ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

দেশের সব অঞ্চলে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ার প্রাধান্য শিল্পনীতিতে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২১
দেশের সব অঞ্চলে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ার প্রাধান্য শিল্পনীতিতে

ঢাকা: দেশের সব অঞ্চলে সুষমভাবে শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠাকে প্রধান্য দিয়ে জাতীয় শিল্পনীতি-২০২১ প্রণীত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।  

রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘প্রস্তাবিত জাতীয় শিল্পনীতি ২০২১-এ ব্যক্তিখাতের প্রত্যাশা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, জিডিপিতে শিল্পখাতের অবদান ৫ শতাংশ বৃদ্ধি, সরকারি-বেসারকারি খাতের যৌথ সমন্বয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানো, দক্ষ ব্যাকওয়ার্ড ও ফরওয়ার্ড লিংকেজ শিল্প প্রতিষ্ঠা, গবেষণার মাধ্যমে শিল্পখাতের দেশীয় প্রযুক্তির প্রসার, সিএমএসএমই খাতের দক্ষতা উন্নয়ন প্রভৃতি বিষয়গুলো নতুন শিল্পনীতিতে প্রাধান্য পাবে।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, আসন্ন শিল্পনীতি ২০২৫ সাল পর্যন্ত বলবত থাকবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুবিধা গ্রহণের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দক্ষ মানবসম্পদের উন্নয়ন, সম্ভাবনাময় খাতগুলোর পণ্য বহুমুখীকরণের পাশাপাশি ভৌত অবকাঠামো সুবিধা প্রাপ্তির বিষয়ের ওপর নতুন শিল্পনীতিতে গুরুত্ব প্রদান করা হবে। এছাড়া শিল্পনীতিতে ব্যক্তিখাতের প্রত্যাশা পূরণের চেষ্টা করা হয়েছে। উন্নয়নের জন্য শিল্প পণ্য উৎপাদন বৈচিত্রায়নে সহায়তা, নতুন, যোগ্য ও সম্ভাবনাময় উদ্যোক্তা সৃষ্টিকল্পে সহায়ক ভৌত সুবিধাদি প্রাপ্তিতে সহায়তা করা এবং স্টার্টআপ ফাইন্যান্সিং, ক্রেডিট গ্যারান্টি ইত্যাদি প্রদানের মাধ্যমে এসএমইখাতের প্রসারকে ত্বরান্বিত করা হবে।

তিনি বলেন, কোভিড মাহামারি মোকাবিলায় দেশের ব্যক্তিখাতের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সরকার বেশকিছু প্রণোদনা প্যাকেজ প্রদান করছে, যার ফলে আমাদের অর্থনীতিতে গতির সঞ্চার হয়েছে। দেশের সিএমএসএমই খাতে অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি, তাই এখাতের বিকাশে আর্থিক ও নীতিসহায়তা নিশ্চিতকরনের কোনো বিকল্প নেই। প্রস্তাবিত জাতীয় শিল্পনীতি-২০২১-এ বেসরকারি তথা ব্যক্তিখাতের প্রত্যাশা পূরণের সর্বাত্মক চেষ্টা করা হয়েছে। দেশ ও জনগণ এর সুফল ভোগ করবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের শিল্পখাতে যে শ্রমিকবান্ধব ব্যক্তিখাত নির্ভর শিল্পায়ন এবং উৎপাদনের স্বপ্ন দেখেছিলেন, তারই সফল বাস্তবায়নকে মূল উপজীব্য করে জাতীয় শিল্পনীতি-২০২১ প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। এর মাধ্যমে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে কাজে লাগিয়ে ক্রমবর্ধমান উৎপাদনশীলতা অর্জন, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি এবং ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন ত্বরান্বিত হবে।  

ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহাকারী সচিব (নীতি) মো. সলিম উল্লাহ বলেন, নতুন শিল্পনীতিতে জাতীয় আয়ে শিল্পখাতের অবদান বিদ্যমান অবদান ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশে উন্নীতকরণ। তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সর্বোচ্চ সুফল অর্জন। দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির মাধ্যম দারিদ্র্যতা ও বেকারত্ব হ্রাস। সম্ভাবনাময় রপ্তানিমুখী শিল্পখাত সমূহের প্রসার ও প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বৃদ্ধি। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে শিল্পখাতে সক্ষমতা বাড়ানো প্রভৃতি বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।  

তিনি বলেন, ব্যক্তিখাত ও শ্রমিকদের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং প্রতিযোগিতার বাজারের অবস্থান সুদৃঢ় করার লক্ষ্য নিয়ে শিল্পনীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। এ বছরের মধ্যেই নতুন শিল্পনীতি চূড়ান্তকরণ সম্ভব হবে।  

মো. সলিম উল্লাহ জানান, শিল্পনীতিতে স্টেকহোল্ডারদের মতামত অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে ইতিমধ্যে দেশের প্রতিটি বিভাগে আটটি পরামর্শক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।  

ওয়েবিনারের স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান দেশের সিএমএসএমই খাতের যথাযথ উন্নয়নে বিদ্যমান সংজ্ঞার সংশোধনের আহ্বান জানান, যার মাধ্যমে এ খাতের উদ্যোক্তাদের আর্থিক ও নীতি সহায়তা প্রাপ্তির বিষয়টি সহজতর হবে। শিল্পনীতি তৈরিতে ভিয়েতনামের গৃহীত শিল্পনীতির অনুসরণের পাশাপাশি গবেষণা ও উন্নয়ন, উদ্ভাবন এবং ই-কমার্স শিল্পের অগ্রযাত্রাকে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।  

এছাড়া ডিসিসিআই সভাপতি, এলডিসি উত্তর সময়ে বিশেষকরে দেশের রপ্তানি খাতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় রপ্তানির সম্ভাবনাময় দেশগুলোর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার প্রদানের ওপর জোর দেন। এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থাসমূহের নেগোশিয়েশনের দক্ষতা উন্নয়নের প্রস্তাব করেন।  

ওয়েবিনারে আলোচনায় নেন আব্দুল মোনেম লিমিটেড গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএসএম মঈনউদ্দিন মোনেম, বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক হুসনে আরা শিখা, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শেখ ফয়েজুল আমীন প্রমুখ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২১
জিসিজি/জেএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।