ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

উৎপাদনশীল শিল্প-কারখানা সচল রাখার আহ্বান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০২১
উৎপাদনশীল শিল্প-কারখানা সচল রাখার আহ্বান

ঢাকা: উৎপাদনশীল সব শিল্প-কারখানা সচল রাখার আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

শুক্রবার (১৬ জুলাই) এফবিসিসিআই থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাজনিত বিধি-নিষেধের আওতায় সব প্রকার শিল্প-কারখানা বন্ধ রাখা হলে অর্থনৈতিক কার্যক্রমের প্রাণশক্তি উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ থাকবে এবং সাপ্লাই চেইন (সরবরাহ ব্যবস্থা) সম্পূর্ণভাবে বিঘ্নিত হবে।

এতে উৎপাদন থেকে ভোক্তা পর্যন্ত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিশেষ করে, খাদ্য-সামগ্রী, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, বোতলজাত পানীয়, নিত্য-প্রয়োজনীয় পণ্য ইত্যাদি উৎপাদন বন্ধ থাকলে ভোক্তা সাধারণ সমস্যার সম্মুখীন হবেন। পণ্য-সামগ্রী সঠিকভাবে সরবরাহ ও বাজারজাত না হলে পণ্যের মূল্য বাড়বে। এতে স্বল্প আয়ের ক্রেতারা ভোগান্তির শিকার হবেন।  

পাশাপাশি রপ্তানি খাতের উৎপাদন ব্যবস্থা বন্ধ থাকলে সময়মত পরবর্তী রপ্তানি অর্ডার অনুযায়ী সাপ্লাই দেওয়া সম্ভব হবে না। এতে রপ্তানি অর্ডার বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রসঙ্গত, ঈদের ছুটিসহ প্রায় ১৮ থেকে ২০ দিন কারখানা বন্ধ থাকলে এক অনিশ্চয়তার মধ্যে লেইট সামার, ক্রিসমাস ও বড়দিন এবং আগামী শীতের কার্যাদেশগুলো হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এক মাসের রপ্তানি শিডিউল বিঘ্নিত হলে পরবর্তী ছয় মাসের রপ্তানি শিডিউলে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।  সেসঙ্গে উৎপাদন বন্ধ থাকলে আমদানিকৃত কাঁচামাল অব্যবহৃত হয়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এতে আমদানিকারক ও উৎপাদক উভয়ই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এছাড়া ক্ষুদ্র ও ছোট কারখানাগুলো বন্ধ রাখা হলে উদ্যোক্তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এবং কারখানাগুলো পুনরায় চালু রাখা অসম্ভব হয়ে পড়বে। এ অবস্থায়, ইতোমধ্যে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ, প্লাস্টিক গুড্স ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টারর্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ টেরি-টাওয়েল ম্যানু: অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনসহ রপ্তানি ও উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অ্যাসোসিয়েশনগুলো ও চেম্বারগুলো শিল্প-কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম সচল রাখার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য এফবিসিসিআইয়ের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে।

করোনার বিস্তার রোধে জারিকৃত বিধি-নিষেধ সংক্রান্ত সার্কুলারে ওষুধ কারখানা বিষয়ে সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা নেই। যদি ওষুধ কারাখানা বন্ধ রাখা হয় তবে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাহত হবে। অপরদিকে ট্যানারি কারখানা বন্ধ রাখা হলে কোরবানির ঈদে সংগৃহীত চামড়া সংরক্ষণ কার্যক্রম ব্যাহত হবে।

বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে জীবন রক্ষাকে অবশ্যই অগ্রাধিকার দিতে হবে। কিন্তু উৎপাদন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হলে খাদ্য-পণ্যসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য থেকে সবাই বঞ্চিত হবে। সর্বোপরি প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্ব ও দিক-নির্দেশনায় বিদ্যমান বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতির মধ্যেও দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম সচল রয়েছে এবং জাতীয় প্রবৃদ্ধি ছয় দশমিক এক শতাংশ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, যদি উৎপাদন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয় তাহলে অর্থনীতির চলমান গতিধারা ব্যাহত হবে। জীবন ও জীবিকার মধ্যে সমন্বয়ের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অর্থনৈতিক কার্যক্রমকেও সচল রাখতে উৎপাদন ব্যবস্থাকে চলমান রাখা জরুরি। এ প্রেক্ষাপটে, শিল্প-কারখানাকে বিধি-নিষেধের আওতার বাহিরে রেখে উৎপাদন প্রক্রিয়াকে চলমান রাখার জন্য সরকারের প্রতি এফবিসিসিআই-এর সভাপতি জসিম উদ্দিন আহ্বান জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০২১
এসই/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।