ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

দিনে কোটি টাকার মাছ বেচাকেনা হয় বালিখলায় (ভিডিও)

নজরুল ইসলাম খায়রুল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০২০
দিনে কোটি টাকার মাছ বেচাকেনা হয় বালিখলায় (ভিডিও) কোটি টাকার মাছ বেচাকেনা হয় বালিখলায়

কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার বালিখলা মাছ বাজারটি ধনু নদীর তীরঘেঁষা। প্রায় দুইশ’ বছরের সুখ্যাতি রয়েছে এ মাছ বাজারের।

পুরানো এ বাজারে আগে বছরে ছয় মাস বেচাকেনা হলেও এখন সারা বছর মাছ বেচাকেনা হয়।

বালিখলা মাছ বাজারে গিয়ে দেখা যায়, জেলেরা নৌকা ভরে দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছ বাজারে নিয়ে এসেছেন। মাছের বাজারের আড়তে তখন মাছের দাম হাঁকিয়ে বেচাকেনা চলছে। এখানে কেজি দরে মাছ বিক্রি হয়। হাওরের বড় চিংড়ি আর গুলশা ট্যাংরা বিক্রি হয় দেদারছে। পাশাপাশি বোয়াল ও আইড় মাছও বিক্রি হয় ভালো। সব মিলিয়ে এ বাজারটিকে দেশি নানা জাতের মাছের ভাণ্ডার বলা যায়।

এখানে নানা জাতের মাছ দেখতে পাওয়া যায়। এর মধ্যে রয়েছে বোয়াল, আইড়, চিতল, রুই, কাতলা, মৃগেল, বাইন, কার্প, কালিবাউশ, পাবদা, মেনি (রয়না), পুঁটি, কই, মাগুর, শিং, চিংড়ি, গুলশা, শৌল, কাঁচকি, টাকি, কাইক্কা, চাপিলা, চান্দাসহ প্রায় ৫০ জাতের ছোট বড় দেশি মাছ।

কিশোরগঞ্জের ইটনা, মিঠামইন ও অষ্ট্গ্রাম উপজেলা এবং সুনামগঞ্জের দিরাই ও নেত্রকোনার খালিয়াজুড়ি উপজেলার বিভিন্ন হাওর থেকে আসে এসব মাছ।

প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে ১০টা পর্যন্ত চলে মাছের কেনাবেচা। জেলার স্থানীয় বাজারে যায় এ মাছ। এছাড়া আড়তদারদের হাত হয়ে এ মাছ ট্রাকে করে চলে যায় ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায়।

বাজারের মাছের আড়তদাররা জানান, এখন মাছের সরবরাহ কমে গেছে। আর তাই মাছের দামও কিছুটা বেড়েছে। আগের চেয়ে কেজি দরে মাছ ক্ষেত্রভেদে ৫০ টাকা থেকে ১০০ টাকা দাম বেড়েছে। তবে এরপরও মাছের বাজার ভালোই চলছে।

মাছ বাজারের মেসার্স ভাণ্ডারি মৎস্য আড়তের জামাল উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, বাজারে মাছ কম আসছে। এতে করে মাছের দাম কিছুটা বাড়তি। বিশেষ করে বোয়াল মাছের দাম বেড়েছে।

মাছের বেচাকেনা মোটামুটি থাকলেও দাম নিয়ে সন্তুষ্ট বলেও জানান তিনি।

এ মাছ বাজার থেকে মাছ কিনে বাড়ি যাচ্ছেন চামড়া বন্দর এলাকার গেন্দু মেম্বার। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, নিয়মিত এ বাজার থেকে মাছ কেনা হয়। ১০০ টাকা কেজি দরে বড় সাইজের তিনটি গ্রাসকার্প মাছ কিনেছেন। মাছের দাম আগের চেয়ে কিছুটা বেশি রেখেছে।

ছোট বাঁশের খাঁচায় করে দেশি আইড়, রুইসহ নানা জাতের মাছ নিয়ে বাজারে বিক্রি করতে এসেছেন বাজারের পাশের রৌহা গ্রামের রিমেল মিয়া। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমার মাছ কেজি দরে সাড়ে চারশ’ টাকা চেয়েছি। কিন্তু সাড়ে তিনশ’ টাকা কেজি দরে দাম করেছেন এক ক্রেতা। আর কিছুটা দাম বাড়ালে মাছ বিক্রি করে চলে যাবো।

হাওরের মিঠাপানির মাছের কারণে এ বাজারে প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকার মাছ বেচাকেনা হয়, এ দাবি করেন মাছ ব্যবসায়ীরা।

এ বাজারে আইড় ৫০০ টাকা, বোয়াল ৪০০ টাকা, গুলশা ৩৫০ টাকা, ট্যাংরা ৩৫০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ টাকা, চিতল মাছ ৫৫০ টাকা, রুই ৩৫০ টাকা, কাতলা ৫০০ টাকা, বাইন ৫০০ টাকা, পাবদা ৬৫০ টাকা, কই ৩৫০ টাকা, মাগুর ৪৫০ টাকা, শিং ৫০০ টাকা, শৌল ৪৫০ টাকা, পোডা ৬০ কেজি, চাপিলা ২০০ টাকা, চান্দা ১০০ টাকা, টাকি ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার বালিখলা এলাকায় অর্থাৎ হাওরের প্রবেশদ্বারে অবস্থিত বালিখলা মাছ বাজারটিতে টিনের ঘর ছাড়া উন্নত কোনো অবকাঠামো গড়ে ওঠেনি। তারপরও হাওরের মিঠাপানির দেশি নানা জাতের মাছের কারণেই বাজারের সুনাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। কিশোরগঞ্জ শহর থেকে মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল বা সিএনজি ও ব্যাটারি চালিত আটোরিকশায় করে বালিখলা মাছ বাজারে যাওয়া যায়।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০২০
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।