ঢাকা, বুধবার, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ জুন ২০২৪, ১৮ জিলহজ ১৪৪৫

অর্থনীতি-ব্যবসা

ডিম-মুরগির বাজার স্থিতিশীলে ‘কোম্পানি সিন্ডিকেট’ ভাঙার আকুতি খামারিদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০১ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০২২
ডিম-মুরগির বাজার স্থিতিশীলে ‘কোম্পানি সিন্ডিকেট’ ভাঙার আকুতি খামারিদের

ঢাকা: ডিম-মুরগির দাম নির্ধারণে সিন্ডিকেট ভাঙার আকুতি জানিয়েছেন প্রান্তিক খামারিরা। তারা জানিয়েছেন বড় ১০-১২টি কোম্পানি মুরগীর বাচ্চা বিক্রি, ডিম উৎপাদন ও পোল্ট্রি  বিক্রয়ের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট করে ইচ্ছেমতো  দাম নির্ধারণ করছে।

ফলে বাজারে বাড়তি দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে সংকট করে গত ১৫ দিনে অতিরিক্ত মুনাফার নামে ৬১৮ কোটি টাকা দুর্নীতি করেছে।

শনিবার (২০ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে (ডিআরইউ) প্রান্তিক পর্যায়ের খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন নেতারা এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেছেন।

সংগঠনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, বর্তমানে দেশে প্রতিদিন সাড়ে ৪ কোটি ডিম উৎপাদন হয়। ১ কোটি ৩০ লাখ এখন খামারিরা উৎপাদন করে, বাকি সবই কোম্পানি উৎপাদন করে।

গত ১৫ দিনে ১৫ টির মতো কোম্পানি প্রতিদিন ২.৫ কোটি ডিমের প্রতি পিসে ৩ টাকা বাড়িয়ে ১১২ কোটি ৫০ লাখ টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করেছে। ২৭২ কোটি টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করেছে বাচ্চা উৎপাদনে, আর ২৩৪ কোটি মুনাফা পোল্ট্রি মাংস বিক্রির মাধ্যমে করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সুমন হাওলাদার বলেন, পোল্ট্রি শিল্পের মার্কেটে এসব কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে ৫০ শতাংশ ও বাকি ৫০ শতাংশ তারা নিজেরা যে রেট নির্ধারণ করে সারাদেশের খামারিদেরই  তা মেনে চলতে হয়।

বাজারে ডিমের দাম আড়ৎদাররা নির্ধারণ করে না বলে দাবি করে তিনি বলেন, মুরগির বাচ্চা বিক্রি, ডিম উৎপাদন ও পোল্ট্রি  বিক্রয়ের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ১০-১২ টি কোম্পানি সিন্ডিকেট করে ইচ্ছেমতো  দাম নির্ধারণ করছে।

তিনি আরও বলেন, পোল্ট্রি খাদ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত মিটবর্ন কোনো পরীক্ষা ছাড়াই কোম্পানি আমদানির সুযোগ পাওয়ায় খাদ্যের মান কমে গেছে। এর সঙ্গে জড়িত আছেন প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তা।

প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের উদাসীনতা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমদানি নয়, রপ্তানি করুন। তার জন্য নীতিমালা প্রণয়ন, সহজ শর্তে ট্রেনিং ও ট্রেড লাইসেন্স দিতে হবে।

প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী ও প্রাণী সম্পদ মহাপরিচালক বরাবর অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান তিনি।

সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খন্দকার বলেন, ডিমের বাচ্চার উৎপাদন খরচ ২৫ থেকে ২৮ টাকা। অথচ কখনো ৪০-৫০টাকা, গত এপ্রিলে ৭২ টাকা এমনকি গতবছর ৯৫ টাকাও বিক্রি করেছে। ফলে ৪০ শতাংশ খামার বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন মালিকরা।

খামারি পর্যায়ে সংকট উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারি প্রণোদনা খামারিরা পায় না, কোম্পানিগুলো হাতিয়ে নিয়েছে। প্রান্তিক পর্যায়ে খামারিদের কাছে প্রণোদনা পৌঁছায় না। ব্যাংক থেকে ঋণ দেওয়া হয় না, এমনকি এনজিওরাও ঋণ দেয় না।

তিনি অভিযোগ করেন, সিন্ডিকেট সদস্যরা ‘এ গ্রেড’ বাচ্চা নিজেরা নিয়ে, ‘বি গ্রেড’ বাচ্চা সাধারণ খামারিদের কাছে বিক্রি করে। ফলে তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় প্রান্তিক খামারিরা টিকতে পারে না।

পোল্ট্রি শতভাগ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসা উল্লেখ করে তিনি বলেন, খামারিদের প্রণোদনা সহায়তা দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা সরকারের দ্বায়িত্ব।   আমরা আমিষ ও প্রোটিনের জোগান দিচ্ছি এবং বেকারত্ব দূর করছি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহ-সভাপতি বাপ্পী কুমার দে, খুলনা বিভাগীয় সভাপতি বুরহান উদ্দিন, রংপুর বিভাগীয় সভাপতি সুজন মাহমুদ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, ২০ আগস্ট, ২০২২
এনবি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।