ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

ঢাবিতে নারী হন সম্ভ্রমহারা, প্রক্টর খেলেন দাবা

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০১৫
ঢাবিতে নারী হন সম্ভ্রমহারা, প্রক্টর খেলেন দাবা অধ্যাপক ড. এ এম আমজাদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ক্যাম্পাসের ভেতরে দুর্বৃত্তদের দ্বারা ১৫-২০ জন নারী উত্তক্ত্যের শিকার হয়েছেন ঘণ্টা দুয়েক আগে। এ ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে হাত ভেঙে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী ও ছাত্রনেতাকে।



অথচ গুরুত্বপূর্ণ এ ঘটনাটি জানাতে প্রক্টরের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেলো তিনি আয়েশের সঙ্গে দাবা খেলায় মত্ত!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ এম আমজাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করলেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা।

ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যর্থতার গুরুতর অভিযোগ তুলে তারা বলেছেন, নিরাপত্তা নিশ্চিতে অসমর্থ হলে ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে প্রক্টরসহ পুরো বডিকে পদত্যাগ করা উচিত।

বুধবার (১৫ এপ্রিল) মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাবি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি লিটন নন্দী অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে থেকেই ৩০-৩৫ জন দুর্বৃত্তের সংঘবদ্ধ একটি দল প্রায় দেড়ঘণ্টা ধরে কয়েক নারীকে উত্তক্ত্য ও যৌন হয়রানির চেষ্টা করছিল। একপর্যায়ে আমি নিজের গায়ের পাঞ্জাবি খুলে এক নারীর সম্ভ্রম রক্ষার চেষ্টা করি। তখন ওই দুষ্কৃতিকারীরা আমার হাত ভেঙে দেয়।

নিরূপায় হয়ে আমি যখন প্রক্টর স্যারকে ফোন দিলাম তখন তিনি বললেন, আমি গেলেই বা কী করতে পারতাম বলো?

লিটন নন্দী অভিযোগ করে বলেন, আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তুহিনের (ঢাবি শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক) নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা যখন প্রক্টরের কাছে যান তখন তিনি আয়েশ করে দাবা খেলছিলেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তুহিন দাস বাংলানিউজকে বলেন, আমি সংগঠনের ২০/২৫ নেতাকর্মীকে নিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে প্রক্টর স্যারের অফিসে যাই। তখন দেখি তিনি দাবা খেলছেন। অথচ ঘণ্টা দুয়েক আগে ক্যাম্পাসের মধ্যে এতবড় একটা ঘটনা ঘটে গেছে।

তুহিন দাস জানান, প্রক্টরের কাছে ঘটনাটি তুলে ধরলে তিনি বলেন, পুলিশ তাকে সাহায্য করছে না। কথাটি তিনি অফিসিয়ালি বলছেন কি না জানতে চাইলে প্রক্টর তাদের বলেন, তিনি এটা অফিসিয়ালি বলছেন।

এ বক্তব্যের ব্যাপারে ঢাবির ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ এম আমজাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি তা অস্বীকার করে বাংলানিউজকে বলেন, আমি যেটা বলেছি সেটা হলো, নিরাপত্তা নিয়ে আমাদের যে পরিকল্পনা ছিল, পুলিশ সেটি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারেনি।

লিটন নন্দীর অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, লিটন যখন আমাকে ফোন দিয়েছে। তখন আমি তাকে বলেছি, আমি দ্রুত পুলিশ পাঠানোর ব্যবস্থা করছি।

সংবাদ সম্মেলনে লিটন নন্দী আরও বলেন, আমার হাত ভেঙে যাওয়ার পর প্রক্টরকে ফোন দিলে তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দীর গেটতো বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা। তার মানে, তিনি জানেনই না যে গেট বন্ধ হয়েছে কি না। ‍

নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনে প্রক্টরিয়াল টিমের যে সদস্যরা গাড়ি করে ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়ান, তাদের প্রধান কাজ ক্যাম্পাসের ফুটপাতের দোকানগুলোতে চাঁদাবাজি করা বলে লিটন অভিযোগ করেন।

তবে এ অভিযোগও অস্বীকার করেছেন ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ এম আমজাদ।

বাংলাদেশ সময়: ০০৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০১৫
এসএ/এসআর/আরএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।