ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

রান্নায় কমেছে পেঁয়াজের ব্যবহার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৯
রান্নায় কমেছে পেঁয়াজের ব্যবহার পেঁয়াজ ছাড়াই রান্না। ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: বাঙালিরা ভোজনবিলাসী বহুআগে থেকেই। তারা রান্নায় যোগ করেন হরেক পদের মসলা। রান্নায় স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় করতে পেঁয়াজের জুড়ি নেই। তবে, সম্প্রতি পেঁয়াজের দর-দাম বাঁধ সাধে রান্নায়। রান্নায় অতি প্রয়োজনীয় মসলাজাতীয় এ পণ্যটির দাম হু-হু করে বেড়ে সর্বোচ্চ ২৫০ টাকায় এসে পৌঁছেছে।

পেঁয়াজের দাম বাড়ায় সব শ্রেণীর ক্রেতারাই এখন হিসেব করেই পেঁয়াজ দিয়ে তরকারি রান্না করছেন। গৃহিণীরা রান্নায় পেঁয়াজের ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছেন অনেকাংশে।

কোনো কোনো পরিবার এখন অর্ধেকের কম রান্নায় ব্যবহার করছেন পেঁয়াজ।

অন্যদিকে হোটেলে বা বাসায় খাবারের সঙ্গে সালাদ তৈরি অন্যতম উপাদান পেঁয়াজ হলেও সেখানেও নেই মসলাজাতীয় এ পণ্যটির ব্যবহার। সালাদের উপাদানে পেঁয়াজের বদলে যোগ হয়েছে পেঁপে আর গাজর।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

পেঁয়াজ নিয়ে কথা হয় গৃহিণী আনোয়ারার সঙ্গে। পাঁচ সদস্যের পরিবার নিয়ে রাজধানীর চামেলীবাগের তার বসবাস।

তিনি বাংলানিউজকে জানান, প্রতিমাসেই তার বাসায় মেহমান আসে, সপ্তাহের দু’দিন ভালো খাবার পরিবেশন করতে হয় পরিবারের জন্য। সেই হিসেবে তার মাসে ১০ কেজি পেঁয়াজের প্রয়োজন পড়ে। তবে, সম্প্রতি পেঁয়াজের দাম ৭/৮ গুণ বেড়ে যাওয়ায় তিনি পেঁয়াজ খান এখন হিসেব করে।

তিনি আরও জানান,  তিনি গত দুই/তিন মাসে প্রায় পাঁচ কেজি পেঁয়াজ কিনেছেন। সালাদ তৈরিতে তিনি এখন আর পেঁয়াজ ব্যবহার করেন না। রান্নায়ও হিসেব করেই তিনি পেঁয়াজ ব্যবহার করেন।  

একই কথা জানালেন খিলগাঁও এলাকার রিকশাচালক বিপুল। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এক সময় আমার বাড়িতে রান্নায় পেঁয়াজের ব্যবহার ছিল অনেক বেশি। এখন দাম বাড়ায় তা কমেছে।  

বিপুলের মতে, এর আগে বাজার থেকে তিনি এককেজি পেঁয়াজ কিনলেও এখন তিনি এক পোয়া পেঁয়াজ কেনেন। দাম ও নিজস্ব আয়ের বিবেচনায় এই পেঁয়াজ কিনতে হয়। তার মতন অনেকেই জানালেন পেঁয়াজ কম খাওয়ার কথা।

দেশে বর্তমানে পেঁয়াজ সংকট চলছে। অবস্থা বেগতিক দেখে সরকার কয়েকটি দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেছে ইতোমধ্যে। এখন আরও আমদানি পেঁয়াজ দেশে আসার অপেক্ষায় রয়েছে, যা আশার খবর ক্রেতাদের কাছে। তবে, হতাশার কথাও রয়েছে তাদের কাছে। বর্তমানে দামি এবং অতি প্রয়োজনীয় এ পণ্যটি থেকে অসাধু ব্যবসায়ীদের মর্জি মতোই দাম রাখা হচ্ছে ক্রেতার কাছ থেকে। ইচ্ছেমতো দর-দাম ঠিক করছেন নিজেরাই।

বর্তমানে খুচরা ও পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ বিক্রির ব্যবধান ৭০ থেকে ৮০ টাকা। বিশাল পার্থক্য নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। অন্যদিকে খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পেঁয়াজের পাইকারি বাজার এখনও চড়া রয়েছে। সেখানে দাম কমলে আমাদের এখানেও দাম কমবে।

রাজধানীর পাইকারি বাজার শ্যামবাজারে প্রতিকেজি পাইকারি দেশী পেঁয়াজ বর্তমানে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি চলছে। বার্মার পেঁয়াজ ৮০ থেকে ১৩০ টাকা, মিশরের পেঁয়াজ বিক্রি চলছে ১৩০ টাকা কেজি দরে।

অন্যদিকে রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতিকেজি দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে। বার্মার পেঁয়াজ ২০০ থেকে ২১০ টাকা কেজি, মিশরের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা কেজিদরে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৯
ইএআর/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।