ঢাকা, সোমবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ জুলাই ২০২৪, ২৩ জিলহজ ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

সাউথ বাংলা ব্যাংককে ১৫০ কোটি টাকা দিল বাংলাদেশ ব্যাংক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২২
সাউথ বাংলা ব্যাংককে ১৫০ কোটি টাকা দিল বাংলাদেশ ব্যাংক

ঢাকা: তারল্য সংকট মেটাতে বেসরকারি খাতের সাউথ এগ্রিকালচার অ্যান্ড ইকমার্স ব্যাংককে রেপোর মাধ্যমে ১৫০ কোটি টাকা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বেশ কিছুদিন ধরে ব্যাংকিং খাতে তারল্যের আধিক্য বিদ্যমান ছিল।

অতিরিক্ত এই তারল্য সামাল দিতে রীতিমত হিমসিম খেতে হয়েছে অনেক ব্যাংককে।

সরকারি ট্রেজারি বিল বন্ডে কস্ট অব ফান্ডের অনেক নিচে বিনিয়োগ করছে অনেক ব্যাংক।  

অন্যদিকে, ফেব্রুয়ারি মাসে সরকার ট্রেজারি বিল বন্ড থেকে ঋণ নিয়েছে অন্যান্য স্বাভাবিক মাসের চেয়ে অনেক কম।  

এই পরিস্থিতিতে ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে তারল্যের পরিমাণ অত্যধিক বেড়ে যাওয়ায় বিল-বন্ডের দাম আরেক দফা কমেছে।  

বর্ণিত অবস্থায় বাজার বিশ্লেষকরা ধারণা করেছিল, সরকারি ট্রেজারি বিল বন্ডের হার আরও কমে যাবে।

কিন্তু এক রকম হঠাৎ করেই পাল্টে গেছে পরিস্থিতি। গত কয়েকদিন ধরে তারল্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। তারল্যের সঙ্গে সরকারি বিল বন্ডের হার সব সময় বিপরীতমুখী আচরণ করে। তারল্যের পরিমাণ কমে যাওয়ায় পুনরায় সরকারি বিল বন্ডের হার বাড়বে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২২ ফেব্রুয়ারি অনেক ব্যাংককে নগদ জমা সংরক্ষণ হারের (সিআরআর) সমপরিমান তারল্য বজায় রাখতে অনেকটা বেগ পেতে হয়েছে। সাধারণত একটি ব্যাংককে দৈনিক ভিত্তিতে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ আর পাক্ষিক ভিত্তিতে ৪ শতাংশ সিআরআর সংরক্ষণ করতে হয়।  ফলে অনেক বড় প্রাইমারি ডিলার (পিডি) ব্যাংকও মঙ্গলবার অফিস সময়ের পরে তারল্য নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে ছিল।

বিশেষ করে, চতুর্থ প্রজন্মের সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কর্মাস ব্যাংক তারল্য নিয়ে গভীর সংকটের মধ্যে পড়েছে। ব্যাংকটি প্রায় ৭০০ কোটি টাকার নগদ জমা সংরক্ষণ (সিআরআর) হার ঘাটতি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে যায়। মূলধণের বিধিবদ্ধ সীমার কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রায় ১৫০ কোটি টাকার রেপো সহায়তা করেছে সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড ইকমার্স ব্যাংককে।  

তারপরও দিনশেষে ব্যাংকটি ৪৭১ কোটি টাকার সিআরআর স্বল্পতায় ভোগে। এই জন্য মূলত ব্যাংকের সঠিক ঋণ নীতিমালা ও বিনিয়োগ পোর্টফলিও সাজাতে না পারাকেকে দায়ী মনে করেছেন বিশ্লেষকরা।  

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর ড. সালেহউদ্দিন পরিকল্পনা করে বিনিয়োগ না করলে যে কোনো ব্যাংকের তারল্য সংকট তৈরি হতে পারে। তাই তারল্য থাকলেই সবজায়গায় বিনিয়োগ করার আগে চিন্তা করা উচিত।  

তিনি আরও বলেন, চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংকগুলো যে উদ্দেশ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল তার ধারে কাছে যেতে পারেনি। বরং বিভিন্ন সময় নানা অনিয়মে জড়িয়েছে।

এদিকে বিধি মোতাবেক সিআরআর সংরক্ষণ না করলে ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংককে ব্যাখ্যা তলব এবং জরিমানা আরোপ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এসএম আমজাদ হোসেনেরে পদত্যাগের পরে সাউথ বাংলার বর্তমান চেয়ারম্যান হয়েছেন থার্মেক্স গ্রুপের কর্ণধার আবদুল কাদির মোল্লা। নিজ এলাকায় কাদির মোল্লা একজন সমাজসেবক হিসেবে পরিচিত হলেও বেশ কয়েকটি সরকারি ব্যাংকে তার হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণ রয়েছে।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোসলেহ উদ্দিন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। বিস্তারিত জানতে তিনি তার সঙ্গে দেখা করতে বলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২২
এসই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।