শীতের সবজির পাশাপাশি আগাম পাওয়া যাচ্ছে গ্রীষ্মকালীন সবজি৷ আগাম সবজির দাম বেশি হলেও স্থিতিশীল রয়েছে অন্যান্য সবজির দাম। অপরিবর্তিত রয়েছে ডাল, ডিম, চিনি, আটা, গুঁড়া দুধসহ সব ধরনের মুদি পণ্যের দাম।
শুক্রবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর শান্তিনগর, সূত্রাপুর, নয়াবাজার, রায়সাহেব বাজার, শ্যামবাজার, সেগুনবাগিচাসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রতি কেজি খোলা সয়াবিন তেল ৮৮ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। যা গত সপ্তাহে ছিল ৮২ টাকা। আর ৫ লিটারের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ছিল ৪৫০ টাকা। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ টাকা। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকায়। লেয়ার মুরগি (ছোট) বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ টাকা থেকে ২০৫ টাকা পিস আর মাঝারি সাইজের পাকিস্তানি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকায়। বড় সাইজের মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়।
নাজিরশাইল চাল গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল কেজি প্রতি ৬০ টাকায়, বর্তমানে ৫৮ টাকা। মিনিকেট চাল ৫৫ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে ৫২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। স্বর্ণা গত সপ্তাহে ছিল ৪২ টাকা বর্তমানে ৪০ টাকা, বিআর ২৮ প্রতি কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে ৩৮ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
মুরগি ব্যবসায়ী খোকন বাংলানিউজকে জানান, বেশ কিছুদিন মুরগির দাম স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু বিয়ে ও পিকনিককে কেন্দ্র করে হঠাৎ মুরগির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দাম বেড়েছে। চলতি মাসের শুরু থেকেই মুরগির দাম বাড়তি। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে পাকিস্তানি মুরগির দাম।
মুরগির দাম বাড়লেও বাজারে ডিম, গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। গরুর মাংস আগের মতোই ৪৮০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা কেজি এবং খাসির মাংস ৭০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মুরগির ডিম প্রতি ডজন ৯৫ টাকা, হাঁসের ডিম ১৫৫ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ১৭০ টাকা ডজন বিক্রি হতে দেখা গেছে।
মহিন জেনারেল স্টোরের মালিক বাংলানিউজকে জানান, গত সপ্তাহের তুলনায় খোলা ও প্যাকেটজাত তেলের দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে এলাচ ও দারুচিনির দাম। এলাচের দাম কেজিতে বেড়েছে ৪০০ টাকা। দারুচিনি কেজিতে ৫০ টাকা বেড়েছে। তবে চালের দাম কেজিতে ১ থেকে ২ টাকা কমেছে। আগের সপ্তাহ থেকে ২ টাকা কমে নতুন দেশি পেঁয়াজ ১৮ থেকে ২২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি ১৫ থেকে ২০ টাকা।
রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে সবজির সরবরাহ ভালো থাকায় বেশিরভাগ সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আগাম সবজির মধ্যে প্রতি কেজি করলা বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, ঝিঙ্গা ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা। এছাড়া শীতের সবজি লাউ মানভেদে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শিম ১৫ থেকে ২০ টাকা, বেগুন ২০ থেকে ৩০ টাকা, ফুলকপি ১০ থেকে ১৫ টাকা পিস, বাঁধাকপি ১৫ থেকে ২৫ টাকা পিস, শালগম ১০ থেকে ২০ টাকা কেজি এবং মূলা ১০ থেকে ২০ টাকা, পাকা টমেটোর কেজি ১৫ থেকে ৩০ টাকা, নতুন আলুর ১৫ টাকা ও কাঁচা মরিচ ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পালং শাক বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ১৫ টাকা আঁটি, লাল ও সবুজ শাক বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ১০ টাকা আঁটি, লাউ শাক পাওয়া যাচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকায় ও সরিষা শাক ৫ থেকে ৫ থেকে ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজির দামের বিষয়ে সেগুনবাগিচা বাজারের ব্যবসায়ী মাসুদ বলেন, বাজারে এখন সব ধরনের শীতের সবজি ভরপুর। যে কারণে সবজির দাম তুলনামূলক কম। শীতের সবজি শেষ হয়ে এলেই আবার সবজির দাম বেড়ে যাবে। বর্তমানে আগাম গ্রীষ্মকালীন সবজি পাওয়া গেলেও দাম অনেক বেশি।
এদিকে গত সপ্তাহের চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ। রুই মাছ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা কেজি। পাবদা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি। টেংরা মাছের কেজি ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা। তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৮০ টাকায়, শিং মাছ ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, বোয়াল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায়, চিতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায়, আইড় মাছ ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়, বাইলা মাছ ৭০০ টাকায়, বাইম ৬০০ টাকায়, পোয়া ৫০০ টাকায় ও মলা ৪০০ টাকায়। তবে ইলিশের দাম বেড়েছে হালিতে ৫০০ থেকে এক হাজার টাকা।
অপরিবর্তিত রয়েছে মুদি পণ্যের দাম। বাজারে প্রতি কেজি খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ২৬ টাকা, প্যাকেট ৩২ টাকা, চিনি আমদানিকৃত ৫০, দেশি লাল চিনি ৫৬ টাকা, ডাল ৪০ থেকে ৯০ টাকা, মানভেদে গুঁড়া দুধের প্যাকেট ২৭০ থেকে ৫৫০ টাকা, সরিষার তেলের কেজি ১২০ টাকা, লবণ ৩০ থেকে ৩৫ ও পোলাও-এর চাল ৯০ থেকে ৯৫ টাকা কেজি।
বাংলাদেশ সময়: ১০০৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৯
জিসিজি/আরআর