ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

লালফিতার দৌরাত্ম্যে আমি নিজেও কাবু: বাণিজ্যমন্ত্রী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২২
লালফিতার দৌরাত্ম্যে আমি নিজেও কাবু: বাণিজ্যমন্ত্রী বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি

রংপুর: লালফিতার দৌরাত্ম্য বড় বেশি হওয়ায় আমি নিজেও কিছুটা কাবু হয়ে গেছি বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা টিপু মুনশি। শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রংপুর আডডিআরএস এ জাতীয় উন্নয়নে অঙ্গীকার শিক্ষা, শোভন কর্মসংস্থান ও জেন্ডার সমতা বিষয়ক সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় রংপুর পিছিয়ে রয়েছে। বড় বড় ব্যবসায়ীরা এ অঞ্চলে বিনিয়োগ করতে চান না। তারা তাদের পরিবহন খরচসহ অনেক বিষয়ে হিসেব করেন। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় মালামাল পরিবহনে যতটা ব্যয় হয় তার চেয়ে বেশি ব্যয় হবে চট্টগ্রাম থেকে রংপুরে আনতে। এ অঞ্চলে শ্রমিকের সহজলভ্যতা থাকলেও নানা কারণে সেটা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। তবুও প্রধানমন্ত্রী কৃষি নির্ভর এ অঞ্চলের উন্নয়নে চেষ্টা করে চলেছেন।

দেশে উৎপাদিত আখ দিয়ে চিনিকল চালানো সম্ভব নয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এতে লোকসান হবে। শ্রমিকরা বেকার হয়ে আছেন। এই শ্রমিকদের প্রাধান্য দিয়ে বড় বড় ব্যবসায়ীদের দিয়ে লাভজনক কোনো প্রতিষ্ঠান তৈরির পরিকল্পনা নিতে হবে। আমার কাছে জার্মানির এক ব্যবসায়ী প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু লালফিতার দৌরাত্ম্য বড় বেশি। আমি নিজেও কিছুটা কাবু হয়ে গেছি।

নির্বাচনী ইশতেহার অনুয়ায়ী বর্তমান সরকার দেশের উন্নয়নে কাজ  করছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের আগে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের ইশতেহার থাকে। আওয়ামী লীগেরও তেমন ইশতেহার ছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সে অনুয়ায়ী কাজ করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে সেই লক্ষ্য কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তবে সারা বিশ্বের সামগ্রিক অথনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় খুব একটা খারাপ হয়নি।

মন্ত্রী বলেন, একটা সময়ে যাত্রী সংকটে ভুগছিল সৈয়দপুর বিমানবন্দর। অথচ এখন প্রতিনিয়ত ১৫-১৬টি ফ্লাইট ওঠানামা করছে। আগামী এক বছরের মধ্যে এটা ডাবল হবে বলে আশা করি। কারণ, মানুষ এখন আসতে শুরু করেছে। সৈয়দপুর থেকে নেপাল, ভুটান ও ভারতে যোগাযোগ স্থাপনে কাজ করা হচ্ছে।  
পঞ্চগড়ের চা বাগান ঘিরে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে ঠাকুরগাঁওয়ে বিমানবন্দর চালু ও পঞ্চগড়ে উন্নতমানের আবাসন ব্যবস্থা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

কুড়িগ্রামে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও চিলমারী বন্দর চালুর কথা জানিয়ে সিরাজগঞ্জ থেকে রংপুর সরাসরি ট্রেন যোগাযোগ, বন্ধ চিনিকলগুলোতে বিকল্প উৎপাদনের ব্যবস্থা গ্রহণ, ইপিজেড স্থাপন, অর্থনৈতিক জোন তৈরি ও তিস্তা নদী ঘিরে মহাপরিকল্পনা গ্রহণসহ এ অঞ্চলের উন্নয়নে নানা পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন মন্ত্রী।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) এর  গবেষণা পরিচাক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রংপুর সিটি কর্পোরেশেন মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ও  সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের আয়োজনে আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্য দেন, রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, সনাক, রংপুরের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা সদরুল আলম দুলু, সুজন রংপুর জেলার সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী, নারীনেত্রী মোশফেকা রাজ্জাক, আরডিআরএসএর হেড অব ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম আব্দুস সামাদ। সংলাপে মুক্ত আলোচনায় রংপুর অঞ্চলের উন্নয়নে কৃষিভিত্তিক আলাদা বাজেট বরাদ্দ, সরকারি স্কুল স্থাপন, শিক্ষিত বেকারদের ভাতা প্রদান, আইটি পার্ক স্থাপন, রেলপথ ও আকাশপথ সম্প্রসারণসহ বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেন অংশগ্রহণকারীরা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২২
এসআইএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।