ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

নভেম্বরে শুরু হবে আইএফএসএসই এক্সপো-২০২২

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২২
নভেম্বরে শুরু হবে আইএফএসএসই এক্সপো-২০২২

ঢাকা: সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে অগ্নি নিরাপত্তা পণ্যের চাহিদা তৈরি করে বাংলাদেশের অর্থনীতির উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখবে এবং কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষ্য তিন দিনব্যাপী ইন্টারন্যাশনাল ফায়ার সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি এক্সপো-২০২২ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

আগামী ২৪-২৬ নভেম্বর রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কনফারেন্স সেন্টারে ‘অষ্টম ইন্টারন্যাশনাল ফায়ার সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি এক্সপো-২০২২ ( আইএফএসএস-২০২২)’ আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে ইলেক্ট্রনিক্স সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইসাব)।

 

এই এক্সপো অনুষ্ঠান আয়োজনের কো-পার্টনার হিসেবে থাকছে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর।

ইসাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই এক্সপো অনুষ্ঠানে বিশ্বের ২৬টি দেশের তিন শতাধিক বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান অংশ নিতে যাচ্ছে৷ 

ইতোমধ্যে ৯৫ শতাংশ স্টল বুকিং হয়ে গেছে। এছাড়াও চারটি সমসাময়িক বিষয়ে টেকনিক্যাল সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। সেমিনারে অংশগ্রহণকারীরা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে অংশ নিতে পারবেন এবং তাদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করা হবে। তবে এতে অংশ নিতে চাইলে ইভেন্টের নিজস্ব ওয়েবসাইট http://www.ifsse.com/-এ রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।

শনিবার (২৭ অগাস্ট) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর গুলশান ক্লাব লিমিটেডের সেমিনার রুমে এই এক্সপো-২০২২ এর লোগো উন্মোচন, প্রমো ভিডিও প্রকাশ সংক্রান্ত মিথ দ্য প্রেস অনুষ্ঠিত হয়।

মিথ দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেন, দেশের অধিকাংশ অগ্নি বিপর্যয়ের কারণ অনেক। কিন্তু বিচক্ষণতার অভাব ও উদাসীনতার কারণে ঘটে সব থেকে বেশি বিপর্যয়। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা নিরলস ভাবে জীবন বাজি রেখে জানমাল রক্ষা ও উদ্ধার করার চেষ্টা করেন। আপনারা দেখেছেন এরই মধ্যে আমাদের অনেক সদস্য হতাহত হয়েছেন। সম্প্রতি চট্টগ্রামে বিএস কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১৩ জন ফায়ার কর্মী নিহত হয়েছেন।

তিনি বলেন, দেশে যদি প্রত্যেকটি ভবনে যদি যথাযথভাবে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা থাকতো তাহলে এতো প্রাণহানি ঘটতো না। তবে আমাদের মধ্যে সচেতনাতার অভাব রয়েছে।

কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি ৯২ দিন হলো ফায়ার সার্ভিসে যোগদান করেছি। যোগদানের প্রথমেই নারায়ণগঞ্জে একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা পাই। সেখানে সিগারেটের আগুন থেকে বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। কারণ সেখানেই সচেতনার অভাব রয়েছে।

একটি পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি বলেন, গত ১ মাসে ৪৪০টি অগ্নি মোকাবিলা করেছে ফায়ার সার্ভিস। এদিকে প্রতিমাসে সারাদেশে ৮০০ মতো মহড়া করে থাকে ফায়ার সার্ভিস।

তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে সচেতনার বাড়ানো গেলে ও ফায়ার সার্ভিসের সব ইকুইপমেন্ট (যাই থাকুক) যদি সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পড়ি। তবে অনেক অগ্নিকাণ্ড কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।

ফায়ার ডিজি মো. মাইন উদ্দিন বলেন, আমাদের বাহিনীকে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজস্ব বিবেচনায় আধুনিক সরঞ্জাময়াদি দিয়েছেন। আমরা জনগণের মধ্যে সচেতনতার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া ও ফায়ার সেফটি প্ল্যানের অনুমোদন দিচ্ছি। ইসাবের এই মহতি উদ্যোগের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে প্রতিবছরের ন্যায় এই বছরও বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স থাকছি।

