ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ইবিতে ছাত্রলীগের সঙ্গে ছাত্রদল-শিবিরের সংঘর্ষ, আহত ২৩

ইবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৩
ইবিতে ছাত্রলীগের সঙ্গে ছাত্রদল-শিবিরের সংঘর্ষ, আহত ২৩ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) বিজয় দিবসে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের সঙ্গে ছাত্রদল ও শিবিরের সংঘর্ষ হয়েছে।

সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্য মুক্তবাংলায় ফুল দেওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে।



সংঘর্ষে তিন শিক্ষকসহ উভয়পক্ষের কমপক্ষে ২৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মুক্তবাংলায় ফুল দেওয়ার পর ফুল দিতে আসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

এ সময় তারা জিয়াউর রহমান ও তারেক রহমানকে নিয়ে কটুক্তি করে স্লোগান দেয়।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থানরত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রী ও ছাত্রলীগকে কটুক্তি করে স্লোগান দিতে থাকে। এতে উভয় দল ক্ষিপ্ত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন ও সহকারী প্রক্টর আলতাফ হোসেন পুলিশের সহায়তায় পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

পরে ছাত্রলীগ সংগঠিত হয়ে ছাত্রদলকে আবারো ধাওয়া করলে দুইপক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ হয়। একপর্যায়ে ছাত্রদল পিছু হটে দৌড়ে শিবিরের টেন্টের দিকে যায়।

এ সময় দলীয় টেন্টে অবস্থানরত শিবির নেতাকর্মীরা স্লোগান দিয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ধাওয়া দিয়ে  ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়।

ছাত্রদল-শিবিরের ধাওয়া খেয়ে ইবি ছাত্রলীগের আহ্বায়ক শামীম হোসেন খান, যুগ্ম আহ্বায়ক আবুজার গিফারী গাফফারসহ প্রায় ২০ জন নেতাকর্মী প্রশাসন ভবনে আশ্রয় নেয়।

সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. ইকবাল হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক ড. আক্তারুজ্জামান, ড. আবুল কালাম আজাদসহ উভয় দলের কমপক্ষে ২০ নেতাকর্মী আহত হয়।

আহতদের মধ্যে ছাত্রলীগ নেতা শিমুল, সাইফুল, মিজু, হালিম, সোহেল, রানু, জনি এবং ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আনিস, সোহাগ, সাংগঠনিক সম্পাদক খায়ের, দপ্তর সম্পাদক সাহেদ, প্রচার সম্পাদক রিপনের নাম জানা গেছে।

এদের মধ্যে ছাত্রলীগের হালিম ও ছাত্রদলের আখিরুলকে গুরুতর অবস্থায় কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, সংঘর্ষের পরে শিবির কর্মীরা মিছিল করে ক্যাম্পাস থেকে চলে যায় এবং ছাত্রদল মিছিল করতে করতে দলীয় টেন্টে অবস্থান নেয়। এ সময় তারা একটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় এবং রাম দা, চাপাতি, হাতুড়িসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়।

পরে জিয়া পরিষদের শিক্ষকরা এসে তাদেরকে শান্ত করে আবারো মুক্তবাংলায় ফুল দিতে যায়। ফুল দেওয়া শেষে ছাত্রদল ক্যাম্পাস ত্যাগ করলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তায় প্রশাসন ভবনে আটকে থাকা ছাত্রলীগও ক্যাম্পাস ত্যাগ করে।

ঘটনার সময় কুষ্টিয়া সার্কেল পুলিশ সুপার লিমন রায় উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা সব ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

এ বিষয়ে ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা প্রথমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার যথাসাধ্য চেষ্টা করেও উপরের নির্দেশ না থাকায় ব্যবস্থা নিতে পারিনি। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৩
সম্পাদনা: সোহেলুর রহমান, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।