ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

জাবিতে নানা আয়োজনে সেলিম আল দীনের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হচ্ছে

ওয়ালিউল্লাহ, জাবি প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৩
জাবিতে নানা আয়োজনে সেলিম আল দীনের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হচ্ছে

 

জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের(জাবির) নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও রবীন্দ্রোত্তর শ্রেষ্ঠ নাট্যকার নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে।

দিনটি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ নাট্যাচার্যকে স্মরণ করছে।



সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্বদ্যালয়ের পুরাতন কলা ভবনের সামনে থেকে স্মরণ মিছিল বের হয়। মিছিলটির উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেন। স্মরণ মিছিলটি সেলিম আল দীনের সমাধিস্থলে গিয়ে শেষ হয়।

সেখানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সেলিম আল দীনের স্ত্রী বেগমজাদী মেহেরুন্নেসা, বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ, ঢাকা থিয়েটার, গ্রাম থিয়েটার, সেলিম আল দীন ফাউন্ডেশন, নাটক ও নাট্যমঞ্চ, স্বপ্নদল, জাবির ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র, জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট, জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার, আরশিনগর, দেশবাঙলা থিয়েটার, তালুকনগর থিয়েটার, কলমা থিয়েটার।

পুষ্পস্তবক অর্পণের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে যে ‘সংস্কৃতির রাজধানী’ বলা হয়, এ ক্ষেত্রে সেলিম আল দীনের ভূমিকা ছিল। জাহাঙ্গীরনগরকে সংস্কৃতির রাজধানী বানানোর জন্য সেলিম আল দীন একনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন। ”

তিনি বলেন, “সেলিম আল দীনকে ভুলে যাওয়া সম্ভব নয়। কারণ, তার সৃষ্টিকর্মের মধ্যেই তিনি আমাদের মধ্যে বেঁচে থাকবেন। আমরা তাকে নিয়ে গর্ব করি। ”

পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সকাল ১১টায় পুরাতন কলাভবন সংলগ্ন মৃৎমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান। স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে বেগমজাদী মেহেরুন্নেসা বলেন, “সেলিম আল দীন আরও ৭/৮ বছর বাঁচতে চেয়েছিলেন এবং এই সময়ে তিনি তার জীবনের শ্রেষ্ঠ নাটকগুলো লিখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিধাতা তাকে সে সুযোগ দিলেন না। ”

তিনি এসময় নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থীদের বছরে একদিন হলেও সেলিম আল দীনের নাটক পড়ার জন্য বলেন।

স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে নাট্যব্যক্তিত্ব ও নাটক পরিচালক নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু বলেন, “আমরা সেলিম আল দীনকে স্মরণ করবো তার কর্মচর্চার মাধ্যমে। তাই, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে আমার দাবি হলো পাঠ্যসূচিতে সেলিম আল দীনের লেখা নাটকগুলো স্থান দেওয়া হোক, যাতে করে আমাদের ছেলে-মেয়েরা সেলিম আল দীন সম্পর্কে জানতে পারে। ”

তিনি বলেন, “সেলিম আল দীন চেয়েছিলেন, বিশ্ব সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গড়ে তুলতে। আমরা তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে অনেকদূর এগিয়ে ছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার বাস্তবায়ন হয়নি। সরকার যদি এ ব্যাপারে সহযোগিতা করেন, তাহলে আমি আমার বাকি জীবন সেলিম আল দীনের স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিয়োজিত করবো। ”

অনুষ্ঠানে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আফসার আহমেদ বলেন, “সেলিম আল দীনের এমন কোনো কর্ম নেই, যা এই বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করে না। তার লেখা ‘নিমজ্জন’ নাটক পড়লেই তা বোঝা যায়। এই নাটকে শিশুহত্যা, ভ্রুণহত্যা থেকে শুরু করে মানুষ হত্যার সবকিছুই বর্ণনা রয়েছে। ”

পরে বেলা সাড়ে ১১টায় নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয় ‘শিকড়ের গান’।

পৌনে ১২টায় স্বপ্নদলের পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়- সেলিম আল দীনের মুক্তিযুদ্ধের কথা ‘ফেস্টুনে লেখা স্মৃতি’। দুপুর ১২টায় টাঙ্গাইলের ‘মহাদেব সঙযাত্রা’র ‘সঙযাত্রা’, বেলা আড়াইটা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত মানিকগঞ্জের ‘শ্রীগৌরাঙ্গ কৃষ্ণলীলা সম্প্রদায়’র ‘কৃষ্ণলীলা’, বিকেল সাড়ে ৪টায় সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ১৪ জানুয়ারি নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় মারা যান।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৩
ওয়ালিউল্লাহ, সম্পাদনা: আশিস বিশ্বাস, অ্যাসিস্ট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।