ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

১৭ লাখ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট প্রস্তাব অর্থনীতি সমিতির

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৫ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২১
১৭ লাখ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট প্রস্তাব অর্থনীতি সমিতির

ঢাকা: ২০২১-২২ সালের জন্য উন্নয়ন ও পরিচালন মিলিয়ে ১৭ লাখ ৩৮ হাজার ৭১৬ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি, যা সরকারের বিদায়ী অর্থবছরের বাজেটের ৩ দশমিক ০৩ গুণ বেশি। সরকারের উন্নয়ন ও পরিচালন ব্যয় বাজেটের বর্তমান অনুপাত যেখানে ৩৮:৬২, সেখানে সমিতির এবারের বিকল্প বাজেটে তা ৬৯:৩১।

রাজস্ব বাড়ানোর নতুন ২৮টি উপায় দেখিয়ে কোভিড-১৯ মহামারির বিপর্যস্ত অবস্থার মধ্যে মঙ্গলবার (১ জুন) এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিকল্প বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরেন সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত।

বৃহস্পতিবার (৩ জুন) বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের খসড়া বাজেট প্রস্তাব করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

অর্থনীতি সমিতির প্রস্তাবে আয়
কোভিড-১৯ ও আর্থ-সামাজিক মন্দা থেকে উত্তরণে সমিতির এবারের সামাজিক মন্দা থেকে করোনা ভাইরাসের অভিঘাত মোকাবিলা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে সরকারের আয় বাড়াতে হবে এবং সম্ভাব্য কীভাবে তা বাড়তে পারে, তা নিয়ে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি ২৮টি নতুন উৎসের কথা বলেছে। অর্থমন্ত্রী কর্তৃক পেশকৃত চলমান ২০২০-২১ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে মোট রাজস্ব ধরা হয়েছিল ৩ লাখ ৮২ হাজার ১৩ কোটি টাকা। আর বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি থেকে আসন্ন ২০২১-২২ অর্থবছরে এই আয় ৩ দশমিক ৩ গুণ বেশি বৃদ্ধি করে ১৭ লাখ ৩৮ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা প্রস্তাব করেছে। সুযোগ থাকার পরও সরকার নজর না দেওয়া তিনটি খাত— অতিরিক্ত মুনাফা, কালো টাকা ও অর্থ পাচার থেকে সমিতি সবচেয়ে বেশি আয় (৪ লক্ষ ৪৩ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা) দেখিয়েছে।

অর্থনীতি সমিতির প্রস্তাবে ব্যয়
সমাজ ও অর্থনীতির কোন কোন খাত ও ক্ষেত্রে জোর দিতে হবে এবং পেছনের যুক্তি কী তা তুলে ধরে সমিতির বিস্তারিত ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে বলেছে, শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে ২ লাখ ২ হাজার ১২৪ কোটি টাকা, স্বাস্থ্য খাতে ১ লাখ ৩৭ হাজার ১২৪ কোটি টাকা, সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণ খাতে ৩ লাখ ৩০ হাজার ৯০০ কোটি টাকা, ৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা পরিচালন বরাদ্দ দিয়ে ‘গণপরিবহন ও গবেষণা ও বিচ্ছুরণ’ নামে দুটি মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিয়েছে। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ২ লাখ ২৬ হাজার ১১৪ কোটি টাকা, পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে ১ লাখ ৫০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।

অধ্যাপক বারকাত বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাবনায় বাজেটের ব্যয় বরাদ্দ কাঠামোতে গুণগত রূপান্তর ঘটবে। উন্নয়ন বাজেট হবে পরিচালন বাজেটের চেয়ে অনেক বেশি, যা এখন ঠিক উল্টো। এখন উন্নয়ন-পরিচালন বাজেট বরাদ্দের অনুপাত ৩৮:৬২, যা আমাদের প্রস্তাবিত বাজেটে হবে ৬৯:৩১। চলতি অর্থবছওে সরকারের মোট আয় (প্রাপ্তি) ছিল ৩ লাখ ৮২ হাজার ১৩ কোটি টাকা। পক্ষান্তরে বিকল্প বাজেটে এই প্রাপ্তি প্রস্তাব করা হয়েছে ১৬ লাখ ৩ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা। রাজস্ব আয়ে প্রত্যক্ষ কর অনুপাত ৪৮: ৫২ শতাংশের বিপরীতে সমিতির বাজেটে তা ৮৪: ১৬ শতাংশ। ’

সমিতির বাজেটে নতুন খাত/ উপখাত সংযোজন করা হয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো— দুটি মন্ত্রণালয় গণপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং গবেষণা ও বিচ্ছুরণ মন্ত্রণালয়। ১০টি নতুন বিভাগের অন্যতম হলো স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা বিভাগ, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রবীণ হিতৈষী বিভাগ, দরিদ্র-বিত্তহীন-নিম্নবিত্ত-নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের জীবন কুশলতা উন্নয়ন বিভাগ, গ্রামীণ নারী-দরিদ্র- বিত্তহীন-নিম্নবিত্ত-নিম্নমধ্যবিত্ত নারীপ্রধান খানার জীবন কুশলতা উন্নয়ন বিভাগ।

অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জামালউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা ২০১৫ সাল থেকে এই বিকল্প বাজেট দিয়ে আসছি, এটা আমাদের সপ্তম বাজেট। আশা করি সরকার আমাদের এই বাজেট প্রস্তাব বিবেচনা করে দেখবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২১
এসই/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।