ঢাকা: নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহারের ফলে সরকারি অর্থ ও যানবাহন মালিকদের প্রচুর বিনিয়োগ নষ্ট হয়। গণপরিবহনের যাত্রীদের ভোগান্তিসহ রাষ্ট্রীয় ব্যয়ের ভার নিতে হয় দেশের সাধারণ জনগণকে।
সরকারি অর্থের অপব্যয়
দেশে প্রতিবছর নতুন সড়ক নির্মাণ ও পুরনো সড়ক সংস্কারে সরকারকে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করতে হয়। এছাড়া এশিয়ার দেশগুলোতে বাংলাদেশেই সড়ক নির্মাণের ব্যয় অনেক বেশি। এক কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে ১৭০ ড্রাম বিটুমিন ব্যবহার করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশে সড়ক ও মহাসড়ক নির্মাণের সময় সর্বোচ্চ ১১০ ড্রাম বিটুমিন ব্যবহার করা হয়। সেটাও আবার খুবই নিম্নমানের। বিটুমিন কয়েক প্রকারের আছে। আর এটা আমাদের দেশে এখনো আমদানিনির্ভর। যারা আমদানি করে তারা নিম্নমানের বিটুমিন দেশে আনে। আবার যারা সড়কের কাজ পায় তারাও ভালো মানের বিটুমিন ব্যবহার করে না। সহজ কথা হলো, যেটার দাম কম সেই বিটুমিন তারা ব্যবহার করে। আমাদের দেশে সড়ক নির্মাণে ৬০ থেকে ৭০ গ্রেডের বিটুমিন ব্যবহার করার কথা থাকলেও তারা আমদানি করে মাঝারি ও নিম্নমানের বিটুমিন। এ বিটুমিনের মান হলো ৮০ থেকে ১০০ গ্রেড।
যানবাহনের ক্ষতি
নষ্ট সড়কের কারণে যানবাহন খুবই অল্প সময়ের মধ্যে নষ্ট হয়ে যায়। গাড়ির যন্ত্রাংশ বিকল হয়, ফিটনেস নষ্ট হয়। শুধু গণপরিবহন যেগুলো আছে সেগুলোই মেরামত করতে বছরে প্রায় এক হাজার কোটি টাকার গচ্চা হয় পরিবহন ব্যবসায়ীদের। যারা ব্যক্তিগত গাড়ি চালান তাদের ক্ষতি হিসাব করলে এ অঙ্ক আরও বড় হবে।
জনগণের ভোগান্তি
সাধারণ যাত্রীরা খানাখন্দে ভরা সড়ক দিয়ে চলতে গিয়ে নানাবিধ বিরূপ পরিস্থিতির শিকার হয়। কারণ গন্তব্যে একদিকে তারা নির্ধারিত সময়ে যেতে পারে না, অন্যদিকে গাড়ির অতিরিক্ত ঝাঁকির কারণে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। দেশে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ সড়ক ঝুঁকিপূর্ণ। যদিও মানসম্মত সড়ক পাওয়া সবার অধিকার। আবার এসব সড়ক নির্মাণ ও সংস্কারে যে সরকারি অর্থ ব্যয় হয় সেটা তো জনগণের টাকাই। অর্থাৎ জনগণ সবদিক থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারা ভ্যাট-ট্যাক্স দেয়, কিন্তু তারা তাদের কাঙ্ক্ষিত মানের সড়ক পায় না। আবার তাদের দেওয়া টাকাই অপচয় হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১১০২ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০২১
এসএইচএস/আরবি