত বন্দরের লোকসানের পরিমাণ ছিল ৩৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বন্দরের আমদানি-রপ্তাণি বাণিজ্য সম্প্রসারণে বহুমুখী পদক্ষেপ ও উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে। পরে পশুর নদ সংলগ্ন মোংলা বন্দরের গতিময়তা ফিরে আসে। এ বন্দর দিয়ে আমদানির পরিমাণ যেমন বেড়েছে তেমনি বেড়েছে রপ্তানিও। লোকসান কাটিয়ে লাভের মুখ দেখেছে বন্দর।
২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত ক্রমাগত লোকসানের পর বর্তমানে বন্দরটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। উন্নয়ন ও ব্যবহার বাড়ানোর ধারাবাহিকতায় গত ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে রেকর্ড সংখ্যক ৬২৩টি বৈদেশিক জাহাজ এ বন্দরে ভেড়ে।
বর্তমান সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প ও পদক্ষেপের কারণে এক সময়ের রুগ্ন মোংলা বন্দর এখন মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। ২০০৮-০৯ অর্থবছরে মোংলা বন্দরের লাভের পরিমাণ ছিল মাত্র তিন কোটি টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭১ কোটিতে। মোংলা বন্দরকে আরও গতিশীল করতে ড্রেজিং ও যন্ত্রপাতি সংগ্রহসহ বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ চলমান।
বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানির ৯৮ শতাংশ সমুদ্রবন্দরের মাধ্যমে হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য দু’টি সমুদ্রবন্দর থাকা সত্ত্বেও সমুদ্রপথের আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে আমরা একটিমাত্র বন্দর অর্থাৎ, চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর নির্ভরশীল ছিলাম। বিভিন্ন কারণে মোংলা বন্দর ব্যবহারকারীদের আকৃষ্ট করা সম্ভব হয়নি। ২০০৯ সাল থেকে মোংলা বন্দরের যথাযথ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সরকার ও বন্দর কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত কার্যকর ব্যবস্থা নিয়েছে। এতে বন্দর ব্যবহারকারীরা আগের চেয়ে বন্দর ব্যবহারে অনেক বেশি আগ্রহী হচ্ছে। প্রতিবছরই বন্দরের কার্যক্রম আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। দুই বছর ধরে বন্দরের কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের প্রবৃদ্ধি ২৮ শতাংশের ঊর্ধ্বে। এটা উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি।
২০১৮-পরবর্তী সময়ে পদ্মা সেতু চালু, খুলনা-মোংলা বন্দর রেল যোগাযোগ স্থাপন, খান জাহান আলী বিমানবন্দর, রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের উৎপাদন শুরু এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) কার্যক্রমসহ বিভিন্ন বেসরকারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান উৎপাদনে যাবে। সবকিছুতে মোংলা বন্দরের প্রবৃদ্ধি আরও উল্লেযোগ্য হারে বাড়বে।
২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত যে সব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে তাতে বন্দরের সেবার মান আগের তুলনায় বেড়েছে। আরও কিছু অবকাঠামোগত উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট স্বল্পমেয়াদী প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন, যা ২০১৮ সালের মধ্যে সম্পন্ন হবে। এগুলো বাস্তবায়িত হলে বন্দর আরও উন্নত সেবা নিশ্চিত করতে পারবে। এছাড়া আরও কিছু মধ্যমেয়াদী প্রকল্প অনুমোদনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে, যেগুলো ২০২০ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন হতে পারে।
বিশেজ্ঞরা মনে করছেন, উন্নয়নের এ অগ্রযাত্রার সঙ্গে তারকা হোটেল, ভবন, মার্কেট ইত্যাদি নির্মাণ করলে বন্দরের প্রতি মানুষ আরও বেশি আকৃষ্ট হবেন।
সুবিধা বেশি মোংলা বন্দরে
