পঞ্চগড়: জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে গত তিনদিন ধরে দেশব্যাপী চলমান পরিবহন ধর্মঘটে সব বাস-ট্রাক-লঞ্চের চাকা থমকে গেছে।
এর মধ্যে ছোট খাটো কিছু পরিবহনে ধর্মঘটের প্রভাব না পড়লেও দেশের একমাত্র চতুর্দেশীয় স্থলবন্দর (ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটান) পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনায় অনেকটাই প্রভাব পড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, বন্দরে আমদানি স্বাভিবক থাকলেও রপ্তানি হচ্ছে না। অন্যদিকে দেশীয় গাড়ি বন্দর এলাকায় পৌঁছাতে না পারায় লোকসানের মুখে পড়েছেন তারা।
এদিকে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, এখন পর্যন্ত বন্দরের অবস্থা স্বাভাবিক থাকলেও দেশি গাড়ি বন্দর এলাকায় আসছে না। ফলে আমদানি পণ্য সারাদেশে সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। আবার দেশ থেকে রপ্তানিপণ্যবাহী গাড়িও বন্দরে আসতে পারছে না। যার প্রভাব পড়ছে রপ্তানিতে।
গত শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সকাল থেকে পরিবহন ধর্মঘট শুরুর পর রোববার (৭ নভেম্বর) টানা তিনদিন বন্দরে দেশি গাড়ি ও রপ্তানিকারক গাড়ি না আসায় বন্দর কার্যক্রমে স্থবিরতা চলে এসেছে।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি আব্দুল লতিফ তারিন বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের এ বন্দরে ভারত, নেপাল ও ভুটানের যে সব মালামাল আসছে, সেগুলো দেশি গাড়ি প্রবেশ না করায় লোড করা যাচ্ছে না। একইসঙ্গে ট্রাক না থাকায় মালামাল দেশের কোথাও যাচ্ছে না। এর ফলে বন্দরে চাপ বেড়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে রপ্তানিকারক মালামাল বন্দরে না আসায় সরকার লাখ লাখ টাকার রাজস্বও হারাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, দেশি গাড়ি বন্দর এলাকায় প্রবেশ না করায় আমদানি করা কিছু প্রয়োজনীয় মালামাল বন্দরেই আনলোড করা হচ্ছে। বর্ধিত জায়গার মধ্যে বর্তমানে ভারত ও ভুটানের প্রচুর গাড়ি রয়েছে, ফলে যানজটের কারণে মালামাল লোড আনলোড করতে না পারায় ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। গত তিনদিন ধরে ধর্মঘটের কারণে কোনো আমদানি করা গাড়ি বন্দর থেকে ছেড়ে যায়নি! এটিকে আমদানি করা পাথর বন্দরে আনলোড করা হলেও ভূসি, ভুট্টাসহ বিভিন্ন মালামাল বন্দরে রাখা যাচ্ছে না, গাড়ি আনলোড করা যাচ্ছে না। এতে করে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বন্দর সংশ্লিষ্টদের।
এ বিষয়ে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, ধর্মঘটের কারণে বন্দরে বাংলা গাড়ি কম প্রবেশ করছে। যে সব মালামাল ছাড়করণের, সেগুলোতে একটু সমস্যা হচ্ছে। তবে বর্তমানে পাথরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যে ব্যবসায়ীরা দেশের বিভিন্ন স্থানে পাথর পাঠান, মূলত তারাই ধর্মঘটের কারণে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।
এদিকে কেরোসিন ও ডিজেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে পরিবহন মালিক শ্রমিকদের ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের তৃতীয় দিনে প্রায় অচল হয়ে পড়েছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। গণপরিবহন না থাকায় বিপাকে পড়তে হয়েছে কর্মজীবীদের। ছোট যানবাহন চলাচল করলেও দ্বিগুণ ভাড়া গুণতে হচ্ছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০২১
এসআই