ঢাকা: কুষ্টিয়ার মিরপুরের ঠান্ডু ব্যাপারী। গত কোরবানির ঈদে ২২টি গরু বিক্রি করে লাভ করেছিলেন চার লাখ টাকা।
সোমবার (৫ জুলাই) নগরীর একমাত্র স্থায়ী পশুর হাট গাবতলী ঘুরে দেখা যায়, গরু থাকলেও বেচাকেনা কম। সাধারণত যেসব মানুষের বাড়িতে জায়গা আছে এবং ঢাকার আশপাশে বিশেষ করে সাভার ও কেরানীগঞ্জে কোরবানির গরু একটু আগে বিক্রি হয়। কিন্তু করোনা সংকটে এবার দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। গাবতলী পশুর হাটে ক্রেতা হাতে গোনা।
গাবতলী পশুর হাটে ব্যাপারীরা জানান, করোনা সংকটের কারণে বাজার কেমন হবে বোঝা যাচ্ছে না। লকডাউন আরো এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে। ফলে গৃহস্থের বাড়ি থেকে গরু সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ স্থানীয়ভাবে হাট বসছে না।
জামালপুরের ইসলামপুরের নূর উদ্দিন ব্যাপারী প্রতিবছর কোরবানির ঈদে শতাধিক গরু ঢাকায় বিক্রি করেন। অথচ এবছর স্থানীয় হাট বন্ধ থাকায় তিনি একটিও গরু কিনতে পারেননি। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমরা সব সময় কসাইয়ের দরে গরু বিক্রি করি। সেই হিসেবে কিছুটা পেটে ভাতে চলে বলা যায়। আমরা একটা দিনের জন্য অপেক্ষা করি সেটা হলো কোরবানির ঈদ। কিন্তু কোরবানির ঈদ উপলক্ষে একটি গরুও কেনা হয়নি। এবার হাট বসবে কিনা আমরা অনিশ্চয়তায় আছি।
তিনি আরো বলেন, এবার অনলাইনে গরু বেচাকেনা হচ্ছে। আমরা এসব কিছু বুঝি না। কীভাবে গরু বিক্রি করবো।
গো খাদ্যের দাম বাড়ার কারণে এবার কোরবানির পশুর দাম চড়া। সাধারণ কসাইয়ের হিসাবে গরুর বাজার চলছে ২৪ হাজার টাকা মণ। সেই হিসেবে মাংসের কেজি পড়ে ৬শ টাকা। তার মানে তিন মণ ওজনের একটি গরু কোরবানি দিতে হলে গুনতে হবে অন্তত ৭২ হাজার টাকা।
অপরদিকে চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার শহিদুল ব্যাপারী গত কোরবানির ঈদে ২০টি গরুতে তিন লাখ টাকা লাভ করেছিলেন। এই আশায় এবার ৩৫টি গরু কিনে রেখেছেন। কিন্তু তিনি বিপাকে লকডাউন নিয়ে। সামনে হাট বসবে কিনা এবং মানুষ বাজারে আসবে কিনা এই নিয়ে চিন্তায় শহিদুল।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, গাও গেরাম ঘুরে ঘুরে ৩৫টি গরু দামে কিনেছি। এবার কী হবে আল্লাহ পাক জানে। গাহাক (ক্রেতা) বাসা থেকে না বের হলে গরুডা কার কাছ বিক্রি করবো।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ০৫, ২০২১
এমআইএস/এএ