ঢাকা: স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান শাওমি বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে প্রতিবছর ৩০ লাখ স্মার্টফোন উৎপাদনের ঘোষণা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে দেশে শাওমির স্মার্টফোন সংযোজন কারখানার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
ডিবিজি টেকনোলজি বিডি লিমিটেডের সঙ্গে যৌথভাবে স্মার্টফোন তৈরি করবে শাওমি বাংলাদেশ। ডিবিজি একটি গ্লোবাল ইএমএস কোম্পানি, তাদের চীন, ভিয়েতনাম, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে ম্যানুফ্যাকচারিং ব্যবসা রয়েছে। বিভিন্ন দেশের স্বনামধন্য কিছু ব্র্যান্ড ও কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স পণ্য তাদের কারখানায় তৈরি হয়। ডিবিজি হংকং স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান তালিকাভুক্ত কোম্পানি।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গাজীপুরের বাইপাস রোডের কাছে ভগরায় কারখানাটিতে শাওমি প্রতি বছর প্রায় ৩০ লাখ স্মার্টফোন তৈরি করবে। প্রায় ৫৫ হাজার বর্গফুট আয়তনের কারখানাটিতে প্রাথমিক অবস্থায় প্রায় এক হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। কৌশলগত কারণেই কারখানা স্থাপনের জন্য গাজীপুরকে বেছে নেওয়া হয়েছে বলে জানায় শাওমি।
শাওমির অনন্য ও উদ্ভাবনী ধারণা, ডিরেক্ট-টু-কাস্টমার ব্যবসায়িক মডেল স্মার্টফোন শিল্পে যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছে। স্মার্টফোন উৎপাদনের মাধ্যমে বাংলাদেশের বাজারে আরও দীর্ঘমেয়াদে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছে শাওমি। এমন বিনিয়োগ ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ কার্যক্রমে আরও অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করবে। এতে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে একটি ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হিসেবে পরিচিত পাবে।
বাংলাদেশের কারখানায় রেডমি সাব-ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন দিয়ে শুরু হয়েছে শাওমির উৎপাদন, যেটি আগামী নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা রয়েছে। পরে শাওমির অন্য স্মার্টফোনের পাশাপাশি পোকোর ফোনও তৈরি হবে।
শাওমি বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়াউদ্দিন চৌধুরী বলেন, স্থানীয়ভাবে স্মার্টফোন উৎপাদনের মধ্য দিয়ে শাওমি আরও এগিয়ে গেল। বাংলাদেশকে আকর্ষণীয় ম্যানুফ্যাকচারিং হাব হিসেবে গড়ে তোলার রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে দূরদর্শী ভিশন, সেখান থেকেই আমরা স্থানীয়ভাবে স্মার্টফোন উৎপাদনে আগ্রহী হয়েছি। এর মধ্য দিয়ে আমরা দেশের বাজারে দীর্ঘস্থায়ী কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, সেই সঙ্গে দেশে আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও অবদান রাখতে পারছি।
সালমান এফ রহমান বলেন, তরুণ নেতৃত্ব ও শাওমির মতো তরুণ কোম্পানির ওপর আমাদের যথেষ্ট বিশ্বাস রয়েছে। এমন নতুন প্রজন্মের সব কোম্পানি ও উদ্যোক্তাই হচ্ছে বাংলাদেশের একেকটা সফলতা। ডিজিটাল বাংলাদেশ উদ্যোগের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে শাওমির প্রথম উৎপাদন ইউনিট স্থাপনে আমরা অংশীদার হতে পেরে অনেক আনন্দিত। আমরা বিশ্বাস করি, এই অংশীদারত্বের মাধ্যমে দেশের তরুণদের জন্য আরও সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং বৈশ্বিক মানের ইলেক্ট্রনিক্স ম্যানুফ্যাকচারিং ইকোসিস্টেম প্রতিষ্ঠা হবে। বাংলাদেশে এমন সূর্যোদয়ের জন্য শাওমিকে স্বাগতম।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এক ভিডিও বার্তায় বলেন, আমদানিকারক দেশ থেকে স্মার্টফোন উৎপাদক দেশ হওয়ার জন্য আমরা বহুদিন ধরে যুদ্ধ করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা করেন, সেটার বাস্তবায়ন এখন দেখা যাচ্ছে। শাওমি অনেক দূর এগিয়ে যাবে, এমনটাই আমাদের বিশ্বাস।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, স্থানীয়ভাবে স্মার্টফোন উৎপাদন কারখানা চালুর জন্য শাওমিকে অভিনন্দন। এটি ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সহায়তা করবে। এর মাধ্যমে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ উদ্যোগ আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। আমার বিশ্বাস, এখন থেকে দেশের মানুষ একটি প্রতিযোগিতামূলক দামে, শাওমির সর্বশেষ সব উদ্ভাবনী পণ্য উপভোগ করতে পারবেন।
শাওমি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠিত হয় ২০১০ সালের এপ্রিল মাসে এবং ২০১৮ সালের ৯ জুলাই হংকং স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান বোর্ডে তালিকাভুক্ত হয়। শাওমি একটি কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স এবং স্মার্টফোনসহ স্মার্ট ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি; যার মূল হলো স্মার্ট হার্ডওয়্যার এবং ইন্টারনেট অব থিংকস বা আইওটি প্লাটফর্ম।
বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০২১
এমআইএইচ/এনএসআর