ইবি (কুষ্টিয়া): ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) পুলিশ ও ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষের জের ধরে রোববার গভীররাতে হল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সোমবার দুপুর ১২টার আগে হল ছাড়ার নির্দেশ থাকায় বাধ্য হয়েই ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের।
গভীর রাতে হল ছাড়ার সিদ্ধান্ত হওয়ায় অধিকাংশ শিক্ষার্থী বিষয়টি জানতো না। সকালে ঘুম থেকে উঠে হল ত্যাগের কথা শুনে কিংকর্তব্য বিমূঢ় হয়ে পড়ে অনেকে।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী ইমি খান বাংলানিউজকে বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে শুনি ১২টার মধ্যে হল ছাড়তে হবে। কোনো কিছু বোঝার আগেই হল থেকে বের হয়ে দুই ঘণ্টা রাস্তায় বাসের জন্য অপেক্ষা করছি।
বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র রাসেদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ১৮ আগস্ট আমার মাস্টার্স পরীক্ষা শুরু হয়েছে। কোরবানির ছুটির আগে পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন কি হবে বুঝতে পারছি না।
তিনি আরো বলেন, ২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি। শিক্ষা জীবনের এই অন্তিম মুহূর্তে এসে জটের খাতাটা ভারি হয়ে যাচ্ছে। বাড়িতে গেলে সবাই বলে তোর পড়ালেখা কবে শেষ হবে। তখন আমার কিছু বলার থাকে না।
এদিকে, ক্যাম্পাস থেকে ঘরমুখো শিক্ষার্থীর বাড়তি চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে পরিবহন কর্তৃপক্ষ।
আবার তাদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রায় দেড় থেকে দুই গুণ বেশি ভাড়া আদায় করারও অভিযোগ উঠছে।
কুষ্টিয়া-খুলনা রুটের গড়াই পরিবহনের চালক জসিম বেশি ভাড়া নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী যাতে ভালোভাবে বাড়ি ফিরতে পারে সেজন্য আমরা আজ ১০ মিনিট পর পর গাড়ি ছাড়ছি। তবে যাত্রীর চাপ অনেক বেশি।
রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের সামনে ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ছাত্রলীগের কমপক্ষে ২০ নেতাকর্মী আহত হয়। এদের মধ্যে পাঁচজন রাবার বুলেট বিদ্ধ। এছাড়া সংঘর্ষে ১২ জন পুলিশ সদস্যও আহত হয় বলে সূত্র জানিয়েছে।
এ ঘটনার জের ধরে ইবিতে সোমবার থেকে লাগাতার ধর্মঘটের ডাক দেয় ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।
এনিয়ে ক্যাম্পাসে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেজন্য সবাইকে হল ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
৮ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় সব হল খুলে দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১৪