ঢাকা: বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রথমবারের মতো চিনির দাম বেঁধে দিয়েছে সরকার। সরকার নির্ধারিত দাম অনুযায়ী এখন থেকে প্রতি কেজি খোলা চিনি ৭৪ টাকা এবং প্যাকেট চিনি ৭৫ টাকায় বিক্রি হবে।
বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মিল মালিকদের বৈঠকে এ দাম নির্ধারণ করা হয়। বৈঠকে চিনি উৎপাদনকারী সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, দেশবন্ধু গ্রুপসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে অতিরিক্ত সচিব (আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, চিনির দাম বেড়ে প্রতি কেজি ৮০ টাকায় পৌঁছেছিল। আমরা কেজিতে ৫ টাকা দাম কমিয়েছি। এখন থেকে প্রতিকেজি খোলা চিনি ৭৪ টাকা এবং প্যাকেট চিনি ৭৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হবে। শুক্রবার থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
তিনি বলেন, কয়েকটি পণ্যের আমদানি মূল্য বেড়ে যাওয়ার অজুহাতে গত দুই-তিন মাসে ব্যবসায়ীরা চিনির দাম বাড়িয়েছে। এর আগে দাম ছিল ৭০ টাকার নিচে। সকালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে চিনির নতুন দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, খুচরা বাজারে খোলা চিনি ৮০ টাকা এবং প্রতি কেজি প্যাকেট চিনির দাম ৮০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এমন প্রেক্ষাপটে প্রথমবারের মতো চিনির সর্বোচ্চ দাম ণির্ধারণ করে দিল সরকার।
বাংলাদেশ খাদ্য ও চিনি শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি) সূত্রে জানা গেছে, সরকার চলতি মৌসুমে ছয়টি চিনিকলের উৎপাদন বন্ধ রেখেছে। ১ মার্চ পর্যন্ত বাকি নয়টি চিনিকলে মোট উৎপাদন হয়েছে ৪১ হাজার ৬৪৮ দশমিক ৬০ টন চিনি। এছাড়া আগের মজুদ ছিল ৫৬ হাজার ৩০ দশমিক ৯১ টন। ১ মার্চ পর্যন্ত ফ্রি সেল, ডিলার ও সরকারি সংস্থার কাছে চিনি বিক্রি করা হয়েছে মোট ৪৮ হাজার ৮৮৩ টন। সব মিলিয়ে সংস্থাটির কাছে বর্তমানে চিনি মজুদ আছে মাত্র ৪৮ হাজার ৭৯৬ দশমিক ৪ টন৷ এর মধ্যে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস ও মিলস রেশনের জন্য সংরক্ষিত আছে ১০ হাজার ৭৯৮ টন চিনি। সব মিলিয়ে চিনি শিল্প কর্পোরেশনের বিক্রয় যোগ্য মজুদ নেমে দাঁড়িয়েছে ৩৭ হাজার ৯৯৮ টনে। যা সার্বিকভাবে দেশের চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণে খুবই অপ্রতুল বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
বিএসএফআইসির প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দেশে চিনির চাহিদা গড়ে ১৫-১৭ লাখ টন। এর মধ্যে সরকারি মিল ও সরকারি ব্যবস্থাপনায় আমদানিকৃত চিনিসহ দেড় থেকে আড়াই লাখ টন চিনি সরবরাহ করে বিএসএফআইসি। কিন্তু ছয়টি সরকারি মিল বন্ধ থাকার পাশাপাশি আমদানি না হওয়ায় দেশে চিনির চাহিদার প্রায় ৯০ শতাংশের বেশি বেসরকারি মিল মালিকদের নিয়ন্ত্রণে। তাছাড়া বিএসএফআইসির নিজস্ব প্রায় চার হাজার ডিলারের কাছে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দেশের পাইকারি ও খোলা বাজারে দাম বাড়ছে।
বাংলাদেশ সময় : ১৫৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৯,২০২১
জিসিজি/এমএমজেড