সমুদ্রপথেই বাংলাদেশের অধিকাংশ আমদানি পণ্য দেশে আসছে। এক্ষেত্রে দেশের দু’টি প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম ও মোংলার পাশাপাশি পায়রা সমুদ্রবন্দরও ব্যবহার করা হচ্ছে। রপ্তানির ক্ষেত্রে ব্যবহার হচ্ছে চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্রবন্দর। তবে চট্টগ্রাম বন্দরই দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে মূল নিয়ামক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কিন্তু আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা নিয়ে এখন বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠছে। আমদানিকারক-রপ্তানিকারকদের মধ্যে এ নিয়ে বাড়ছে হতাশা, ক্ষোভ। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে কন্টেইনারে আমদানি করা পণ্য হাতে পেতে গত দুই দশকের মধ্যে এখন সবচেয়ে বেশি সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। গতবছর গড়ে প্রতিটি কন্টেইনারের পণ্য হাতে পেতে চারদিনের বেশি বা ১০৩ ঘণ্টা সময় লেগেছে। চলতি বছরের শুরুতেও এ অপেক্ষার সময় কমেনি। আমদানি করা পণ্য বুঝে পেতে সময় বেশি লাগায় ব্যবসায়ীরা দুই ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। প্রথমত, আমদানিকারকরা দেরিতে কাঁচামাল হাতে পাওয়ায় কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। আবার যথাসময়ে পণ্য না পাওয়ায় বাজারজাতও করা যাচ্ছে না সময়মতো। দ্বিতীয়ত, দীর্ঘ অপেক্ষার কারণে খরচ বেড়ে যাওয়ায় জাহাজ কোম্পানিগুলো পরিবহন ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছে।
আমদানিকারকদের এ বাড়তি ভাড়া পরিশোধ করতে হয়, শেষ পর্যন্ত যা ভোক্তার কাছ থেকে আদায় করেন ব্যবসায়ীরা। অর্থাৎ, বন্দর সুবিধার অভাবের বাড়তি খরচের দায় মেটাতে হচ্ছে ভোক্তাদেরই।
বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের চেয়ে মোংলা বন্দরে সুবিধা বেশি। বিশেষ করে গাড়ি আমদানিতে মোংলা বন্দরে সুবিধা বেশি। তুলনামূলক খরচ কম, নিরাপদে গাড়ি রাখার সুবিধার কারণেই চট্টগ্রামের চেয়ে মোংলা বন্দর দিয়ে গাড়ি আনতে ব্যবসায়ীদের আগ্রহ বাড়ছে।
তারা আরও বলছেন, পদ্মা সেতু চালু হলে গোটা দক্ষিণাঞ্চলের ভাগ্য বদলে যাবে। এর ফলে মোংলা বন্দরের সঙ্গে রাজধানীসহ সারাদশে যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ণ সুবিধা সৃষ্টি হবে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আমদানি করা পণ্য রাজধানীতে নিতে ১২/১৪ ঘণ্টা সময় লাগে, সেখানে পদ্মা সেতু চালু হলে মোংলা থেকে ঢাকায় আমদানি করা পণ্য নিতে সময় লাগবে ৫/৬ ঘণ্টা। খান জাহান আলী বিমানবন্দর, খুলনা-মোংলা রেললাইন নির্মিত হলে মংলার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন হবে। বিনিয়োগকারীরা প্লেনযোগে মোংলা বন্দরে যেমন আসতে পারবে তেমনি অপর সৌন্দর্যে ভরপুর সুন্দরবন দেখতে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা আসতে পারবে। রেল যোগাযোগের মাধ্যমে মোংলা বন্দর থেকে সারাদেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। সব মিলিয়ে মোংলা বন্দর অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হবে আরও।
দিন দিন গুরুত্ব বাড়ছে মোংলা বন্দরের
ভৌগলিক অবস্থানগত কারণে বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী বাংলাদেশ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমার বিরোধ সমাধান পরবর্তী সময়ে বিশাল সমুদ্রসীমার মালিকানা লাভের পরিপ্রেক্ষিতে বঙ্গোপসাগরকেন্দ্রিক কার্যক্রম এ গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। কারণ, এ বঙ্গোপসাগরের ভূ-কৌশলগত সুবিধা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে সমুদ্রবন্দরভিত্তিক অর্থনীতি ক্রমেই শক্তিশালী হচ্ছে। যে কারণে ইতোমধ্যে বাংলাদেশে তিন তিনটি সমুদ্রবন্দর যেমন- চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর নির্মিত হয়েছে। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর হলেও মোংলা সমুদ্রবন্দর আধুনিক বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় স্থাপনা হিসেবে ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
