ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনায় শিক্ষার্থীদের দাঁড় করানো যাবে!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৪
রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনায় শিক্ষার্থীদের দাঁড় করানো যাবে!

বরিশাল: কেবলমাত্র রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনায় শিক্ষার্থীদের দাঁড় করানো যাবে! তবে অন্য কোনো জনপ্রতিনিধি কিংবা বিশিষ্ট ব্যক্তিকে সংবর্ধনা জানানোর নামে শিক্ষার্থীদের রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখা যাবে না বলে আবারো সাফ জানিয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

শনিবার সকালে বরিশালে ৪৩তম জাতীয় স্কুল ও মাদ্রাসা শীতকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্ধোধন করার সময় তিনি এ কথা বলেন।



শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, আগে এই ঘটনা অহরহ ঘটলেও গত ৫ বছরে শিক্ষার্থীদের রাস্তায় রোদে-বৃষ্টিতে দাঁড়ানোর সংস্কৃতি বন্ধ করা হয়েছিলো। কিন্তু দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর অতি উৎসাহি কিছু জনপ্রতিনিধি সংবর্ধনার নামে আবারো শিক্ষার্থীদের রাস্তায় দাঁড় করিয়েছেন। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। এই ঘটনা চলতে দেওয়া হবে না, এটা পুরোপুরি বন্ধ করা হবে।
 
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, শুধু ক্ষুদে নয়, কোনো পর্যায়ের শিক্ষার্থীদেরই সংবর্ধনার নামে রাস্তায় দাঁড় করানো যাবে না। এর কারণ হচ্ছে- শিক্ষার্থীরা রোদ-বৃষ্টি-শীতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট পায়। তাদের কষ্ট না দেওয়ার জন্যই এই সংস্কৃতি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এটা আর হবে না।
 
মন্ত্রী বলেন, জনপ্রতিনিধি কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গেলে তাকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ স্বাগত জানাবে। স্কুল-কলেজ কম্পাউন্ডের মধ্যে তাকে সংবর্ধিত করা হবে। কিন্তু কোনোভাবেই শিক্ষার্থীদের কম্পাউন্ডের বাইরে কোনো সংবর্ধনায় ব্যবহার করা যাবেনা।
 
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের রাস্তায় দাঁড়ানোর ব্যাখ্যাও দেন শিক্ষামন্ত্রী।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধানমন্ত্রীর বিষয়টি আলাদা। তারা কোথাও সফরে গেলে তাদের দেখাও একটা ভাগ্যের ব্যাপার।
 
বিগত সংসদে আলোচনার পর কার্টুন ভিত্তিক শিশুতোষ টিভি চ্যানেল ‘ডরিমন’ বাংলাদেশে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কিছুদিন আগে থেকে আবারো ডরিমন চ্যানেলটি চালু হওয়ায় ক্ষুদে শিশু এবং শিক্ষার্থীরা আবারো পড়াশোনা-খাওয়া দাওয়া ছেড়ে চ্যানেলটিতে মগ্ন হয়েছে। এই চ্যানেলটির কার্টুনে শিশুদের দুষ্টুমি-ফাজলামী শেখায় বলে অভিযোগ অভিভাবকদের।

এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেবেন কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে ঢাকায় গিয়ে তিনি তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে পদক্ষেপ নেবেন।
 
পরে বেলা ১১টার দিকে মন্ত্রী বরিশাল শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামে দেশের ৪টি অঞ্চলের ২৩১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৬৭২ জন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে ৪৩তম জাতীয় স্কুল ও মাদ্রাসা শীতকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্ধোধন করেন।

বরিশাল শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামে ৫দিনব্যাপী এই  প্রতিযোগিতায় সারাদেশের ২৩১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ৬৭২ জন প্রতিযোগী ৩৫টি ইভেন্টে চূড়ান্ত পর্বে অংশ নিচ্ছে।
 
প্রতিযোগিতার উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর ৪২ বছর অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য অর্জন করতে পারিনি। শিক্ষাঙ্গনে কেবল ভবন তৈরি করলে লক্ষ্য অর্জন হয় না, লক্ষ্য অর্জনে প্রয়োজন নতুন প্রজন্মের জন্য বিশ্বমানের শিক্ষা নিশ্চিত করা। শিক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মানসিক, সাংস্কৃতিক ও শারীরিক বিকাশ ঘটাতে হবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ফাহিমা খাতুনের সভাপতিত্বে উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- সদর আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য শওকত হোসেন হিরন ও বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য তালুকদার মোহাম্মদ ইউনুস, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, বিভাগীয় কমিশনার নুরুল আমীন, জেলা প্রশাসক শহীদুল আলম সহ অন্যান্যরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।