ঢাকা, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

অভিধানের সবচেয়ে সুন্দর শব্দ ‘স্বপ্ন’ থেকে সুপারশপ 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২২
অভিধানের সবচেয়ে সুন্দর শব্দ ‘স্বপ্ন’ থেকে সুপারশপ  স্বপ্ন’র নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: কৃষকের কাছ থেকে পণ্য নিয়ে এসে আবার মধ্যবিত্তদের হাতে পৌঁছে দিচ্ছে এসিআই লজিস্টিক। গ্রামের কৃষক এবং নগরের মধ্যবিত্তের সংযোগ ঘটাচ্ছে ‘স্বপ্ন’।

যে স্বপ্নগুলো দেখেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষক, তা বাস্তবে রূপ দিতেই নামটি করা হয় ‘স্বপ্ন’। বলা হচ্ছে সুপারশপ ‘স্বপ্ন’র কথা।

একযুগ অতিক্রম করা ‘স্বপ্ন’ এখন কেমন, ভবিষ্যতে কী ভাবনা, পরিচালন মুনাফা অর্জন এবং সেরা ব্র্যান্ডের একাধিক পুরস্কার পাওয়ার পেছনের গল্পটা বলেছেন এই চেইনশপের নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির। বাংলানিউজের হয়ে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ইসমাইল হোসেন।

বাংলানিউজ: স্বপ্নের শুরুর গল্পটা জানতে চাই?

সাব্বির হাসান নাসির: এসিআই এগ্রো বিজনেস ডিভিশন কৃষির জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো কৃষকের কাছে পৌঁছে দেয়। আইডিয়াটা ছিল যে, আমরা কৃষকদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে তাদের কাছ থেকে পণ্য নিয়ে এসে আবার মধ্যবিত্তদের হাতে যেন পৌঁছে দিতে পারি। এ সংযোগ সেতুর নাম হতে পারে ‘স্বপ্ন’। । সেখান থেকেই সুপার মার্কেটের যাত্রা শুরু। এভাবে ৭০’ এর অধিক আউটলেট একসময় হয়ে যায়। তখন আবার পরিসর ছোট করা হয়। শুরুতে দ্রুত গতিতে বেড়ে উঠার কারণে কিছু কিছু লোকেশন থেকে খুব একটা ভালো রিটার্ন আসছিল না। তারপর সেটি কমতে কমতে ৩৭-এ চলে যায়। এ ৩৭টি আউটলেট দিয়েই এক সময় মার্কেট লিডারশিপ অর্জন করে ‘স্বপ্ন’। যখন দেখলাম কিছু ইন্ডিকেটর পজিটিভ হচ্ছে, তখন আস্তে আস্তে এক্সপ্যানশন করা শুরু করেছি। বিভিন্ন মডেলের মাধ্যমে এখন সারাদেশে আমাদের ২০৩টি আউটলেট রয়েছে।
 
বাংলানিউজ: স্বপ্ন নাম হলো কেন?

সাব্বির হাসান নাসির: এ নামটি এসিআই লিমিটেডের গ্রুপ ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড. আরিফ দৌলার দেওয়া। ওনার কাছে মনে হয়েছে ডিকশনারির সবচেয়ে সুন্দর শব্দ হচ্ছে ড্রিম, যার অর্থ স্বপ্ন। কারণ, স্বপ্ন মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। যেহেতু আমরা একদিকে গ্রামীণ কৃষক, অন্যদিকে বিভিন্ন উদ্যোক্তাদের সঙ্গে সংযুক্ত; আরেকদিকে মধ্যবিত্ত আপমর জনসাধারণের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এসব জায়গাতে ভ্যালু ডিস্ট্রিবিউশন ঠিকঠাক মতো না হওয়াতে স্বপ্নগুলো অনেক সময় অপূর্ণ বা দুঃস্বপ্ন হয়ে থাকে। সেই জায়গা থেকেই স্বপ্ন কাজ করে। স্বপ্ন চেষ্টা করে প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে পণ্য কেনা, আদিবাসীদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার, সমাজের অবহেলিত বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষদের স্বপ্নের ভেতরে ঢোকার, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষকে কেন্দ্রে নিয়ে আসার চেষ্টা করে। স্বপ্ন চেষ্টা করে গ্রাম থেকে যেসব কৃষকের ছেলে মেয়ে পড়াশোনা করতে আসে কিন্তু এখানে এসে খরচ সামলে উঠতে পারে না তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়ার। যাতে করে পাশাপাশি পড়াশোনাটা তারা করতে পারে।

