এছাড়াও মাছের অভয়ারণ্য ও প্রদর্শনী স্থাপন করে করা হচ্ছে প্রায় হারিয়ে যাওয়া শিং, পাবদা, গুলশা, রয়নার চাষ। নেয়া হয়েছে নিরাপদ মাছ উৎপাদনের চ্যালেঞ্জ।
যশোর জেলা মৎস্য দফতরের হিসাব মতে, জেলায় মোট মাছের চাহিদা ৬০ হাজার ৫৪৪ মেট্রিক টন এবং উৎপাদিত মাছের পরিমাণ ২ লাখ ৩৬ হাজার ৪২০ মেট্রিক টন। উদ্বৃত্ত ১ লাখ ৭৫ হাজার ৮৭৬ মে. টন মাছ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের চাহিদা মেটায়। এখানকার বাওড়, মুক্ত জলাশয় ও উদ্যোক্তাদের পুকুরে এসব মাছ চাষ হয়ে থাকে। এসব মাছ যেহেতু জাতীয় পর্যায়ে যশোরের সুনাম বয়ে এনেছে সে কারণে বাওড়ের মাছকে বিশেষ পরিচিতির জন্য ব্রান্ডিং করার চিন্তা করছে কর্তৃপক্ষ।
চলতি বছর চিংড়ির উৎপাদন হয়েছে ৬ হাজার ৯৬৫ মে. টন। এ চিংড়ির উৎপাদন কেবলমাত্র মণিরামপুর, কেশবপুর ও অভয়নগর উপজেলায় হয়েছে।
মৎস্য অধিদফতর সূত্র জানায়, যশোর অঞ্চলে বর্তমানে মোট চাষ উপযোগী জলাভূমির পরিমাণ ৭৫ হাজার ৪৮৪ হেক্টর। মোট মাছ চাষ সংশ্লিষ্টদের সংখ্যা ৮৬ হাজার ৬৬৭ জন। মৎস্য দফতরে নিবন্ধিত মৎস্য চাষির সংখ্যা ১৫ হাজার ৭৬৪ জন। জনশক্তি ও সম্পদ থেকেই এ অর্জন সম্ভব হয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরো সম্ভাবনা অর্জনের সুযোগ এখন সময়ের ব্যাপার।
এদিকে, সারাদেশের মতো যশোরেও বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) দুপুরে মাছের পোনা অবমুক্তকরণ ও বর্ণাঢ্য প্রচার শোভাযাত্রা এবং আলোচনাসভার মধ্য দিয়ে জাতীয় মৎস সপ্তাহ উদযাপন শুরু হয়েছে।
এদিন যশোর কালেক্টরেট চত্বরে বাদ্যের তালে তালে বেলুন ফেস্টুন উড়ানো হয়। এতে মৎস্যজীবী, মৎস্যচাষি ও সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পরে কালেক্টরেট পুকুরে ২০ কেজি রুই ও কাতলা মাছ অবমুক্ত করা হয়।
যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ‘স্বয়ংসম্পূর্ণ মাছে দেশ বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। পুরো অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আওয়াল।
আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য ও সভাপতিত্ব করেন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. শেখ শফিকুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ভবতোষ কান্তি সরকার ও বৃহত্তর যশোর জেলার মৎস্য উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালক হরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস। হ্যাচারি মালিক সমিতির পক্ষে বক্তব্য রাখেন, যশোর হ্যাচারি মালিক সমিতির সভাপতি ফিরোজ খান।
চাষিদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন, জাফর ইকবাল ও সালমা ইয়াসমিন। সঞ্চালনা করেন জেলা মৎস্য অধিদফতরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক আক্তার উদ্দিন ও যশোর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আহসান হাবিব পারভেজ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল বলেন, মৎস্যসম্পদ জাতীয় অর্থনীতি, পুষ্টি ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির মাধ্যমে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্য বিমোচনে বিশেষ অবদান রাখছে। তাই সরকারের গৃহিত এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে যশোরের মাছচাষিদের সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
আনন্দ প্রচার শোভাযাত্রায় জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ মৎস্যচাষি, মৎস্যজীবী, হ্যাচারি মালিক, মৎস্য ব্যবসায়ীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৮
ইউজি/এসএইচ