একটি আন্তর্জাতিক বন্দর হিসেবে মোংলার গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা, উত্তর আমেরিকা, লাতিন আমেরিকার দেশগুলো থেকে এ বন্দরে জাহাজ আসে। সিঙ্গাপুর-কলোম্বো-হংকং হয়ে বেশির ভাগ জাহাজ মোংলায় আসে। বাংলাদেশের প্রায় সব নদী বন্দরগুলোর সঙ্গে মোংলার সংযুক্তি যেমন রয়েছে, তেমনি উপকূলীয় জাহাজ চুক্তির মাধ্যমে কলকাতা বন্দর এবং থাইল্যান্ডও মোংলার সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে, যা মোংলাকে আন্তর্জাতিক বন্দর হিসেবে আরও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।
পৃথিবীর প্রায় সব বন্দরের সঙ্গেই মোংলা বন্দরের বাণিজ্য সম্পর্ক রয়েছে। সম্প্রতি মোংলা বন্দর ঘিরে জেগেছে নতুন সম্ভাবনা। ভারত ও নেপালের সঙ্গে চুক্তির ফলে এ সম্ভাবনা আরও বেড়ে গেছে। ভারত, ভুটান ও চীনের কাছেও মোংলা বন্দরের গুরুত্ব রয়েছে। তাদের এ বন্দর ব্যবহারে সুযোগ দিলে মোংলা বন্দর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম বাণিজ্য কেন্দ্রে পরিণত হবে।
মোংলা বন্দর এখন আশীর্বাদ
বর্তমান সরকারের কার্যকরী পদক্ষেপে মৃতপ্রায় বন্দরটিতে কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে। এক সময়কার অভিশপ্ত বন্দর এখন আমাদের কাছে আশীর্বাদ। আশা করা হচ্ছে, আগামী এক দশকের মধ্যে মোংলা বন্দরসহ গোটা খুলনাঞ্চল ঈর্ষণীয় অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করবে যা জিডিপির (গ্রস ডমেস্টিক প্রোডাক্টশন) প্রবৃদ্ধিতে ২ শতাংশেরও বেশি অবদান রাখবে। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির এ সাফল্যে মোংলা বন্দর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। এতে ‘ডাবল ডিজিটের’ প্রবৃদ্ধি অর্জনের যে স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ তা পূরণে মোংলা বন্দরসহ দক্ষিণাঞ্চল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর এ কে এম ফারুক হাসান বাংলানিউজকে বলেন, উন্নয়নের সুবাতাস বইছে মোংলা বন্দরের উপর দিয়ে। অবকাঠামোগত উন্নয়নের ফলে মোংলা বন্দর দ্রুত আধুনিকায়নের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এর ফলে বন্দর ব্যবহাকারীসহ সবার নজর এখন এ বন্দরের দিকে পড়ছে।
তার ভাষ্যমতে, ২০০১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ক্রমাগত লোকসানের পর বর্তমান সরকার মোংলা বন্দর উন্নয়ন ও ব্যবহার বাড়াতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে নানামুখী পদক্ষেপ নেয়। বন্দরের সার্বিক সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বেশ কিছু প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। সরকারের নানামুখী ইতিবাচক পদক্ষেপে বন্দরের ব্যবহার বাড়তে থাকে। ২০০৯ সাল থেকে এটি একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। রাজস্ব খাতে আয় বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে মোংলা বন্দর জাতীয় মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিতে অবদান রেখে চলেছে। আমদানি করা খাদ্যশস্যের ৪০ শতাংশের বেশি এ বন্দর দিয়ে খালাস হয়। বছরে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা মূল্যের পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয় এ বন্দরের মাধ্যমে। কর্মসংস্থান হয় ১০ হাজার লোকের। তবে পদ্মা ব্রিজ, খুলনা-মংলা রেললাইন, রামপাল পাওয়ার প্ল্যান্ট, বিমানবন্দর, ইপিজেড, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, প্রতিবেশী দেশগুলোর ট্রানজিট সুবিধা চালুর পর বন্দরের ব্যবহার আরও ৩ থেকে ৪ গুণ বেড়ে যাবে। দেশি-বিদেশি বাণিজ্য পণ্য আমাদানি-রপ্তানির সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে এখন থেকেই আমাদের তৈরি হতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৮ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০১৮