তারা বলেছেন, শিল্প মন্ত্রণালয় ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশের পতাকাবাহী সমুদ্রগামী জাহাজ ব্যবসাকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা দিলেও আজ পর্যন্ত এ খাত আর্থিক সুবিধা ও প্রণোদনা পায়নি। তারা তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইল শিল্পের মতো উৎসে কর, ডিউটি ড্র-ব্যাক, ইউডিএফ লোন, প্যাকিং লোন সুবিধাসহ নগদ প্রণোদনার জন্য শিল্পমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
রোববার (০৭ এপ্রিল) শিল্প মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশ ওশানগোয়িং শিপওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক প্রতিনিধি দল শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের সঙ্গে বৈঠকে এ দাবি জানান। এসময় শিল্প সচিব মো. আবদুল হালিম, বিওজিএসওএ’র সভাপতি আজম জে চৌধুরী, সহ-সভাপতি মোস্তফা কামাল ও শেখ বশির উদ্দিন, সেক্রেটারি জেনারেল রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) এ এস এম আব্দুল বাতেন, সদস্য মো. শাহজাহান উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ শিল্পের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ সময় সমুদ্রকেন্দ্রিক অর্থনীতি বা ‘ব্লু ইকোনোমি’র প্রসার, সমুদ্র পথে পণ্য আমদানি রপ্তানিতে ফ্রেইট চার্জ খাতে দেশীয় জাহাজের হিস্যা বৃদ্ধিসহ অন্যান্য বিষয় আলোচনায় স্থান পায়।
বৈঠকে বিওজিএসওএ’র নেতারা বলেন, সরকারের নীতি সহায়তা ও প্রণোদনা পেলে দেশীয় পতাকাবাহী সমুদ্রগামী জাহাজ শিল্পখাত দ্রুত বিকশিত হবে। বর্তমানে সমুদ্র পথে পণ্য আমদানি রপ্তানির ক্ষেত্রে ফ্রেইট চার্জ বাবদ খরচের ৯০ শতাংশেরও বেশি বিদেশি জাহাজ মালিকরা নিয়ে যাচ্ছে। দেশীয় সমুদ্রগামী জাহাজ মালিকদের আয়করসহ অন্যান্য সুবিধা দিয়ে বছরে ফ্রেইট চার্জ বাবদ কমপক্ষে আড়াই বিলিয়ন মার্কিন ডলার সাশ্রয় সম্ভব। তারা এ শিল্পের বিকাশে সরকারের নীতি সহায়তা চান।
প্রতিনিধিদলের সদস্যরা আরও বলেন, মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির ক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কোনো ট্যাক্স আরোপ না করলেও জাহাজ আমদানির ক্ষেত্রে শতকরা ৫ ভাগ অগ্রিম আয়কর (এআইটি) আরোপ করেছে। ফলে এ শিল্পের উদ্যোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়া টেক্সটাইলসহ অন্যান্য খাতে কর্পোরেট ট্যাক্স ১৫ শতাংশ নির্ধারিত থাকলেও শিল্পখাতে তা ৩৫ শতাংশ ধার্য করা হয়েছে। তারা সমুদ্রগামী জাহাজ শিল্পের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ট্যাক্সসহ অন্যান্য বৈষম্য দূর করতে আসন্ন বাজেটে কার্যকর প্রস্তাব পাঠানোর জন্য শিল্পমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
দেশের আমদানি রপ্তানিতে সমুদ্রগামী জাহাজ শিল্পের অবদানের কথা উল্লেখ করে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, এ শিল্পে করসহ অন্যান্য অসঙ্গতি পরীক্ষা করে তা যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বরাবর সুপারিশ করা হবে। একই সঙ্গে দেশীয় এ শিল্পের প্রসারে সরকারের নীতি সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে প্রতিনিধি দলকে আশ্বস্ত করেন তিনি।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, সমুদ্রকেন্দ্রিক অর্থনীতির সুবিধা কাজে লাগাতে শিল্প মন্ত্রণালয় পরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণ করছে। জাহাজ নির্মাণ, জাহাজ ভাঙ্গা ও শিপ রিসাইক্লিং কার্যক্রমকে সরকার নীতি সহায়তা দিচ্ছে। নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য সমুদ্রগামী জাহাজ শিল্পের প্রসারেও প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে নতুন শিল্পনীতিতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা থাকবে বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০১৯
জিসিজি/জেডএস