ঢাকা: শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তিতে সংসদ সদস্যদের ২ শতাংশ কোটা নির্ধারণ করে নীতিমালা সংশোধন করা হবে। আগামী সোমবার এ নীতিমালা সংশোধন করে আদেশ জারি করা হবে।
রোববার সচিবালয়ে শিক্ষা সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী সাংবাদিকদের এ তথ্য দেন। তিনি বলেন, “শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। ”
এর আগে ‘নিম্ন মাধ্যমিক/মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে শিক্ষার্থী ভর্তিতে অনুসরণীয় নীতিমালা’ পর্যালোচনা সংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভা শেষে শিক্ষা সচিব সাংবাদিকদের বলেন, “শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী সোমবার নীতিমালা সংশোধন করে সংসদ সদস্যদের ২ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করা হবে। তবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে। ”
সচিব জানান, প্রবাসীদের সন্তানদের জন্য ২ শতাংশ এবং শিক্ষা বোর্ড এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) কর্মকর্তাদের সন্তানদের জন্য এক শতাংশ কোটা সংরক্ষণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
সচিব বলেন, “মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য পাঁচ শতাংশ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের ভর্তির ক্ষেত্রে (শুধুমাত্র ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকা) ন্যূনতম যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে দুই শতাংশ কোটা আগে থেকেই রয়েছে। ’
শিক্ষা সচিব জানান, এবারো প্রথম শ্রেণীতে লটারির মাধ্যমে ভর্তি করা হবে শিক্ষার্থীদের। অন্য শ্রেণিগুলোতে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি হবে হবে। আর নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি হবে জেএসসির ফলের ভিত্তিতে।
এবার বেসরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি ফরমের দাম বাড়ানো হচ্ছে উল্লেখ করে শিক্ষা সচিব বলেন, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবার আগের থেকে ‘কিছুটা’ দাম বাড়ানো হচ্ছে। ” দেড়শ থেকে দুইশ টাকার মধ্যে ভর্তি ফরমের দাম নির্ধারণ করা হবে উল্লেখ করেন শিক্ষা সচিব।
তবে আংশিক এমপিওভুক্ত এবং ঢাকার বাইরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য ভর্তি ফরমের দাম বাড়ানো হবে না বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, গত বছর ভর্তি ফরমের দাম নেওয়া হয়েছিল একশ টাকা। এছাড়া আগের মতোই বাংলা মাধ্যমের বিদ্যালয়ে ভর্তি ফি আট হাজার এবং ইংরেজি মাধ্যমের বিদ্যালয়গুলোতে ১০ হাজার টাকা ফি নির্ধারণ করা হবে।
ভর্তির সময় নেওয়া অতিরিক্ত অর্থ ফেরত দিতে আরো ১৫ দিন সময় বাড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে শিক্ষা সচিব বলেন, “ভর্তিতে নেওয়া অতিরিক্ত অর্থ ফেরত দিতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তাদের আরো ১৫ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। ”
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষা সচিব বলেন, “মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ পালন না করলে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ”
উল্লেখ্য, ভিকারুন্নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, আইডিয়াল স্কুল ও মণিপুর স্কুল কর্তপক্ষ কয়েক দফা নোটিশ দেওয়ার পরেও শিক্ষার্থী ভর্তিতে অতিরিক্ত টাকা ফেরত দেয়নি। শিক্ষার্থী ভর্তিতে মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ ৩ হাজার ৫৪ জন ছাত্র-ছাত্রীর কাছ থেকে ৫ কোটি ২৩ লক্ষ ৭৬ হাজার ১০০ টাকা, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ দুই হাজার ৬৬৭ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৩ কোটি ৩৯ লক্ষ ৩৪ হাজার ৯০০ টাকা এবং ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ১ হাজার ৬২৭ ছাত্রীর কাছ থেকে ৬৮ লাখ ১৭ হাজার ১০০ টাকা অতিরিক্ত ফি আদায় করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১২
এসএমএ/সম্পাদনা: বেনু সূত্রধর, নিউজরুম এডিটর; নূরনবী সিদ্দিক সুইন, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর