ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ত্রয়োদশ আন্তঃস্কুল বাংলা অলিম্পিয়াড

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২৪
অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ত্রয়োদশ আন্তঃস্কুল বাংলা অলিম্পিয়াড সংবাদ সম্মেলনে ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল বাংলাদেশের প্রিন্সিপাল রোকসানা জারিনসহ অন্যরা। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: প্রতিবছরের মতো এবারও ইংরেজি মাধ্যম ও ইংরেজি ভার্সন স্কুলের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হচ্ছে আন্তঃস্কুল বাংলা অলিম্পিয়াড। সারা দেশের শতাধিক স্কুলের দেড় সহস্রাধিক শিক্ষার্থী এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে।

শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে ত্রয়োদশ আন্তঃস্কুল বাংলা অলিম্পিয়াড।

মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে বাংলা অলিম্পিয়াড উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় আয়োজক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল।

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল বাংলাদেশের প্রিন্সিপাল রোকসানা জারিন, ভাইস প্রিন্সিপাল গাহরিমান আল্লামিরাদভ, বাংলা অলিম্পিয়াডের সমন্বয়ক কামরুল আহসান, আবুল কাশেম, মো. মিজানুর রহমান প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে আয়োজক সংস্থা জানায়, ভাষার মাসে দেশের ইংরেজি মাধ্যম এবং ইংরেজি ভার্সন স্কুলগুলোর অংশগ্রহণে বাংলা ভাষা বিষয়ক সর্ববৃহৎ প্রতিযোগিতা রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল বাংলাদেশ আয়োজিত আন্তঃস্কুল বাংলা অলিম্পিয়াড। বার্ষিক এ প্রতিযোগিতার ধারাবাহিকতা এরই মধ্যে সাফল্যের সঙ্গে এক যুগ অতিক্রম করেছে।

তারা আরও জানায়, দিনব্যাপী এ আয়েজনে প্রতিযোগিরা এবার রচনা লেখা, আবৃত্তি, নাচ, গান, অঙ্কন, কুইজ এবং উপস্থিত বক্তৃতা বিষয়ে বয়সভেদে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে। এ বছরও অন্যান্য বারের মতো এ প্রতিযোগিতার উপদেষ্টা ও বিচারক হিসেবে রয়েছেন দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ-লেখক-শিল্পীরা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলা অলিম্পিয়াডের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। এবার বাংলা অলিম্পিয়াডের উপদেষ্টা হিসেবে আছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর, বাংলা অলিম্পিয়াডের উপদেষ্টা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য কবি ড. মুহাম্মদ সামাদ, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. হাকিম আরিফ, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক আনজীর লিটন।

প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আবৃত্তিশিল্পী ডালিয়া আহমেদ, আবৃত্তিশিল্পী শিমুল মুস্তাফা, আবৃত্তিশিল্পী মাহিদুল ইসলাম, আবৃত্তিশিল্পী রূপা চক্রবর্তী, আবৃত্তিশিল্পী রেজিনা ওয়ালী লীনা, বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী লায়লা হাসান, বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী চন্দনা মজুমদার, কিরণচন্দ্র রায়, প্রিয়াঙ্কা গোপ, সরকারি সঙ্গীত কলেজের শিক্ষক কমল খালিদ, ইউনুসুর রহমান, নৃত্যশিল্পী সাজু আহমেদ, সামিনা হোসেন প্রিমা প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গত ১ জানুয়ারি থেকে বাংলা অলিম্পিয়াডের অনলাইন রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে, যা আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্কুলগুলো অনলাইনে Banglaolympiad.org ওয়েবসাইট থেকে তাদের শিক্ষার্থীদের জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে। রচনা, আবৃত্তি, সঙ্গীত, চিত্রাঙ্কন, তাৎক্ষণিক বক্তৃতা, নৃত্য এবং বাংলা কুইজ- এ সাতটি বিভাগে কয়েকটি ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। গতবার থেকে এ প্রতিযোগিতায় যুক্ত হয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট।

ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল বাংলাদেশের প্রিন্সিপাল রোকসানা জারিন বলেন, প্রতি বছরের ধারাবাহিকতায় এ বছরও বাংলা ভাষা চর্চার এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে পেরে ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুল বাংলাদেশ আনন্দিত ও গর্বিত। সফলভাবে একযুগ ধরে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। আমরা মনে করি, এক যুগের বেশি সময় ধরে এত বড় একটা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আমাদের স্কুল বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিচর্চায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এরই মধ্যে বাংলা অলিম্পিয়াড ইংরেজি স্কুলগুলোর একটি জাতীয় প্রতিযোগিতায় পরিণত হয়েছে। শুধু জাতীয় নয়, আমি বলবো বাংলা অলিম্পিয়াড ছড়িয়ে পড়ছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও। প্রতি বছরই দেশি শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন স্কুলের বিদেশি শিক্ষার্থীরাও বাংলা অলিম্পিয়াডে যোগ দিচ্ছে। এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দেশের ইংরেজি মাধ্যম ও ইংরেজি ভার্সন স্কুলগুলো ভাষার মাসে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। ভাষার মাসে বাংলা ভাষা নিয়ে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের অনুষ্ঠানমালায় এটিই দেশের সবচেয়ে বড় আয়োজন। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিচর্চায় ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীরাও এখন অনেক অগ্রসর, বাংলা অলিম্পিয়াড এটাই প্রমাণ করে।

বাংলা অলিম্পিয়াডের সমন্বয়ক কামরুল আহসান বলেন, ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিতে বাংলা অলিম্পিয়াড দেশের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অনুষ্ঠান। গত এক যুগের বেশি সময় ধরে আয়োজিত বাংলা অলিম্পিয়াড দেশের ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের জীবন ও দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দিয়েছে। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি তাদের যে ভীতি ও বিতৃষ্ণা ছিল, সেটা বাংলা অলিম্পিয়াডের মাধ্যমে অনেকটাই কেটে গেছে। এখন দেশের বড় বড় স্কুলগুলো সারা বছর আমাদের বাংলা অলিম্পিয়াডের জন্য অপেক্ষায় থাকে। বাংলা অলিম্পিয়াডে পুরস্কৃত হওয়া ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোতে বিরাট সম্মানের একটি অর্জন বলে বিবেচিত হচ্ছে। বাংলা অলিম্পিয়াডে পুরস্কৃত শিক্ষার্থীরা ব্যক্তিজীবনেও বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে নিজেদের সংযুক্তি বাড়াচ্ছে। অনেকে গান, আবৃত্তিসহ বাংলা সংস্কৃতির নানা অনুষঙ্গে অত্যন্ত দক্ষতার স্বাক্ষর রাখছে। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে অনেকেই বড় হয়ে বড় লেখক হবেন, বড় শিল্পী হবেন এবং দেশ-বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবেন। অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের শিল্প অঙ্গনে বাংলা অলিম্পিয়াড উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে আমরা বিশ্বাসী।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২৪
এসসি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।