ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

সৈয়দপুরে শুঁটকি আড়তে বেচাকেনায় মন্দাভাব

মো. আমিরুজ্জামান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৫ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২১
সৈয়দপুরে শুঁটকি আড়তে বেচাকেনায় মন্দাভাব শুঁটকি আড়ত। ছবি: বাংলানিউজ

নীলফামারী: উত্তরের সবচেয়ে বড় শুঁটকি আড়ত নীলফামারীর সৈয়দপুরে বেচাকেনায় মন্দাভাব বিরাজ করছে। ফলে লোকসানে পড়েছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা।

অনেকে পুঁজি হারিয়ে এবং ব্যাংক ঋণ পরিশোধ না করতে পেরে নিঃস্ব হয়ে গেছেন। করোনাকালে ক্রেতারা সেভাবে আড়তে না আসায় ব্যবসায়ীদের লোকসানের বোঝা বাড়ছে।  

জানা যায়, ১৯৮৩ সালে সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নিয়ামতপুর এলাকায় গড়ে উঠে এ শুঁটকি মাছের আড়ত। প্রথমে কয়েকজন আড়তদার এই ব্যবসা শুরু করলেও বর্তমানে আড়তদার রয়েছে ১৭ জন। এর মধ্যে চারজন আড়তদারের ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে পুঁজির অভাবে।  

স্বাভাবিক সময়ে ব্যবসায়ী ও খুচরা ক্রেতা মিলে প্রতিদিন ১৫-১৬ হাজার লোকের আগমন ঘটতো। এ সময় প্রতিদিন ৮০ লাখ থেকে কোটি টাকার শুঁটকি মাছ বেচাকেনা হতো। বর্তমানে করোনাকালে ক্রেতাদের ভিড় কমেছে। ফলে প্রতিদিন গড়ে ১০-১৫ লাখ টাকার বেচাকেনা হচ্ছে।

শুঁটকি আড়ত।  ছবি: বাংলানিউজ
এসব শুঁটকি আসে চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী এবং পাবনা থেকে। এর পাশাপাশি ভারতীয় শুঁটকি মাছ আসে বৈধভাবে হিলি ও আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে। সামুদ্রিক ও মিঠা পানির বিভিন্ন প্রজাতির শুঁটকি মাছও বিক্রি হয়ে থাকে আড়তে। এখানকার বেশিরভাগ আড়তদার রয়েছেন পাবনা, সিলেট, নোয়াখালী, কুমিল্লা এবং ফরিদপুর জেলার। স্থানীয় ব্যবসায়ী তেমন একটা নেই বললেই চলে। এসব শুঁটকি দীর্ঘদিন সংরক্ষণের জন্য ডিডিটি পাউডারসহ রাসায়নিক দ্রব্য মেশানোর অভিযোগ রয়েছে। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বেশকিছু শুঁটকি আড়তে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হয় ও কয়েকটি আড়ত সিলগালা করে দেওয়া হয়েছিল।  

মেসার্স বাহাউদ্দিন বাবলু আড়তের মালিক বাহাউদ্দিন বাবলু বাংলানিউজকে বলেন, গত বছর দীর্ঘ বন্যা ও আবহাওয়ার কারণে শুঁটকি মাছ নষ্ট হয়ে যায়। ফলে ২৬ লাখ টাকার মতো লোকসান হয়েছে। এবছর এই লোকসান আরও বাড়বে বলে মনে করছেন। করোনাকালে ব্যবসায়ী ও খুচরা দোকানিরা খুব একটা না আসায় বেচাকেনা কমে গেছে।

করোনাকালে কঠোর নির্দেশনা ও গণপরিবহন চলাচল কম থাকায় ব্যবসা চরম মন্দাভাব চলছে।  

মেসার্স লাকি ট্রেডার্স আড়তের মালিক রবিউল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, প্রতি বছর শুঁটকি ব্যবসায় লোকসান গুণতে হচ্ছে। কারণ এই ব্যবসা আর আগের মতো চলছে না।  

আড়তে আসা খুচরা দোকানি আব্দুর রহমান জানান, এখানে পাইকারি দরে শুঁটকি কিনে গ্রামে গ্রামে খুচরা বিক্রি করেন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, বিভিন্ন এনজিও কিস্তি আদায় করছেন। কিন্ত নতুন করে ঋণ দিচ্ছে না। ফলে আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা চরম বেকায়দায় পড়ে মালামাল কিনতে পারছি না।  

সৈয়দপুর শুঁটকি মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বাকার চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক দেলওয়ার হোসেন বেলো বাংলানিউজকে জানান, এখানকার সব আড়তদারই ঋণ খেলাপি হয়ে পড়েছেন। লোকজনের আনাগোনা কমে যাওয়ায় শুঁটকি ব্যবসা আগের মতো চলছে না।  

এ সময় শুঁটকিতে ডিডিটি পাউডারসহ রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রনের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তারা।  

সৈয়দপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রমিজ আলম বাংলানিউজকে বলেন, অভিযোগ পেলে শুঁটকি আড়তে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১১১৫ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২১
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।