অনুষ্ঠানে ইসাবের সভাপতি জহির উদ্দিন বাবর সংগঠনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বলেন, দেশের ক্রমবর্ধমান উন্নয়ন ও গতিশীলতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ইসাবের সদস্যরা দেশের সার্বিক শিল্প-বাণিজ্যের ও আবাসন খাতের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ক্রমাগত কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, মানুষের মধ্যে আমরা যাতে সচেতনতা বাড়াতে পারি, সেলক্ষ্যেই আমরা কাজ করছি। আমরা দেখেছি, ইলেক্ট্রনিক পণ্যের ক্ষেত্রে অনেক নকল পণ্য মানুষ ব্যবহহার করে থাকে। এটাও কিন্তু অগ্নিকাণ্ডের একটি কারণ। যদি বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক পণ্যের মধ্যে নকল পণ্যগুলো ব্যবহার বন্ধ করা যায় তবে অগ্নি ঝুকি অনেকাংশেই কমে যাবে।

আন্তর্জাতিক এই এক্সপোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরে ইসাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকির উদ্দিন আহমেদ বলেন, এই এক্সপোতে তিনটি ক্যাটাগরিতে পণ্য প্রদর্শিত করা হবে, যার মধ্যে থাকছে ফায়ার সেফটি সলিউশন, সিকিউরিটি সলিউশন ও অটোমেশন।

তিনি বলেন, এই মেলায় ২৬টি দেশের তিন শতাধিক প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে।
এছাড়াও চারটি সমসাময়িক বিষয়ে টেকনিক্যাল সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। সেমিনারে অংশগ্রহণকারীরা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে অংশ নিতে পারবেন এবং তাদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করা হবে।

বিজিএমইর সহ-সভাপতি মো. শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, পোশাক খাত দেশের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত। এই খাতে প্রায়ই অনাকাঙ্ক্ষিত অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটে। আর এজন্য কারখানার মালিক ও শ্রমিকদের ক্ষতির পরিমাণ হয় অনেক।

বিগত বছর গুলোতে কারখানাগুলো যথাযথ কমপ্লায়েন্স মেনে চলায় এই ক্ষতি উল্লেখ যোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। এই আন্তর্জাতিক এক্সপোতে বিজিএমইর অংশগ্রহণ একটি গর্বের পদক্ষেপ।

তিনি আরো বলেন, কারখানায় ফায়ার সেভটি ও ভবনের সেভটি দুটোই খুব গুরুত্বপূর্ণ। কর্মস্থল ও শ্রমিকদের ভভয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও আমাদের দায়িত্ব। বিগত সময় ফায়ার সেফটি নিশ্চিতের বিষয়ে আমাদের অনেকই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। কিন্তু ইসাবের সঙ্গে আমরা যখন আলোচনা করে কাজ করি তখন থেকে আমরা সেই সেফটিগুলোর সমাধান করছি। আমাদের গার্মেন্টস শিল্পের পাশাপাশি অন্য শিল্পেও এই ফায়ার সেফটি সলিউশন গ্রহণ অপরিহার্য।

উল্লেখ্য, ইসাব বিগত বছরগুলোতে সাতটি আন্তর্জাতিক মানের ফায়ার সেফটি এবং সিকিউরিটি মেশিনারী প্রদর্শনীর আয়োজন করে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় আগামী ২৪-২৬ নভেম্বর এ এক্সপো-২০২২’ আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে।

ইসাবের সাধারণ সম্পাদক এম মাহমুদুর রশিদ বলেন, এই বছরের এক্সপোর সঙ্গে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে ‘ইসাব সেফটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’।  

তিনটি ক্যাটাগরিতে-বাণিজ্যিক ভবন, আবাসিক ভবন ও শিল্প কারখানায় যারা যথাযথ নিয়মনীতি মেনে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছেন তাদেরকে অ্যাওয়ার্ড দেওয়ার মাধ্যমে সম্মানিত করা হবে। অভিজ্ঞ জুরিবোর্ডের মাধ্যমে এই নিরীক্ষা করা হবে। সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকছেন ইসাবের প্রচার সম্পাদক নজরুল ইসলাম।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২২
এসজেএ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।