স্বপ্ন অনেক কষ্টের টাকায় চলা যেসব সংসার, সেসব সংসারে দেখা যায় অর্থনৈতিক চাপের কারণে পুরুষ সঙ্গীটি কাজে ব্যস্ত, তখন বাসায় থাকা মা বা নারীর একটা নিরাপদ স্থানে সম্মানের সঙ্গে বাজার করার অধিকারটা নিশ্চিত করে। এতে পরিবারে কিছু সময় বেঁচে যায়। সে বেঁচে যাওয়া সময়ে তাদের সন্তানদের প্রতি আরও যত্মশীল হতে পারে। স্বপ্ন চেষ্টা করে কৃষকদের আধুনিক কৃষি পদ্ধতি সম্পর্কে জানাতে যাতে করে নিরাপদ খাদ্য মানুষের কাছে পৌঁছে যায়।

এগুলো সবই এক ধরনের দুঃস্বপ্নকে স্বপ্নে রূপান্তর করার প্রচেষ্টা। স্বপ্নটা হচ্ছে- গ্রামীণ একটা পরিবার হোক আর শহরের একটা পরিবার হোক, সেখানে স্বপ্নগুলো যেন পূরণ হয় এবং অর্থনৈতিক সমস্যাটি বাঁধাটি না হয়ে দাঁড়ায়। এটাই স্বপ্ন নাম করার উদ্দেশ্য।

বাংলানিউজ: একযুগ পর পরিচালন মুনাফায় সাফল্য, এটা কীভাবে দেখছেন?

সাব্বির হাসান নাসির: পানি থেকে যেমন বাষ্প তৈরি হয়, তখন হঠাৎ করে দেখলে মনে হবে যে বাষ্প হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু পানির ভেতরে এক ধরনের প্রক্রিয়া চলতে থাকে। সে প্রক্রিয়ায় পানির কিছু কিছু অনু-পরমাণু বাষ্প কণায় রূপান্তরিত হয়েছে কিন্তু আমরা দেখতে পাই না।

পরিচালনা মুনাফা সময় লাগলো, এটা না বলে বলা উচিত যে আসলে ধীরে ধীরে মুনাফার দিকে প্রতিবছর এগোচ্ছিলো। প্রকাশটা একটা পার্টিকুলার নাম্বার দিয়ে বলছি। তার আগে প্রতিবছর আমাদের ইমপ্রুভমেন্ট ছিল। প্রতিবছর গ্রোথগুলো হয়েছে। এগুলো সব মিলেই পরিচালন মুনাফায় সাফল্যের ঘটনাটা ঘটেছে। সুপারমার্কেট ইন্ডাস্ট্রি একটি লং টার্ম ব্যবসা যেখানে প্রফিট্যাবিলিটি আসতে সময় বেশি লাগে। কিন্তু পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রফিট্যাবল ইন্ডাস্ট্রিদের একটি এটা।

বাংলানিউজ: দেশে সুপারশপ পরিচালনার সমস্যা কী কী?

সাব্বির হাসান নাসির: সরকারের যে ভ্যাট পলিসি তাতে সুপার মার্কেট অ্যাফেকটেড হয়। এখানে একটা অসম ভ্যাট পলিসি রয়েছে। সেটা ঠিক করতে হবে। এটা করা সম্ভবও। যারা সিংহভাগ ইকুইটি দিয়ে এ ব্যবসা করেন, তাদের লাভে আসতে সময় কম লাগে।

আমাদের দেশে রিয়েল এস্টেটের জন্য এরকম কোনো পলিসি নেই যে একটি কমিউনিটিকে সার্ভ করার জন্য একটা সুপার মার্কেট দরকার। সরকারি নীতিমালা নেই যে ভাড়া কত হবে বা কতটুকু বাড়াতে পারে। সরকার নির্ধারিত কোনো জায়গাও নেই যে এখানে সুপারমার্কেট করা যাবে।

