ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

সেতুবন্ধন স্ক‍ুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে বই উৎসব

শফিক শামীম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০১৪
সেতুবন্ধন স্ক‍ুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে বই উৎসব ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: নতুন বই নিয়ে বাড়ি ফিরছে শিক্ষার্থীরা। বই হাতে শস্য-শ্যামল মাঠ দিয়ে মনের সুখে হাঁটছে, দৌড়াচ্ছে।

তাদের এই আনন্দ ও খুশির যেন শেষ নেই।

রাজনৈতিক অস্থিরতার মাঝেও বছরের শুরুতেই সারাদেশের শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিয়েছে সরকার। প্রাইমারি পর্যায়ে ঝড়ে পড়া রোধে দেশের ৪ কোটি ৩৩ লাখ ৫৩ হাজার ২শ’ ১ জন শিক্ষার্থীর মাঝে নতুন বই বিতরণের মহাযজ্ঞ সরকার সুষ্ঠুভাবেই পালন করেছে।

বৃহস্পতিবার সারাদেশের ন্যায় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার চনপাড়া সেতুবন্ধন স্কুলের শিক্ষার্থীরাও পেয়েছে নতুন বই। বই হাতে বাড়ি ফেরার সময় চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী তন্নী নিজের ভালোলাগা প্রকাশ করলো এভাবে, ‘আগেও তিনবার নতুন বই পেয়েছি। নতুন বই পেলে কার না ভাল লাগে। আমারও ভাল লাগছে। ’

রিকশা চালক বাবা পড়াতে না চাইলেও এলাকার আসলাম স্যারের কথায় তাকে স্কুলে ভর্তি করেছেন উল্লেখ করে সে বলে, ‘আমি পড়ালেখা করে শিক্ষক হতে চাই। শিক্ষক হয়ে আমাদের মত গরীব মানুষের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষায় সহযোগিতা করতে চাই। কোনো শিশু যেন লেখাপড়া থেকে বাদ না পরে তা নিশ্চিত করতে চাই। ’
অপর শিক্ষার্থী রুমানের ভাষায়, ‘আমাদের স্যাররা খুব ভাল। স্কুলে আসলে দুপুরে বিস্কুট, রুটি, কলা খেতে দেয়। খাতা, কলম, ব্যাগ, জামা, প্যান্ট, জুতা স্কুল থেকে দেয়। কেউ স্কুলে না আসলে স্যাররা বাড়িতে গিয়ে নিয়ে আসেন। ’
RUpgong
সেতুবন্ধন স্কুলের ছাত্র আলামিনের বাবা রোকনউদ্দিন বাবু যেমন জানালেন, ‘আমরা খেটে খাওয়া মানুষ। সংসার চালিয়ে ছেলে-মেয়ের পড়ালেখার খরচ দেওয়া সম্ভব হয় না। এই স্কুলের স্যাররা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছেলে-মেয়েদের স্কুলে নিয়ে আসেন। স্যাররা না থাকলে আমাদের মত গরীব মানুষের ছেলেমেয়েরা পড়ালেখা থেকে বঞ্চিত হতো। ’

শিক্ষার্থী তন্নীর মা হাফিজা বেগম বলেন, ‘আমরা লেখাপড়া জানি না। টানাটানির সংসার বলে মেয়েকে স্কুলে দিতে পারতাম না। স্যাররা বাড়িতে গিয়ে বললো আপনার মেয়েকে স্কুলে দেন কোনো টাকা পয়সা লাগবো না। সেই থেকে স্যারগো হাতে আমার মেয়েকে দেই। এখন আমার মেয়ে লেখাপড়া করে। ও বলে বড় হয়ে মাস্টার হবে। জানিনা কতদিন ওকে পড়াতে পারবো। তবে চেষ্টা করবো যত কষ্টই হোক মেয়েকে পড়াবো। ’

সেতুবন্ধন স্কুলের প্রধান শিক্ষক আসলামুল ইসলাম বলেন, ‘সেতুবন্ধন স্কুলের দুই শতাধিক শিক্ষার্থীদের লেখা-পড়ার সকল খরচ বহন করে ফাউন্ডেশন ইন্টারভিডা। আমরা শুরু থেকে এলাকার গরীব ঝড়ে পড়া শিশুদের স্কুলমুখী করার চেষ্টা করি। কয়েক বছরেই স্কুলটি এলাকার সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়ে যায়। ‘

এখন এলাকাবাসী ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলমুখী করতে সহযোগিতা করেন বলেও জানালেন তিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০১৪
সম্পাদনা: রাইসুল ইসলাম, অ্যাসিস্ট্যান্ট আউটপুট এডিটর (অ্যাক্ট.)  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।