দেশের উত্তরের বড় স্থলবন্দর হিসেবে পরিচিত হিলি থেকে সড়ক পথে বিভিন্ন এলাকার রাস্তা ভালো হওয়ায় কয়েক বছর ধরে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বাড়ছে। কিন্তু সম্প্রতি হঠাৎ করে ভারতের অংশে ফারাক্কা ব্রিজ সংস্কারের কাজ শুরু হওয়ায় দেশটির সরকার ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
হিলি স্থলবন্দর হিলি কাস্টমস রাজস্ব কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড হিলি কাস্টমসে ২৬৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বেধে দিলেও গেলো জুন থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত ৭ মাসে ১৪৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে মাত্র ১১৭ কোটি ৬১ লাখ টাকা। ২৮ কোটি ২ লাখ টাকা রাজস্ব কম আয় করেছে হিলি কাস্টমস কতৃপক্ষ। ভারতের ফারাক্কা ব্রিজের সংস্কার কাজ করায় পন্যের আমদানি কমেছে, ফলে রাজস্ব আদায় কমেছে বলছেন স্থানীয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, ভারত সরকার এ পথে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এতে আমদানি-রফতানি কমে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবসায়ীরা। কমে গেছে বন্দরের রাজস্ব আদায়। এক মাসে এই বন্দরে ভারত থেকে প্রতিদিন গড়ে দুই শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করলেও তা বর্তমানে নেমে এসেছে ৬৫/৭০টিতে।
হিলির পাথর আমদানিকারক মিঠু ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ১০ থেকে ১৪ চাকার পণ্যবাহী গাড়ি আসতে পারছে না। এজন্য ছোট ছয় চাকার গাড়িতে আনতে হচ্ছে। আগে এক গাড়ির পণ্য এখন তিন গাড়িতে করে আনতে হচ্ছে। এতে বেড়েছে বৃদ্ধি পেয়েছে খরচ। যে কারণে ব্যবসায়ীদের পড়তে হচ্ছে লোকসানের মুখে।
এদিকে আমদানি-রফতানি কমে যাওয়ায় হিলি স্থলবন্দরে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক ও সিঅ্যান্ডএফ কর্মীরা প্রায় বেকার হয়ে পড়েছেন। শ্রমিকরা জানান, হিলি পোর্ট দিয়ে আগে পণ্যবাহী অনেক গাড়ি আসলেও এখন অনেক কমে গেছে। এতে করে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
হিলি কাস্টমস রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মুজিবুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, ভারতের ফারাক্কা ব্রিজের সংস্কার কাজ শুরু হওয়ায় ব্রিজের ওপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে হিলি দিয়ে আমদানি করা ট্রাকের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। গাড়ি কম আসায় সরকার যেমন রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে তেমনি আমদানি-রফতানির কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরাও অবসর সময় কাটাচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১৯
এসআরএস