তৃতীয় বাধা হলো, ট্রেইনড ওয়ার্কফোর্স নেই। ট্রেনিং দিতেই অনেক সময় চলে যায় এবং তারপর দেখা যায় তারা সুইচ করে, দেশের বাইরে চলে যায়। আমাদের যে ইকুইপমেন্ট গুলো লাগে সেগুলো এখানে তৈরি হয় না, বাইরে থেকে নিয়ে আসতে হয়।

আমাদের বৃহত্তর ক্রেতা সমাজ এখনও এসব পণ্য কেন স্বাস্থ্য সম্মত পরিবেশে কিনতে হবে সে ব্যাপারে সচেতন নন।

আর আমাদের রেগুলেটরি বডি যেসব জায়গায় অভিযান চালায় যেমন বারকোড বা বিএসটিআইয়ের সার্টিফিকেট চেক করা হয়। এর কাগজপত্র সেগুলো অনেক সময়ই ইমপোর্টারদের বা প্রস্তুতকারকদের সমস্যা থেকে আসে। সারা দেশেই সে সমস্যা বিরাজমান। কিন্তু কেবল সুপারমার্কেটকে হাইলাইট করাতে সুপারমার্কেট যে কাঁচাবাজার থেকে অনেক বেশি কোয়ালিটি বজায় রাখছে তা চাপা পড়ে যায়। ভ্যাটের বিষয়ে আমরা এনবিআর-এর সঙ্গে আলোচনা করেছি। ওনারা বলেছেন যে দেখছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত খুব একটা ফলপ্রসূ কিছু পাচ্ছি না।

বাংলানিউজ: দেশে সুপারশপের সম্ভাবনা কেমন?

সাব্বির হাসান নাসির: ব্যাপক সম্ভাবনা। এটা ১৮ বিলিয়ন ডলারের একটা ইন্ডাস্ট্রি। এ ইন্ডাস্ট্রিতে সুপার মার্কেট কন্ট্রিবিউট করে মাত্র দুই শতাংশ। যা শ্রীলঙ্কায় ৪৩ শতাংশ, ব্যাংকক বা ইন্দোনেশিয়ায় ৫০-৭০ শতাংশ। যে কোনো দেশ যখন একটু মধ্যম সারির দেশ হয় তখন দেখা যায় সেখানে অর্গানাইজড যে ট্রেড সেটার কন্ট্রিবিউশন বাড়ে, আমাদের এখানে তো বাড়ছে না। যদি বাড়তো তাহলে সরকার আরও বেশি কর পেতো, আমার হিসেবে পাঁচ হাজার কোটি টাকা পেত যদি পুরো ইন্ডাস্ট্রিটাকে একটা ভ্যাটের পলিসিতে নিয়ে আসতো। তখন এদের মনিটর করা সহজ হতো। শিক্ষিত বেকারের প্রচুর কর্মসংস্থান হতো, কৃষকের দাবি-দাওয়া আরও বেশি সহজে পূরণ করা সম্ভব হতো, পণ্যের প্রাইজ সরকার সহজেই কন্ট্রোল করতে পারতো। সিন্ডিকেটের প্রভাব থেকে মুক্ত হতো পারতো।

বাংলানিউজ: ফোনে ফোনে বাজার, এ সম্পর্কে জানতে চাই?

সাব্বির হাসান নাসির: করোনার সময় এই কনসেপ্ট জন্ম হয়েছে। অনেকেই আছে যে ই-কমার্সে অর্ডার করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না আবার করোনার কারণে স্টোরেও আসতে চান না। তাদের জন্য আমরা এই ব্যবস্থা রেখেছি। আপনি ফোন করতে পারেন, ভিডিও কল করতে পারেন। দেখেশুনে অর্ডার করলেন পাঠিয়ে দেওয়া হবে। যখন বাসায় ডেলিভারি দেব তখন টাকা দিয়ে দেবেন।

বাংলানিউজ: গ্রাহক কেন স্বপ্নে আসবেন?

সাব্বির হাসান নাসির: কারণ, এক ছাদের নিচে সবকিছু পাচ্ছেন। নিরাপদ একটা জিনিস পাচ্ছেন, ফেইক প্রডাক্ট না। আপনি যদি সমস্যা পান তাহলে রিপ্লেস করতে পারছেন। এটা অন্য জায়গায় পাচ্ছেন না। নারী ক্রেতাদের জন্য একটা নিরাপদ স্থান। কাঁদা নেই, হাইজেনিক জায়গায় শপিং করছেন।

বাংলানিউজ: পণ্যের মান কীভাবে মেইনটেইন করেন?

