রংপুর: রংপুর পীরগাছার পাঠক শিকড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দুশো ৪৪ জন। অথচ শিক্ষক মাত্র একজন।
স্কুল সূত্র জানায়, একজন শিক্ষক প্রেষণে অন্য বিদ্যালয়ে, অপর দুই শিক্ষক প্রশিক্ষণে রয়েছেন। ফলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় ব্যাঘাত ঘটছে।
জানা যায়, পীরগাছা উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের পাঠক শিকড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৪২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিদ্যালয়টি উপজেলায় বেশ সুনাম রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে শিক্ষক সংকটের কারণে এখানকার শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়ছে লেখাপড়ায়। প্রধান শিক্ষক জহুরুল ইসলাম অবসরে যান ২০০৬ সালের মে মাসে।
দীর্ঘ ৮ বছর ধরে প্রধান শিক্ষকের পদটিও শূন্য। চারজন সহকারী শিক্ষকের মধ্যে গত বছরের ১৪ আগস্ট উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে সহকারী শিক্ষক নাজিরা তাছমিনকে একই উপজেলার গুঞ্জরখাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রেষণে পাঠান। ফলে তিনজন সহকারী শিক্ষক দিয়ে চলছিল এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদান।
কিন্তু সহকারী শিক্ষক জেসমিন আরা বেগমকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে দেওয়ায় তাকে স্কুলের বিভিন্ন কাজের জন্য বাইরে যেতে হয়। তখন দু’জন শিক্ষক দিয়ে চলে এ বিদ্যলয়ের পাঠদান।
২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জেসমিন আরা বেগম ৭ দিনের জন্য বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণে রংপুরে ও সহকারী শিক্ষক নুরে আলম সিদ্দিকী উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে একই প্রশিক্ষণে রয়েছেন। বর্তমানে সহকারী শিক্ষক আলমগীর হোসেন একাই প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণির ২শ’ ৪৪জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করছেন।
স্কুলটিতে গিয়ে দেখা গেছে, সহকারী শিক্ষক আলমগীর হোসেন ৪র্থ শ্রেণির ক্লাস নিচ্ছেন। অন্য ক্লাসের শিক্ষার্থীরা মাঠে খেলাধুলা করছে। কেউ ক্রিকেট খেলছে, কেউবা অন্য খেলায় ব্যস্ত। ৩য় শ্রেণির ছাত্র মোশাররফ হোসেন, সাব্বির হোসেন, আবু হাসান, জানায়, স্যার না থাকায় আমাদের ক্লাস হচ্ছে না। তা আমরা মাঠে খেলছি। এলাকাবাসী আব্দুল গনিণি মিয়া জানান, আমার দুই ছেলে মেয়ে এই স্কুলে লেখাপড়া করে। দীর্ঘদিন ধরে এই স্কুলে শিক্ষক সংকট চলছে। ফলে ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়ার জন্য নয়, খেলার জন্য স্কুলে যায়।
শিক্ষক আলমগীর হোসেন বলেন, আমি কোনো রকমে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করে যাচ্ছি।
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জেসমিন আরা বেগম বলেন, ৮ বছর ধরে এখানে প্রধান শিক্ষক নেই। শিক্ষক চেয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে বারবার আবেদন করা হলেও কোনো কাজ হয়নি।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হরি শংকর সরকার বলেন, ওই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ একজন সহকারী শিক্ষক দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৪