ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থগিত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার আহ্বান

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৬ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২৪
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থগিত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার আহ্বান

ঢাকা: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থগিত ব্যাংক একাউন্ট পুনরায় চালু করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি।

রোববার (৩১ মার্চ) সমিতির চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেন স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে এ আহবান জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, সম্প্রতি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ১৫ শতাংশ হারে আয়কর প্রদান সংক্রান্ত রিট আপিলের নিষ্পত্তি করার ব্যাপারে আদালত কর্তৃক রায় দেওয়া হয়েছে। আদালতের ‘আপিল বিভাগের পর্যবেক্ষণের বিশদ বিবরণ আদেশের পূর্ণাঙ্গ পাঠ’ এখনো প্রকাশিত হয়নি। তথাপি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর প্রদানের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে এবং দুঃখজনকভাবে বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট স্থগিত করা হয়েছে।  

আদালত কর্তৃক পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ এবং তদানুযায়ী আয়কর প্রদান সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের কোনোরূপ সুযোগ না দিয়ে রোজা চলাকালীন মুসলমানদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতরের পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট স্থগিত করা একটি অমানবিক পদক্ষেপ হিসেবে প্রতীয়মান। কেননা, এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশাল সংখ্যক শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিবারের বেতন, বোনাস এবং অন্যান্য প্রদেয় বিল পরিশোধ করা সম্ভব হবে না।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের প্রতিষ্ঠাতাদের সংগঠন বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়ে সর্বদা সচেষ্ট। এক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক প্রণীত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন এবং আয়কর আইন অনুযায়ী আয়কর প্রদান সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতের পূর্ণাঙ্গ দিক নির্দেশনা প্রকাশের পূর্বে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট স্থগিত করায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় খাতে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ কোনোরূপ সরকারি অনুদান ব্যতিরেকে কেবলমাত্র শিক্ষার্থীদের টিউশন ফিসের ওপর নির্ভরশীল। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, শিক্ষা সামগ্রী ও বিজ্ঞানাগারের যন্ত্রপাতি ক্রয়, জমি ক্রয় এবং ক্যাম্পাস নির্মাণ সামগ্রীর ওপর বড় অংকের সরকারি ভ্যাট ও কর প্রদান করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সমস্ত ব্যয় মেটানোর পর উদ্বৃত্ত অর্থ (যদি থাকে) সঞ্চয়ের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় সমূহ শিক্ষার মানোন্নয়ন, গবেষণা কার্যক্রম, নিজস্ব ক্যাম্পাস নির্মাণ, বর্ধিত করণ, হোস্টেল নির্মাণ, পরিবহণ ব্যবস্থাপনা ও অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি কাজ সম্পাদনের উদ্যোগ নেয়। এমনিতেই করোনা পরবর্তী সময়ে বেশিরভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা ব্যয় মেটানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে এবং নতুন প্রজন্মের অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এখন অবধি ট্রাস্টি সদস্যদের ভর্তুকি প্রদান সাপেক্ষে পরিচালিত হয়। তার ওপর করারোপের ফলে পক্ষান্তরে অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকা তৈরি হয়েছে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন- ২০১০ এর ৪৪ (৭) ধারা অনুযায়ী ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ তহবিলের অর্থ উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় ব্যয় ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে ব্যয় করা যাইবে না’ মর্মে উল্লেখ রয়েছে। এক্ষেত্রে আইন দ্বারা স্বীকৃত অলাভজনক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ তহবিল থেকে কোনোরূপ অর্থ যেমন উদ্যোক্তা-প্রতিষ্ঠাতাগণ গ্রহণ করতে পারেন না, তেমনি আয়কর হিসেবে প্রদান করা বা অন্যভাবে ব্যয় করার বিষয়টিও বিশ্ববিদ্যালয় আইনের সরাসরি লঙ্ঘন হিসেবেই প্রতীয়মান। এক্ষেত্রে উভয় সংকটে পতিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের যথাযথ করণীয় নির্ধারণে কর্তৃপক্ষের কার্যকরী সহায়তা তথা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন এবং কর আইনের সাংঘর্ষিক বিভিন্ন ধারাসমূহ অংশীজনের সাথে আলোচনা করতঃ পরিবর্তন করা একান্ত জরুরি বলে মনে করি।

বিবৃতিতে আইনগত জটিলতা নিরসনের পূর্বে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কর আদায় না করা এবং ঈদের পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট স্থগিত করার মতো চূড়ান্ত পদক্ষেপ প্রত্যাহার ও অনতি বিলম্বে ভুক্তভোগী সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থগিতকৃত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পুনরায় চালুর নির্দেশনা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৫ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২৪
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।