সাব্বির হাসান নাসির: বেশির ভাগ পণ্য ম্যান্যুফ্যাকচাররা কোয়ালিটি মেইনটেইন করে। আমাদের পক্ষে কারখানায় দেখা সম্ভব না। বিএসটিআই সার্টিফিকেট আছে কিনা, কিছু কিছু পণ্য আমরা আমাদের নিজস্ব ল্যাবরেটরিতে চেক করি। র‌্যানডম স্যাস্পলিং করা হয়। আর মাঝে মাঝে প্যাকেট খুলে দেখি। আর যেসব জায়গা থেকে শাকসবজি বা ফল কিনি সেখানে গ্লোবাল গ্যাপের স্ট্যান্ডার্ড মেইনটেন করি যাতে কীটনাশকের অবশেষ না থাকে। আর স্টোরে আসার ক্ষেত্রে কোনো কেমিক্যাল ইউজ না হয় বা হচ্ছে কিনা সেটা তদারকি করি।

বাংলানিউজ: পণ্যের সংখ্যা, কর্মী সংখ্যা কত?

সাব্বির হাসান নাসির: বড় স্টোরগুলোতে ৪০ হাজারের বেশি পণ্য রয়েছে। ছোটগুলোতে পাঁচ হাজারের বেশি পণ্য রয়েছে। ৩৪টি জেলায় ‘স্বপ্ন’ পৌঁছে গেছে। আমাদের নিজেদের স্টোর ৫৬টি এবং ফ্রাঞ্চাইজি ১৪৭টি মিলে মোট ২০৩টি শাখা। আমাদের তিন হাজারের বেশি কর্মী স্বপ্ন-তে কাজ করেন।
 
বাংলানিউজ: কর্মীদের বেনিফিট কী কী?সাব্বির হাসান নাসির: সবে তো পরিচালন মুনাফায় লাভে আসলাম। আমরা যে কর্মীদের অনেক বেশি স্যালারি বা সুবিধা দিতে পারছি তা না। কিন্তু একটা মডেল ডেভেলপ করছি যাতে যত বেশি পরিচালন মুনাফা বাড়তে থাকবে তার একটা অংশ তারা পাবে। এছাড়া গ্রুপ লাইন ইন্স্যুরেন্স, সেফটি মেজার, চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেই। যারা স্থায়ী কর্মী তাদের গ্রাচ্যুইটি রয়েছে। চিকিৎসার একটা অংশ প্রতিষ্ঠান দেখে। অফিস থেকে পিকআপ ড্রপের ব্যবস্থা আছে অনেকের।

বাংলানিউজ: স্বপ্নের অর্জনগুলো কী কী?

সাব্বির হাসান নাসির: বাংলাদেশের ১০টি ব্র্যান্ডের মধ্যে একটি। এ বছর অষ্টম ব্যান্ড হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এশিয়ার টপ মার্কেটিং কোম্পানি অব দ্য ইয়ার ২০২০ হিসেবে অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি আমরা। জার্মানির গ্লোবাল গ্যাপে সাউথ এশিয়ার একমাত্র মেম্বার স্বপ্ন। এগুলো বাংলাদেশের জন্য গর্ব।

সুপার মার্কেট ক্যাটাগরিতে ২০১৬ সাল থেকে টানা ছয় বছর বেষ্ট ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে ‘স্বপ্ন’। এছাড়া গত তিন বছর সমস্ত ক্যাটাগরির মধ্যে প্রথম ১০টি ব্র্যান্ডের একটি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছি।

 সুপারশপ স্বপ্ন ‘ষষ্ঠ এশিয়া মার্কেটিং এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’ শীর্ষক পুরস্কার জিতেছে, যা এশিয়ার ‘মার্কেটিং কোম্পানি অব দ্য ইয়ার ২০২০’ নামে স্বীকৃত। সৃজনশীল কাজে পৃথিবীর সবচেয়ে আলোচিত এক উৎসবের নাম ‘কানস লায়নস ইন্টারন্যাশনাল ফেস্টিভাল অব ক্রিয়েটিভিটি’। এ উৎসবে পাঁচটি ক্যাটাগরিতে পদক জিতে ‘স্বপ্ন’ ।

বাংলানিউজ: ভবিষ্যত পরিকল্পনা জানতে চাই?

