ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: কাজ শুরুর নয় বছর পর অবশেষে উন্মোচিত হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণে নির্মিত বুদ্ধ মূর্তিটি।
অহিংসা, সাম্য ও শান্তির প্রতীক হিসেবে ৩০ ফুট উচ্চতার মূর্তিটির কাজ ২০০৬ সালে শুরু হলেও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিরোধীতায় তা দীর্ঘদিন আটকে ছিল।
বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এই বৌদ্ধমূর্তি উন্মোচন করেন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
মূর্তিটি উন্মোচন উপলক্ষে ‘বুদ্ধ মূর্তি উন্মোচন ও জীবন্যাস’ শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করে বুদ্ধ মূর্তি উন্মোচন কমিটি।
আলোচনা সভায় আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অসাম্প্রদায়িকতার চেতনায় বিশ্বাস করে। সেই বিশ্বাসই আমাদের এই মানবতায় প্রতিষ্ঠিত করেছে। এই মূর্তি মানবতার প্রতীক। এই মূর্তির সঙ্গে ছবি তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা সেই মানবতাকে আর্দশ হিসেবে ধারণ করবে। ’
পালি ও বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগের তৎকালীন চেয়ারম্যান সুকোমল বড়ুয়ার উদ্যোগে মূর্তিটির নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল।
সুকোমল বড়ুয়া বলেন, ‘এটি নির্মাণ করতে গিয়ে অনেক কষ্ট পেয়েছি। এর জন্য কাজ করতে গিয়ে আমাকে বাসা ছাড়তে হয়েছিল। এতদিন পর আমাদের স্বপ্ন পূর্ণ হয়েছে। আমি ধন্য। সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ। ’
তিনি আরও বলেন, তিনি এগিয়ে না এলে হয়ত বৃহৎ, দৃষ্টিনন্দন, শান্ত, সৌম্য এই মূর্তিটি তৈরি করা সম্ভব হত না। যখন এই মূর্তিটি নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তখন বোঝা যায়নি যে ৫০-৬০ লাখ টাকা লেগে যাবে।
বুদ্ধ মূর্তিটি নির্মাণে অর্থায়ন করেছেন বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি-ঢাকা অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক স্বপন বড়ুয়া চৌধুরী।
স্বপন বড়ুয়া বলেন, আমি বিশ্বাসে অটল ছিলাম যে, বুদ্ধ মূর্তিটি প্রতিষ্ঠা করতে পারব।
বৌদ্ধ মূর্তি উন্মোচন কমিটির সদস্যরা জানান, এই মূর্তির উচ্চতা ৩০ ফুট, প্রস্থ ১৬ ফুট, মাটির নিচে প্রায় ১৬ ফুট গভীর সম্পূর্ণ পাথর দিয়ে ঢালাই করা আরসিসি কলাম দ্বারা নির্মিত।
জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক অসীম সরকারের সভাপতিত্বে এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন-একুশে পদকপ্রাপ্ত সংঘমনীষা সংঘনায়ক শুদ্ধানন্দ মহাথের, বৌদ্ধ ধর্মাঙ্কুর সভা, কলকাতার সাধারণ সম্পাদক বৌধিপাল মহাথের প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ০১৫৪ ঘণ্টা, মে ২, ২০১৫
এসএ/আরএ