ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

পাঙ্গাসের রাজ্য ময়মনসিংহ

জি এম মুজিবুর, সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২১
পাঙ্গাসের রাজ্য ময়মনসিংহ কিলবিল করছে পাঙ্গাস মাছ । ছবি: জিএম মুজিবুর

ময়মনসিংহ: ‘গোলা ভরা ধান, গোয়াল ভরা গরু আর পুকুর ভরা মাছ’- একসময় এই ছিল গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য। মাছে-ভাতে বাঙালি পরিচয়টিও এসেছে সেভাবে।

অনেকে বলেন, এখন আর সেই দিন নেই। সব কৃষকের নেই গোলা ভরা ধান। গোয়াল ভরা গরু। ব্যতিক্রম যেন শুধু ময়মনসিংহ জেলা। এখানে প্রতিটি বাড়িতে ছোট পরিসরে হলেও মাছ চাষের জন্য রয়েছে পুকুর। গোয়ালে আছে দুই-একটি দুধের গরু। যাদের কোনো জমি নেই, তারা অন্যের ধানী জমি লিজ নিচ্ছেন। সেখানে তৈরি করছেন পুকুর। মাছ চাষ করে চেষ্টা করছেন স্বাবলম্বী হওয়ার। এভাবেই ময়মনসিংহ জেলার প্রায় ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ লোক পাঙ্গাস মাছ চাষ করে আসছেন।

জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকশ একর জায়গাজুড়ে রয়েছে শুধু পুকুর আর পুকুর। পাঙ্গাস চাষের জন্য ৫-১০ কাঠা থেকে শুরু করে ২০-৫০ কাঠা জায়গায় পুকুর তৈরি করেছেন একেকজন মাছ চাষী। উপজেলার জঙ্গল বাড়ি এলাকার মাছ চাষি মো. বেলাল ফারাজী (৪৫) বাংলানিউজকে বলেন, ২০১০ সালে ১০ কাটা জমিতে একটি ছোট্ট পুকুর দিয়ে শুরু করেছিলাম। মা-বাবার দোয়া ও আল্লাহ রহমতে এখন আট একর জমিতে আটটি পুকুর রয়েছে। আমরা পাঁচ ভাই, দুই বোন। বড় ভাই ডাক্তার, দুই ভাই চাকরি করেন। বোনদের বিয়ে দিয়েছি। আর আমরা দুই ভাই মাছ চাষ করি। সবাই খুব ভালো আছি। তিনি আরও বলেন, আমরা বেশিরভাগ পুকুরে পাঙ্গাশের চাষ করি। এর পাশাপাশি তেলাপিয়া, রুই, কাতলা ও পুঁটি মাছের পোনা দেই। পুকুর তৈরির পর ৮০ গ্রাম ওজনের মাছের পোনা দেওয়া হয়। ১৮ মাস পর সেগুলো বিক্রির উপযোগী হয়। পাঙ্গাস মাছ প্রতিটির ওজন আড়াই কেজি হয়। আবার অনেক সময় তিন কেজিও হয়ে থাকে। https://fb.watch/7j7yps1Btb/অবশ্য সেক্ষেত্রে প্রচুর পরিমাণ খাবার দিতে হয় তাদের। মাছ তাড়াতাড়ি বেড়ে উঠার জন্য রাইস পলিশ, আটা, ভুট্টা, শুঁটকি মাছ, হাড়ের গুঁড়া ইত্যাদি দেওয়ার কথা জানান বেলাল ফারাজী। মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) থেকে শুধু পাঙ্গাস মাছ বিক্রি শুরু করেছেন তিনি। এবার ৯০ থেকে ১০০ টন মাছ বিক্রি হবে বলে আশাবাদ তার। এতে আনুষাঙ্গিক খরচ বাদ দিয়ে বেলাল ফারাজীর পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় হবে। কীভাবে মাছ বিক্রি করেন জানতে চাইলে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আমাদের জেলায় অনেক পাইকার আছেন। এরা পুকুর থেকে মাছ কিনে নেন। তারপর দেশের বিভিন্ন জেলার আড়তগুলোতে ব্যাপারিদের কাছে বিক্রি করেন। আমি প্রতি কেজি মাছ ৯২ টাকা দরে পাইকারদের কাছে বিক্রি করেছি।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০২১
জিএমএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।