ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ঢাবির ভর্তি কার্যক্রমে সমন্বয়হীনতা

সাখাওয়াত আমিন, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৩
ঢাবির ভর্তি কার্যক্রমে সমন্বয়হীনতা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ভর্তি অফিস ও ডিন অফিসের মধ্যে চরম সমন্বয়হীনতা বিরাজ করছে। কেন্দ্রীয় ভর্তি অফিসের অভ্যন্তরীণ সমন্বয়হীনতা আরও প্রকট।



এর ফলে সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে  স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা।

অনলাইন ভর্তি প্রক্রিয়াতে তথ্য ও প্রক্রিয়াগত জটিলতায় দুর্ভোগ  সম্মুখীন হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এসব বিষয়ে সমাধানের জন্য ডিন অফিস শিক্ষাথীদের কেন্দ্রীয় ভর্তি অফিসে পাঠাচ্ছেন, আবার কেন্দ্রীয় ভর্তি অফিস থেকে তাদের ডিন অফিসকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।

এছাড়া ডিন অফিস যেসব সমস্যার কথা বলছে, কেন্দ্রীয় ভর্তি অফিস বলছে ভিন্ন সমস্যার কথা। ফলে মূল সমস্যার বিষয়টি বুঝতেও বিভ্রান্তিতে পড়ছেন শিক্ষার্থীরা।

রোববার রাতে বিজ্ঞান অনুষদের অধীন ‘ক’ ইউনিটের অন্তর্ভুক্ত বিভাগ/ইনিস্টিটিউট সমূহে ভর্তির জন্য মেধা ও  পছন্দক্রম অনুযায়ী ১ হাজার ৭৭২ জন শিক্ষার্থীকে বিভাগ বণ্টন করে সাক্ষাৎকার গ্রহণের জন্য
নির্বাচিত করা হয়। বৃহ্স্পতি ও শুক্রবার এ সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
 
ক ইউনিটে ৫৩৪ তম মেধাস্থান অর্জন করেছেন শারমিন জাহান নামের এক শিক্ষার্থী। ভর্তি পরীক্ষায় তার রোল ছিলো ৩৭০৭৮২। নিয়ম অনুযায়ী শারমিন জাহান প্রথম সারির বিভাগে মনোনীত হওয়ার কথা।

কিন্তু তাকে কোনো বিভাগেই মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ইউসুফ আলী মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগ করেন ওই শিক্ষার্থী।

তাকে ডিন অফিসে সংশ্লিষ্ট একজনের নাম উল্লেখ করে তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন অধ্যাপক ইউসুফ আলী মোল্লা।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করলে তাকে জানানো হয় , এটা কোনো সমস্যা না, ২১৪ নম্বর কক্ষে (কেন্দ্রীয় ভর্তি অফিস) গেলেই তারা ঠিক করে দেবেন। ’

ডিন অফিসের কথামত ওই শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় ভর্তি অফিসে যোগাযোগ করেন। অফিসে কর্তব্যরতরা তাকে পছন্দক্রমের প্রিন্টেড কপি নিয়ে আসতে বলেন। কিন্তু ওই শিক্ষার্থী প্রিন্টেড কপি সংরক্ষণে না থাকায় তা দেখাতে ব্যর্থ হন।

তখন ভর্তি অফিসের কর্মকর্তারা তাকে বলেন, তার পছন্দক্রম সঠিকভাবে পূরণ হয়নি অথবা পূরণ করার জন্য লগইন করলেও ঠিকমত সাবমিট করে কনফার্ম করা হয়নি।

ডাটাবেজে পছন্দক্রম সম্পর্কিত কোনো তথ্য তার কাছে নেই। তাই আগামী বৃহস্পতিবারের সাক্ষাৎকারে ওই শিক্ষার্থীর আর অংশগ্রহণ করার সুযোগ নেই বলে জানিয়ে দেয় কেন্দ্রীয় ভর্তি অফিস।

ডিনের অনুমতি ও আসন খালি থাকা সাপেক্ষে পরবর্তী সাক্ষাৎকারের জন্য তার বিষয়টি সমন্বয়ের চেষ্টা করবেন বলে জানান তারা।

ভর্তি অফিস থেকে আরও জানানো হয় খুব দ্রুত ডিন বরাবর আবেদন না করলে পরবর্তী সাক্ষাৎকারও মিস হয়ে যাবে। পরে ওই শিক্ষার্থী মঙ্গলবার অভিভাবকসহ ডিন অফিসে যোগাযোগ করেন।

বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এবং ‘ক’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষার সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. ইউসুফ আলী মোল্লা তার মেধাক্রম অনুযায়ী আগামী বৃহস্পতিবারে গৃহীত প্রথম সাক্ষাৎকারেই অংশগ্রহণের জন্য অনুমতি প্রদান করেন।

অথচ ভর্তি অফিস থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছিলো ওই শিক্ষার্থী কোনো ভাবেই প্রথম সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন না।

কেন্দ্রীয় ভর্তি অফিস জানায়, শারমিন জাহানের মতো মেধা তালিকায় প্রথম দিকে থেকেও কোনো বিভাগের জন্যই মনোনীত হননি এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যা  রয়েছে ১৪ জন।

সরেজমিনে কেন্দ্রীয় ভর্তি অফিসে গিয়ে এরকম সমস্যা নিয়ে একাধিক শিক্ষার্থীকে ভর্তি অফিসে আসতে দেখা গেছে।

অনলাইন ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক হাসিবুর রশীদ বলেন, প্রথমে ‘কোনো শিক্ষার্থীর এরকম কোনো সমস্যা হয়নি। ’ পরে ভর্তি অফিসের তথ্য অনুযায়ী ১৪ জনের সমস্যায় পড়ার ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘এটা অসত্য তথ্য’।  

শারমিন জাহান নামের ওই শিক্ষার্থীর কথা বললে তিনি বলেন, ‘এরকম তো হওয়ার কথা নয়। আর হলেও বিষয়টি আমার জানা নেই। ’

কেন্দ্রীয় ভর্তি অফিসে কর্তব্যরতরা বিরুদ্ধে অশোভন আচরণ করার অভিযোগ উত্থাপন করেছেন একাধিক ভুক্তভোগি।

বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৩
সম্পাদনা: তমাল আবদুল কাইয়ূম, নিউজরুম এডিটর; নূরনবী সিদ্দিক সুইন, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।