ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরছে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২২
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরছে

ঢাকা: পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল তালিকাভুক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগ সীমা (এক্সপোজার লিমিট) গণনার পদ্ধতি ক্রয়মূল্যে করার। বিনিয়োগকারীদের এমন দাবি মেনে নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশনা জারি করে।

  কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ইতিবাচক সিদ্ধান্তে বৈশ্বিক মন্দার মধ্যেও বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরছে। টানা মন্দার পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরছে।  

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির মিল থাকায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে আস্থার সংকট ছিল কেটেছে। এতে করে সাইট লাইনে থাকা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও বাজারে ফিরছেন।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী সম্মিলিত জাতীয় ঐক্যের সভাপতি আতাউল্লা নাইম বাংলানিউজকে বলেন, বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘ দিনের এক্সপোজারে যে সমস্যা ছিল সেটা সমাধান হয়েছে। বিদ্যুৎ নিয়ে একটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল সেটা কেটে গেছে। একই সঙ্গে ডলারের দাম কমছে। সব মিলিয়ে যে আতঙ্কগুলো ছিল সেটা কেটে গেছে সাইড লাইনে থাকা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী বাজারে ফিরেছেন। শুধু তাই নয় বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির মিল থাকায় বাজার ঘুরে দাড়িয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির কাছে আশ্বাস ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে।

বৈশ্বিক মন্দার কারণে ডলারের বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। শুধু তাই নয় বিদ্যুৎ কারণে নিত্যপণ্যের দামও হঠাৎ বেড়ে যায়। ডিম ডজন ১৫০ ও কাঁচা মরিচও ৩২০ টাকা হয়ে যায়। এতে করে পুঁজিবাজারে কিছুটা অস্থিরতা দেখা দেয়। তবে এখন সবকিছুই স্বাভাবিক হতে চলেছে এটা পজিটিভ সিগন্যাল। ডলারের দাম অনেক কমেছে আর সবচেয়ে বড় কথা এক্সপোজার লিমিট গণনার পদ্ধতি ক্রয়মূল্যে করায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা ফিরছে বলে জানালেন বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক।  

তিনি বলেন, বৈশ্বিক সংকটের কারণে লেনদেন ৫০০ কোটি টাকার ঘরে চলে আসে ঠিক এমন সময় বিএসইসি ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণটা ছিল সঠিক সিদ্ধান্ত। এতে করে বিনিয়োগকারীরাও সুরক্ষা পায়।

তিনি আরো বলেন, আইপিও আপাতত অনুমোদন না দেওয়ায়ও বিএসইসির ইতিবাচক সিদ্ধান্ত এতে করে বাজারে তারল্য আরো বাড়বে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

এদিকে বিদায়ী সপ্তাহে সাত মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে পুঁজিবাজারে। বিদায়ী সপ্তাহে পুঁজিবাজারে সব সূচক ও লেনদেন বেড়েছে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ছয় হাজার ৯৩৩ কোটি ৯৩ লাখ ৪২ হাজার ৩১২ টাকার লেনদেন হয়েছে। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল দুই হাজার ৮৩৮ কোটি ৭০ লাখ ৮৪ হাজার ১৩৮ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেনে চার হাজার ৯৫ কোটি ২২ লাখ ৫৮ হাজার ১৭৪ টাকা বেশি হয়েছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১১৩.৬৪ পয়েন্ট বা ১.৮২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩৫৫.০৭ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ২৪.২৩ পয়েন্ট বা ১.৭৭ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৪৭.৩০ পয়েন্ট বা ২.১২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৩৯০.৬১ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ২৬৭.৩৫ পয়েন্টে।

বিদায়ী সপ্তাহে বাজার মূলধনও বেড়েছে। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইতে বাজার মূলধন ছিল ৫ লাখ ০৮ হাজার ১০৯ কোটি ২২ লাখ ৯৮ হাজার ৪০৩ টাকায়। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেন শেষে বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৫ লাখ ১৩ হাজার ২৪০ কোটি ৩৭ লাখ ২১ হাজার ৯০৭ টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন পাঁচ হাজার ১৩১ কোটি ১৪ লাখ ২৩ হাজার ৫০৪ টাকা বেড়েছে।

অন্যদিকে অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে টাকার পরিমাণে লেনদেন হয়েছে ১৬৮ কোটি ৪৩ লাখ ৯৮ হাজার ১৮১ টাকার। আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৫৮ কোটি ৬৩ লাখ ৩৫ হাজার ৫৮২ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন ১০৯ কোটি ৮০ লাখ ৬২ হাজার ৫৯৯ টাকা বেড়েছে।

সপ্তাহটিতে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৭৩.০৪ পয়েন্ট বা ১.৪৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৬৪২.৯৬ পয়েন্টে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৭, ২০২২
এসএমএকে/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।