খুলনা: খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি দেব দুলাল বাড়ৈ বাপ্পীসহ মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা দায়েরের প্রতিবাদে খুলনা মহানগরীর ৫টি সরকারি কলেজে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট শুরু করছেন ছাত্ররা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তাদের এ ধর্মঘট শুরু হয়।
কলেজগুলো হলো-খুলনা সরকারি মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজে, বিএল কলেজ, সরকারি সুন্দরবন কলেজ, আজমখান সরকারি কর্মাস কলেজ ও খুলনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট।
মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি অমিতাভ ঘোষ বৃহস্পতিবার সকালে বাংলানিউজকে বলেন, মহানগর সভাপতি দেব দুলাল বাড়ৈ বাপ্পীসহ একাধিক নেতাকর্মীর নামে মামলা দায়ের হওয়ার প্রতিবাদে খুলনার ৫টি সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ বৃহস্পতিবার থেকে অর্নিদিষ্টকালের জন্য ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।
তাদের ডাকে সাধারণ ছাত্ররা ক্লাস বন্ধ করেছেন বলে দাবি করেন তিনি।
মামলা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত এ ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে বলেও জানান মহানগর এ ছাত্রলীগ নেতা।
জানা যায়, খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি দেব দুলাল বাড়ৈ বাপ্পী ও তার ভাই সজল বাড়ৈসহ ছাত্রলীগের ৪ নেতার নাম উল্লেখ করে বুধবার অস্ত্র ও মাদক আইনে মামলা দায়ের করে পুলিশ। নগর গোয়েন্দা শাখার সাব-ইন্সপেক্টর রাশিদুল ইসলাম বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার অন্য দুই আসামি হচ্ছেন নগরীর সরকারি আজম খান কমার্স কলেজ ছাত্রলীগ নেতা সবুজ হাজরা ও আব্দুল্লাহ আল মামুন। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাত পরিচয়ধারী ছাত্রলীগের আরও ৬/৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী নগর গোয়েন্দা শাখার সাব-ইন্সপেক্টর রাশিদুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার রাতে নগরীর সরকারি আজম খান কমার্স কলেজর একটি কক্ষ থেকে অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। এখানে রাজনৈতিক পরিচয় দেখা হয়নি।
তবে এজাহারভুক্ত কোনো আসামিকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
নগর গোয়েন্দা পুলিশ মঙ্গলবার রাতে সরকারি আজম খান কমার্স কলেজের রেড ক্রিসেন্ট অফিস কক্ষে তল্লাশি চালায়। এ সময় তারা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দীপক কুমার রায়ের উপস্থিতিতে একটি কাটা বন্দুক, একটি বিদেশি ৭ দশমিক ৬৫ মিলিমিটার পিস্তল, ১২ রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগজিন, পিস্তল রাখার কভার, তিনটি দা, ফেন্সিডি, ফেন্সিডিলের ৭টি খালি বোতল, ইয়াবা এবং হেরোইন সেবনের বিপুল পরিমাণ উপকরণ উদ্ধার করে।
প্রতিপক্ষের ওপর হামলার জন্য কলেজের কয়েকজন প্রভাবশালী ছাত্র এ অবৈধ অস্ত্র মজুদ রেখেছিল বলে সূত্রে জানা যায়।
সূত্রটি আরও জানায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত দু’সপ্তাহ আগে আজম খান কলেজে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষের ঘটনা ঘটে। এতে ২০ ছাত্র গুরুতর আহত হন। পরে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ঘোষণা দিয়ে খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের সব কার্যক্রম স্থগিত করে।
বাংলাদেশ সময়: ১১১২ ঘণ্টা মার্চ ০৬, ২০১৪