ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিনোদন পার্ক খোলার দাবি

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫০ ঘণ্টা, জুন ২, ২০২১
স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিনোদন পার্ক খোলার দাবি স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিনোদন পার্ক খোলার দাবি

ঢাকা: স্বাস্থ্যবিধি মেনে বেসরকারিভাবে পরিচালিত বিনোদন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিনোদন পার্কগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যামিউজম্যান্ট পার্কস অ্যান্ড অ্যাট্রাকশনস (বাপা)।

বুধবার (২ জুন) রাজধানীর এক হোটেলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যামিউজম্যান্ট পার্কস অ্যান্ড অ্যাট্রাকশনসের সভাপতি শাহরিয়ার কামাল বলেন, করোনা সংক্রমণের প্রথম পর্যায়ে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা বিনোদন পার্কগুলো বন্ধ রেখেছিলাম। যদিও এতে বিনোদন কেন্দ্রগুলো আর্থিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মানবিকতার দিকটি বিবেচনায় রেখে কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সময় মতো পরিশোধ করাও হয়েছিল। সে সময় সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবসায়িক মৌসুম ঈদের পূর্বে পার্কগুলো খোলার অনুমতি না দেওয়ায় প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আমাদের আশা ছিল ভবিষ্যতে আমরা তা কাটিয়ে উঠতে পারবো। কিন্তু পুনরায় দ্বিতীয় পর্যায়ে আবারও করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার ফলে বিনোদন পার্ক ও পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে এই শিল্পটি ব্যবসায়িক ও আর্থিক দিক থেকে পুনরায় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ন্যায় এখন যদি এই বিনোদন পার্কগুলো খুলে না দেওয়া হয় তাহলে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর টিকে থাকা বা ঘুরে দাঁড়ানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।


তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জীবন ও জীবিকা একসঙ্গে চালাতে হবে। সেজন্য আমরা বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পার্কের ধারণ ক্ষমতার ৫০ শতাংশের কম দর্শনার্থী প্রবেশ ও তাদের সামাজিক দূরত্ব বজায় নিশ্চিত রেখে কার্যক্রম পরিচালনা সহ পার্কের মূল প্রবেশদ্বারের বাইরে থার্মাল স্ক্যানার বসানো, দর্শনার্থী পরীক্ষাপূর্বক টিকেট সংগ্রহ, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার, পর্যাপ্ত হাত ধোয়ার ব্যবস্থা, নিয়মিত ফুড কোর্ট আর রাইডগুলো স্যানিটাইজ করা সহ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরেরস্বাস্থ্য বিধি এবং বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী সমস্ত ব্যবস্থা আমার নিশ্চিত করেছি এবং তা নিশ্চিত করেই আমরা পার্কগুলো পরিচালনা করে আসছি। যদিও আমরা ৫০ শতাংশের কম দর্শনার্থীর কথা বলেছিলাম কিন্তু বাস্তবে ধারণ ক্ষমতার ২০ শতাংশ দর্শনার্থীও এখন আসেন না।
 
তিনি আরও বলেন, বিনোদন ও পর্যটন সেক্টরে প্রচুর বিনিয়োগ এবং ব্যাংক লোন রয়েছে। লকডাউনকালীন এ সেক্টর দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় এই সেক্টরের অনেক উদ্যোক্তা ঠিকমতো ব্যাংক লোন পরিশোধ করতে সক্ষম হবেন না। ফলে এর বড় একটি অংশের ঋণখেলাপী হওয়ার আশঙ্কা আছে। এ সেক্টর বন্ধ থাকলে সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদি সময় মতো পরিশোধ করা সম্ভব হবে না এবং অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরিচ্যুত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। একইসঙ্গে এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত লাখ লাখ পরিবারের জীবন জীবিকা নির্বাহ করা দিন দিন দুরহ হয়ে পড়বে।  


সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত বছর লক ডাউনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সেক্টরগুলোর জন্য সরকার ঘোষিত প্রণোদনা দেওয়া হলেও পর্যটন শিল্প তথা বিনোদন পার্কগুলোকে সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় আনা হয়নি। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিগগিরই অন্যান্য সেক্টরের মতো পার্কগুলো খুলে দেওয়ার বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত প্রয়োজন।

বাপার সভাপতি বলেন, দেশে অবস্থিত বিনোদন পার্কের টিকে থাকা ও স্ব-অবস্থায় ফিরে আসার স্বার্থে কিছু প্রস্তাবনা বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত জরুরি।  প্রস্তাবনাগুলো হলো-

১. অতি সত্ত্বর অন্যান্য সেক্টর/প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সে অনুযায়ী বিনোদন পার্কগুলো খুলে দেওয়া।  
২.বিনোদন পার্কগুলোকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে সরকার কর্তৃক ঘোষিত বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় বিনোদন পার্ককে অন্তর্ভুক্ত করা।
৩.আগামী ৫ বছরের জন্য বিনোদন পার্কের ওপর ভ্যাট, সম্পূরক শুল্কসহ অন্যান্য কর মওকুফ করা, যাতে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে পর্যটক ও দর্শনার্থীদের সেবা নিশ্চিত করা যায়।
৪. আগামী ৫ বছর নতুন বিনোদন পার্ক নির্মাণ ও বর্তমান স্থাপনার সংযোজনার জন্য আমদানি করা বিভিন্ন রাইডসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতিতে মূসক ও শুল্ক কর মুক্ত আমদানির সুযোগ দেওয়া।
৫. চলতি মূলধন যোগান নিরবচ্ছিন্ন রাখার স্বার্থে ১ শতাংশ সুদে ঋণ দেওয়া।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৭ ঘণ্টা, জুন ০২, ২০২১
এমআরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।