ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ওএমএসে ভর্তুকি বেড়েছে ৮শ কোটি টাকা

শাহেদ ইরশাদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২২
ওএমএসে ভর্তুকি বেড়েছে ৮শ কোটি টাকা

ঢাকা: নিত্যপণ্যের দাম নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে সরকার খোলা বাজারে বিক্রি (ওএমএস) কর্মসূচির সময় বাড়ানোর পাশাপাশি ভর্তুকির পরিমাণ আরও বাড়িয়েছে।

দেশের উপজেলা পর্যায়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে ওএমএস কর্মসূচির ভর্তুকি ১৯ শতাংশ বা ৮০০ কোটি টাকা বাড়িয়েছে সরকার।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেছেন, করোনা মহামারির মধ্যে যখন অনেক মানুষ কর্মহীন তখন দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে মূল্যস্ফীতি থেকে রক্ষার জন্য এ ধরনের উদ্যোগ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অপরদিকে ওএমএস কর্মসূচির ডিলারদের অনিয়ম রোধে হঠাৎ করেই দেশের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করছেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয় নিয়মিত বাজেট বরাদ্দের বাইরে অতিরিক্ত তিন লাখ টন চাল ও এক লাখ টন গম বরাদ্দ অনুমোদন দিয়েছে।  

জানা গেছে, খাদ্য মন্ত্রণালয় চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে চাল-আটা বিক্রি করবে। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য এই বরাদ্দ চেয়ে দুই সপ্তাহ আগে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদারের কাছে একটি চিঠি পাঠান।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত ওএমএস কর্মসূচিতে বরাদ্দের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৭৬০ কোটি টাকা, যা বাজেট বরাদ্দের চেয়ে ১৯ শতাংশ বেশি। সরকার ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বাজেটে ওএমএস কর্মসূচির জন্য চার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছিল।

করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় ২০২১ সালে (জানুয়ারি-এপ্রিল) নগরের দরিদ্র মানুষের মাঝে বিতরণের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় অতিরিক্ত ২০ হাজার চাল ও ১৪ হাজার টন আটা বরাদ্দ দিয়েছিল।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, এখন চালের দাম ৫৫ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে। এই দাম কবে কমবে বলা যাচ্ছে না। ওএমএস’র খাদ্যপণ্য চুরি বন্ধে নজরদারি আরও বাড়াতে হবে। মহামারির মধ্যে আমরা দরিদ্রদের মাঝে কম দামে চাল-আটা বিতরণ নিশ্চিত করতে চাই, যাতে তারা ওএমএসএর সুবিধা পান। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৬ জানুয়ারি আটজন ডিলারের লাইসেন্স বাতিল ও চারজন কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে খাদ্য অধিদপ্তর। এসব উদ্যোগ বাজার স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করবে।

এ বিষয়ে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বাংলানিউজকে বলেন, ওএমএস কর্মসূচি পরিচালনায় অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধ করতে পরিদর্শন কর্তৃপক্ষকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে পাঁচটি টিম।

তিনি বলেন, ওএমএস ডিলাররা যাতে অনিয়ম করার সুযোগ না পায় সেজন্য এসব পরিদর্শন টিম প্রতিদিন সকাল ৯টায় কোথায় থাকবে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।

এ কাজের সুফল পাচ্ছেন বলেও দাবি করেন আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন, পরিদর্শনে ওএমএস ডিলারদের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি বেরিয়ে আসছে। যারা অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি করবে তাদের জরিমানা করা হবে এবং ডিলারশিপ বাতিল করা হবে বলে সতর্ক করা হয়েছে। প্রয়োজনে মামলা করা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

খাদ্য মন্ত্রণালয় চলতি বছরের ১৪ থেকে ২০ জানুয়ারি এক সপ্তাহে সারাদেশে ও এমএস কর্মসূচির মাধ্যমে ১৮ হাজার ৩৬৩ মেট্রিক টন চাল ও আটা বিক্রি করেছে। চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারের কাছে ২০ লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন চাল ও আটা মজুদ রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২২
এসই/এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।