ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেনি ৭৮.৫ শতাংশ পরিবার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০২১
করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেনি ৭৮.৫ শতাংশ পরিবার সংগৃহীত ছবি

ঢাকা: গত বছরের মার্চে বাংলাদেশে করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাব শুরুর পর অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়েছিল ৭৮ দশমিক ৮ শতাংশ পরিবার। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে এসেও সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেনি দেশের ৭৮ দশমিক ৫ শতাংশ পরিবার।

বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ প্রকাশিত একটি খানা জরিপের ফলাফলে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশজুড়ে প্রায় ১ হাজার ৬০০টি খানার উপর সমীক্ষা চালানো হয়েছে। যেখানে দশটি প্রান্তিক গোষ্ঠীর মুখোমুখি সাক্ষাত্কারের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২০ সালের মার্চের তুলনায় ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রান্তিক গোষ্ঠীর আয় ১৫.৮ শতাংশ ও ব্যয় ৮.১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এই পরিবারগুলোর প্রায় ৭৮.৮ শতাংশ অতিমারির ফলে আর্থিক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিল, যার ৭৮.৫ শতাংশই পুনরুদ্ধার হয়নি। সমীক্ষা করা পরিবারের প্রায় ৬০.৮ শতাংশ পরিবারকে বিকল্প পন্থা হিসেবে ঋণ নিতে হয়েছিল এবং সেটি পরিশোধ করতে তাদের গড়পড়তা প্রায় দুই বছর সময় লাগতে পারে।

অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানটির জ্যৈষ্ঠ গবেষক ইশতিয়াক বারি। তিনি বলেন, জরিপের জন্য অন্তর্ভুক্ত দশটি প্রান্তিক গ্রুপের মধ্যে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ী, প্রতিবন্ধী, বস্তিবাসী ও চরের মানুষ অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের বাড়তি ব্যয় ও ঋণ পরিশোধে সহায়তা দরকার। সরকারিভাবে নগদ আর্থিক সহয়তা দিয়ে এই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বর্তমান কোভিড-১৯-এর দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা করতে সাহায্য করা উচিত।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ এর অর্থনৈতিক প্রভাব স্বাস্থ্য এবং সামাজিক সম্পর্কিত প্রভাবগুলোর তুলনায় অনেক গভীরভাবে পড়েছে। আয়ের হ্রাস এবং ব্যয়ের থেকে সমাজে সবচেয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষগুলো পুরোপুরি সেরে উঠতে পারেনি। বিপুলসংখ্যক পরিবার ঋণের জালে পড়েছে এবং তাদের সঞ্চয় হারাচ্ছে।
 
নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, প্রান্তিক মানুষের ওপর অতিমারির ফলে যে প্রভাব পগেছে তা সংঘঠিত জাতীয় প্রভাবের চেয়ে বেশি। প্রথাগতভাবে যারা আগে বিপন্ন ছিলেন না তারাও এখন যুক্ত হয়েছেন। কোভিড-১৯-এর অভিঘাত বহুমাত্রিকভাবে এসেছে, যার প্রভাব কর্মসংস্থান, আয়, সঞ্চয় ছাড়াও পুষ্টিহীনতা, সহিংসতা এবং শিক্ষাখাতে ঝরে পরার ক্ষেত্রে লক্ষণীয়। স্থানীয় সরকার, জনপ্রতিনিধি ও উন্নয়ন সংস্থাদের একত্রিত করে একটি মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া দরকার।

আরও বক্তব্য দেন, সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের কোর গ্রুপ সদস্য অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান এবং সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০২১
এসই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।