ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণে অকার্যকর বাংলাদেশ ব্যাংক: টিআইবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২০
খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণে অকার্যকর বাংলাদেশ ব্যাংক: টিআইবি ...

ঢাকা: গত ১০ বছরে ব্যাংকিং খাতের ঋণ বেড়েছে ৩১২ শতাংশ, অথচ খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৪১৭ শতাংশ। গড়ে প্রতি বছর প্রায় ৯ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা করে খেলাপি ঋণ বেড়েছে।

খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণসহ সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ ব্যাংক অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে বলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণায় তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

গেল এক দশকে দেশ অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হলেও দুর্বল হচ্ছে ব্যাংকিং খাত। দুর্বলতার সবচেয়ে বড় সূচক খেলাপি ঋণ। টিআইবির গবেষণা বলছে, ২০০৯ সালে খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে তা বেড়ে হয় এক লাখ ১৬ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা।

ঋণ প্রবৃদ্ধির চেয়ে খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় খাদের কিনারায় পৌঁছেছে ব্যাংকিং খাত। খেলাপি ঋণের অর্ধেকই সরকারি মালিকানাধীন ৬ বাণিজ্যিক ব্যাংকে।

গবেষণা প্রতিবেদনে টিআইবির পরিচালক-গবেষণা ও পলিসি, মোহাম্মদ রফিকুল হাসান বলেন, রাজনৈতিক প্ররোচনা এবং ব্যবসায়ীদের প্ররোচনা হচ্ছে সবচেয়ে বড়। আইনগুলোকে পরির্বতন করে ফেলা হচ্ছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আপনারা দেখছেন দুই ঘণ্টার মধ্যে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। ফলে দেশ খেলাপি ঋণের প্রবৃদ্ধির হার ৪১৭ শতাংশ। যদিও একই সময়ে ঋণ প্রবৃদ্ধির হার ৩১২ শতাংশ। প্রতি বছর আমরা ৯ হাজার ৩৮০ কোটি হারে খেলাপি ঋণ দেখতে পাই।

তিনি আরও বলেন, বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ ছিল না। মূলত বেসরকারি ব্যাংকগুলোও খেলাপি ঋণের মধ্যে চলে এসেছে। এখন খেলাপি ঋণে বেসরকারি ব্যাংকের অবদানও অনেক বেশি।

গবেষণায় বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ভেতর ও বাইরে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তথাকথিত ব্যাংক মালিকদের সঙ্গে ক্ষমতাসীনদের চাপে ঋণ নিয়ে বিদেশে পাচার বন্ধে তথাকথিত ব্যাংক মালিকদের সাথে ক্ষমতাসীনদের চাপে দায়িত্ব পালন করতে পারছে না নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জনগণের আমানত দেখভাল করার দায়িত্ব সরকারের সার্বিকভাবে হলেও তার পরিবর্তে ঋণ খেলাপি অর্থ আত্মসাৎকারী জালিয়াতিকারী, অর্থ পাচারকারীদের সহায়ক শক্তি হিসেবে সরকার ভূমিকা পালন করছে। শুধু তাই নয়, সেই পর্যায় থেকে এখন অনেক সময় তাদের হাতে জিম্মি অবস্থায় সরকারকে দেখা যায়। বাংলাদেশ ব্যাংক দুই শক্তির চাপের ফলে একটি প্রায় অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হয়েছে। বিশেষ করে ঋণ খেলাপি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে।

খেলাপি ঋণসহ ব্যাংকিং খাতে জালিয়াতি বাড়লেও রহস্যজনকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংক দেশে কার্যরত ব্যাংকগুলোতে পরিদর্শনের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে বলেও অনুষ্ঠানে জানিয়েছে ট্রান্সপ্যারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

বাংলাদেশ সময়: ২২০৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২০
এসই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।