সাব্বির হাসান নাসির: দেশের বিভিন্ন প্রান্তে স্বপ্নের বিভিন্ন ফরমেট নিয়ে ছড়িয়ে পড়ছি। এর সঙ্গে ই-কমার্স, হোম ডেলিভারি। মডার্ন ট্রেড যাতে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে সরকারের সহযোগিতায়, আমরা সেটায় আশাবাদী। সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি।

কৃষক এবং মধ্যবিত্ত ক্রেতার সঙ্গে যে সংযোগ সেতুটি সেটা আরও সুদৃঢ় হবে বলে বিশ্বাস। সব জেলা বা থানা পর্যায়ে আউটলেট থাকবে, এটা পরিকল্পনা। এটা ২০৩০ সালের মধ্যে সম্ভব বলে আশাবাদী।

নেপথ্যে যার অবদান, সেই সাব্বির হাসান নাসির সম্পর্কে
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট)- এ পড়াশুনা করেছেন সাব্বির হাসান নাসির। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসনে এমবিএ শেষ করেন। এরমধ্যে বাটা, টেট্রাপ্যাকসহ দেশে বিদেশে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করার পর আসবাব ব্র্যান্ড অটবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। অটবিকে গ্রাহকদের কাছে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যান। এরপর ২০১২ সালে স্বপ্নতে নির্বাহী পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। নিত্যনতুন ব্যবসায়িক ধরন বা মডেল দিয়ে তিনি স্বপ্নকে দেশের শীর্ষস্থানীয় সুপারশপ ব্র্যান্ডে পরিণত করেছেন। ২০০৮ সালে এসিআইয়ের অধীনে এসিআই লজিস্টিকস লিমিটেড যা সুপারশপ ‘স্বপ্ন’ নামে যাত্রা শুরু করে। ভালো সাড়া পাবার পর ২০০৯ সালে কয়েক মাসের ব্যবধানে শহরের বেশ কয়েকটি এলাকায় স্বপ্ন’র বেশ কয়েকটি শাখা চালু হয়। মধ্যবিত্ত মানুষের সুবিধার কথা লক্ষ্য করেই ‘স্বপ্ন’ এগোতে শুরু করে। ধীরে ধীরে ‘স্বপ্ন’ হয়ে ওঠে গ্রাহকের পছন্দের জায়গায়। দেশের নাম্বার ওয়ান চেইনশপ ‘স্বপ্ন’ গ্রাহকের ভালোলাগার জায়গাটা তৈরি করতে সক্ষম হয়।

বর্তমানে রাজধানীর পাশাপাশি দেশের ৩৪ জেলায় স্বপ্নের কার্যক্রম রয়েছে, ফ্রাঞ্চাইজি শাখাসহ সারাদেশে মোট আউটলেটের সংখ্যা এখন ২০৩। করোনা মহামারির মধ্যেও ‘স্বপ্ন’ ব্যবসার প্রসার ঘটিয়েছে। মহামারির মধ্যে গ্রাহকের নিরাপত্তায় নেওয়া নানা কার্যক্রম ও ঘরে পণ্য পৌঁছে দেওয়ার সেবা (হোম ডেলিভারি) স্বপ্নের গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়িয়েছে। স্বপ্ন’র ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ও কর্মীদের নিরলস পরিশ্রম ও গ্রাহকের ভালোবাসায় ‘স্বপ্ন’ অনন্য এক উচ্চতায় এসেছে। বর্তমানে ‘স্বপ্ন’- এর মর্ডান ট্রেড ইন্ডাস্ট্রির ৪৯ ভাগ শেয়ার। ব্র্যান্ড লেভেলে বাংলাদেশের গ্রাহকদের কাছে ‘স্বপ্ন’ একটি গ্রহণযোগ্য নাম এখন। ক্রেতাদের নিরাপদ ক্রয়ের ব্যবস্থা সবসময়ই করে আসছে ‘স্বপ্ন’। দৈনিক ৪৫ হাজারের বেশি গ্রাহককে সেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠানটি তিন হাজারের বেশি কর্মীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এগিয়ে চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২২
এমআইএইচ/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।