ঢাকা, মঙ্গলবার, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৪ রবিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ফেঞ্চুগঞ্জ পুরনো সার কারখানা নিলামের ওপর স্থগিতাদেশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২২
ফেঞ্চুগঞ্জ পুরনো সার কারখানা নিলামের ওপর স্থগিতাদেশ

সিলেট: তৃতীয় দফায় নিলামের দিন স্থগিত হলো সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের ন্যাচারাল গ্যাস ফার্টিলাইজার পুরাতন ফ্যাক্টরির নিলাম কার্যক্রম।

বুধবার (১৯ অক্টোবর) উচ্চ আদালতের নির্দেশে মের্সাস আল মামুন ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আব্দুর রহিমের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে নিলাম কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।


 
বিসিআইসির অধীনস্থ ফেঞ্চুগঞ্জ সার কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ওমর ফারুক বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, রিটকারীর পক্ষের আইনজীবী ফোনে স্থগিতাদেশের বিষয়টি আমাদের অবগত করার পর কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছি। দরপত্র বাক্স সিলগালা করা হয়েছে।
 
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফেঞ্চুগঞ্জ সার কারখানার একাধিক পদস্থ কর্মকতা-কর্মচারি বলেন, দরপত্রে অংশ নিতে মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) শেষ দিন পর্যন্ত ২২টি শিডিউল বিক্রি করা হয়। বুধবার সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত দরপত্র জমা পড়ে। বেলা আড়াইটায় বাক্স খোলে ৩টি দরপত্র পাওয়া যায়। তন্মধ্যে ঢাকার প্রতিষ্ঠান মেসার্স এমএম বিল্ডার্স লিমিটেড ভ্যাট-ট্যাক্স ব্যাতিরেকে ২৭৫ কোটি টাকা সর্বোচ্চ দরদাতা নির্বাচিত হয়। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স মোস্তফা গ্রুপ ১৪৫ কোটি এবং তৃতীয় রফিক অ্যান্ড ব্রাদার্স ১৩৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তবে উচ্চ আদালতের আদেশ জানতে পেরে সব কার্যক্রম স্থগিত করে দেওয়া হয়।
 
এর আগে, ৮ সেপ্টেম্বর ফেঞ্চুগঞ্জ পুরাতন সার কারখানার ব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক) মো. মাহবুবুর রহমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পক্ষে বিলুপ্ত ন্যাচারাল গ্যাস ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি (এনজিএফএফএল) বিভিন্ন ধরনের স্ক্র্যাপ মালামাল বিক্রির দরপত্র আহ্বান করেন।

মঙ্গলবার শিডিউল সংগ্রহের শেষ দিন এবং আজ সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত দরপত্র জমা শেষে বেলা আড়াইটায় দরপত্র উন্মোক্ত করা হয়। এতে অংশগ্রহণকারী ৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মেসার্স এমএম লিমিটেড ভ্যাট-ট্যাক্স ব্যাতিরেকে ২৭৫ কোটি টাকা সর্বোচ্চ দরদাতা নির্বাচিত হন।
 
এর আগে, ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর প্রথমবার নিলামে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের ন্যাচারাল গ্যাস ফার্টিলাইজার ফ্যাক্টরি (এনজিএফএফএল) বিক্রির জন্য দরপত্র আহ্বান করে কর্তৃপক্ষ। সে সময় মেসার্স আতাউল্লাহ গ্রুপ সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ১০৩ কোটি ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে কারখানাটি স্ক্রেপ হিসাবে কিনে নেন। কিন্তু নিয়মমাফিক টাকা জমা না করায় এটি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। আদালতের বেঁধে দেওয়া সময়েও টাকা জমা দিতে না পারেনি দরদাতা প্রতিষ্ঠানটি। অবশেষে পুনরায় নিলামের সিদ্ধান্ত নেয় শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বিসিআইসি।  
 
২০২১ সালের ২৫ মে দরপত্র আহ্বান করে কর্তৃপক্ষ। এরপর ১১ আগস্ট ১৪টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিলেও সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিলামে মেসার্স সাইদুর রহমান ২১১ কোটি ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা দিয়ে পুরাতন সার কারখানাটি স্ক্রেপ হিসাবে কিনে নেন। কিন্তু ওই প্রতিষ্ঠানও টাকা সময়মতো দিতে না পারায় সেটিও বাতিল করে নতুন করার পর ফের টেন্ডার আহ্বান করা হয়। কিন্তু গত টেন্ডারে ১৩১ কোটি টাকা দরদাতা মের্সাস আল মামুন ট্রেডার্স আদালতের দ্বারস্থ হন। তার করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত টেন্ডারের ওপর স্থগিতাদেশ।
 
এ বিষয়ে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাছিত টুটুল বলেন, আদালত কর্তৃক নির্দেশনা-কেনো তাকে ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হবে না। এর পরিপ্রেক্ষিতে টেন্ডার বক্স সিলগালা করার কথা। দুপুর ২টার দিকে কর্তৃপক্ষকে আদালতের আদেশের বিষয়টি জানানোর পরও তারা টেন্ডার বক্স খোলে দরপত্র মূল্যায়ন করে আদালত অবমাননা করেছেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০২২
এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।