ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

লকডাউনের খবরে ক্রেতাদের চাপ কাঁচাবাজারে 

শাওন সোলায়মান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৬ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২১
লকডাউনের খবরে ক্রেতাদের চাপ কাঁচাবাজারে  বাজারে ক্রেতাদের ভিড়। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: লকডাউনের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে ক্রেতাদের চাপ বেড়েছে রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে। পাশাপাশি ডিপার্টমেন্টাল সুপারশপ এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানগুলোতেও গ্রাহকদের প্রচণ্ড চাপ দেখা যায়।

 

রোববার (২৭ জুন) সকাল থেকেই রাজধানীর মিরপুর, শ্যামলী, আগারগাঁওসহ আশ-পাশের বেশ কয়েকটি এলাকার কাঁচাবাজারগুলোতে এমন চিত্র দেখা যায়।

ক্রেতা-বিক্রেতারা বলছেন, লকডাউনের ঘোষণা আসায় পণ্য কেনার চাহিদা বেড়ে গেছে। শুক্রবার (২৫ জুন) এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে দেশের সর্বত্র কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দেওয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে।  

সোমবার (২৮ জুন) থেকে পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত এই লকডাউন চলমান থাকার কথা ছিল। তবে ‘জুন ক্লোসিং’ থাকায়, সময় পিছিয়ে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) থেকে এটি কার্যকরের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। আর সোমবার থেকে বুধবার (৩০ জুন) পর্যন্ত চলবে সীমিত পরিসরে লকডাউন।

মূলত শুক্রবারের ঘোষণা আসার পর থেকেই শনিবার (২৬ জুন) সকাল থেকেই বাজারগুলোতে গ্রাহকের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যায় যা অব্যাহত থাকে রোববারও। মিরপুর ১১ নম্বর কাঁচাবাজারে গিয়ে দেখা যায়, পাইকারী ও খুচরা উভয় বাজারেই সকাল থেকে খুচরা বিক্রেতা ও ক্রেতাদের প্রচুর ভিড়।  পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিশেষ করে চাল, ডাল, তেল, পেয়াজ, আলু এবং বিভিন্ন ধরনের মসলার চাহিদা বেশি।

সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, লকডাউনের ঘোষণা আসায় পরে বাজারে পণ্য পাওয়া যাবে না অথবা পণ্যের দাম আরও বাড়তে পারে এই আশংকা থেকেই বাজার করতে এসেছেন তারা।  

পল্লবী এলাকার বাসিন্দা রাজু আহমেদ বলেন, লকডাউন সময়ের জন্য যতটুকু প্রস্তুতি রাখা যায় তার জন্যই সকাল সকালই বাজারে চলে এসেছি। আজ অফিসের শেষ দিন তবে অফিস করে বাজারে এলে হয়তো আর তেমন কিছু পাবো না। তাই কিছু মুদি আইটেম এবং সবজি ও মাংস কিনে রাখছি। প্রায় একই অবস্থা গৃহিণী শারমিন লাকীর। তিনি বলেন, লকডাউনে কত দিন থাকতে হতে পারে তার তো নিশ্চয়তা নেই। তাই যতটুকু পারছি নিয়ে রাখছি। আবার লকডাউনে বাসার সবাই একটু ভালোমন্দ পদের রান্না খেতে চায়। এটা এক ধরনের ঘরোয়া বিনোদনও বলতে পারেন। তাই আগে থেকেই কিছু জিনিস কিনে রাখছি।

এদিকে গ্রাহকদের চাপে চাপ বেড়েছে পাইকারী ও খুচরা বাজারেও। মিরপুর ১১ নম্বর বাজারের পাইকার ব্যবসায়ী জিয়া উদ্দিন বলেন, আশপাশের বিভিন্ন মুদি দোকান থেকে ব্যবসায়ীরা আসছেন। যত বেশি পারছেন সদাই আইটেম নিয়ে যাচ্ছেন। মসলা, চাল, ডাল, তেল ও আলু নিচ্ছেন বেশি বেশি।

পল্লবীর মুসলিম বাজারের এক ব্যবসায়ী আসলাম খন্দকার বলেন, শনিবার দোকানে যা ছিল সব শেষ হয়ে গেছে। লকডাউনের ঘোষণা আসবে তা তো জানতাম না তাই সেভাবে মাল ও উঠানো ছিল না দোকানে। কিন্তু শনিবার যে প্রেশার দেখলাম তাই আজ সকাল সকাল পাইকারী বাজারে গিয়ে পণ্য নিয়ে এসেছি।  

এদিকে কাঁচাবাজার ছাড়াও ভিড় রয়েছে সুপারশপগুলোতেও। মিরপুর ১২ নম্বরের প্রিন্স বাজারের ফ্লোর ইনচার্জ মোহাম্মদ মোতাহার হোসেন বলেন, শনিবার কাস্টমারদের চাপ খুব বেশি ছিল। আজও হয়তো বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই চাপ আরও বাড়বে। তবে লকডাউনের সিদ্ধান্ত সোমবার থেকে পিছিয়ে বৃহস্পতিবার হওয়ায় আজ চাপ সেভাবে নাও হতে পারে। গতকাল তো গ্রাহকেরা মালামাল নেওয়ার জন্য ট্রলি ও পাচ্ছিলেন না। গ্রাহকদের অনেকেকেই দীর্ঘক্ষণ বাইরে অপেক্ষা করতে হয় কারণ আগের গ্রাহকেরা কেনাকাটা করে বের হলে তারপর অন্যদের আসার সুযোগ হবে। এছাড়াও যেহেতু মাসের শেষ অনেকে মাসিক বাজার ও করে রাখছেন যেন পুরো মাস সাপোর্ট থাকে।

অন্যদিকে সবাই যেন অল্প করেও হলে কাটতিতে থাকা পণ্যগুলো কিনতে পারেন তারজন্য কিছু সুপারশপ গ্রাহক প্রতি পণ্যের পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। যেমন মিরপুর ৬ নম্বরের একটি সুপারশপে একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ১০ লিটার তেল কিনতে পারবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫২ ঘণ্টা, জুন ২৭, ২০২১
এসএইচএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।