ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

এমপিও বঞ্চিত আটশ’ কম্পিউটার শিক্ষকের মানবেতর জীবনযাপন

বাংলানিউজটিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৭ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৫
এমপিও বঞ্চিত আটশ’ কম্পিউটার শিক্ষকের মানবেতর জীবনযাপন ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষা তরুণ প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে সরকার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা) কম্পিউটার শিক্ষকের পদ সৃষ্টি করে।

বিধি মোতাবেক নিয়োগ দেওয়া হয়।

কিন্তু এমপিও (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) না দেওয়ায় সারাদেশে আট শতাধিক শিক্ষক মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ব্যাহত হচ্ছে কম্পিউটার শিক্ষা।

তরুন প্রজন্মকে তথ্য প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ করতে এসব শিক্ষকদের এমপিও প্রদানের দাবি জানানো হয়েছে।

সোমবার সকালে (১৮ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘বাংলাদেশ এমপিও বঞ্চিত সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) কমিটি’ আয়োজিত মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়।

দিনাজপুর কালিয়াগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক কলেশ সরকার বলেন, ২০১৩ সালের এপ্রিলে কম্পিউটার ও গণিতে দুই শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়।

২০১৪ সালের এপ্রিলে গণিত শিক্ষককে এমপিও দেওয়া হলেও আমাকে দেওয়া হয়নি। গত আড়াই বছরেও এমপিও না হওয়ায় আমাকে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ থেকে আসা শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, ২০১২ সালে বিধি মোতাবেক কম্পিউটার শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাই। বিদ্যালয় থেকে নামমাত্র সম্মানি দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত সব বিষয়ে একাধিক শিক্ষক থাকলেও কম্পিউটার শিক্ষক মাত্র একজন।

৫টি শ্রেণীর কম্পিউটার শিক্ষা বিষয়ে শ্রেণি কার্যক্রম একা চালাতে হয় আমাকে। কিন্তু বিদ্যালয় থেকে যে সম্মানি দেওয়া হয় তাতে সংসার চলে না।

ছেলেমেয়ের মুখে দু’ মুঠো ভাত তুলে দেওয়া ও তাদের ভবিষ্যৎ বির্নিমাণে রাতে অন্য একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে হচ্ছে।

পেটে ভাত না থাকলে দেশ কিভাবে তথ্য প্রযুক্তিতে এগিয়ে যাবে, তার প্রশ্ন। তার মতো অনেক প্রতিষ্ঠানের এ বিষয়ের শিক্ষক মানবেতর জীবনযাপন করছেন বলে জানান তিনি।

সংগঠনের যুগ্ম আহবায়ক এস এম শামীমুর রহমান বলেন, সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার শিক্ষকের পদ সৃষ্টি করে।

কম্পিউটার শিক্ষকের পদকে প্যাটার্নভুক্ত ১১ জন শিক্ষকের একটি করা হয়, আবশ্যিক করা হয় কম্পিউটার শিক্ষা বিষয়কে।

২০১১ সালের আগে পর্যন্ত বেসরকারি সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা) নিয়োগকৃত কম্পিউটার শিক্ষকের (সহকারী শিক্ষক) পদকে এমপিওভুক্ত করা হয়।

কিন্তু ২০১১ সালের ১৩ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় অর্থ বরাদ্দ নেই উল্লেখ করে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কম্পিউটার বিষয়ে শিক্ষকের এমপিওভূক্তি স্থগিত করে।

এ বিষয়ে অতিরিক্তি শাখা খোলা ও শিক্ষক নিয়োগ করা হলে তা প্রতিষ্ঠানকে বহন করতে হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু এ বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগে তাগাদা দেওয়া হয়।

গত চার বছরে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় আট শতাধিক শিক্ষক নিয়োগ করা হলেও তাদের এমপিওভুক্ত করা হয়নি।

তিনি বলেন, নিয়োগকৃত শিক্ষকরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এসব শিক্ষকের অনেকের সনদপত্রে চাকরির বয়স শেষ হয়ে গেছে।

কম্পিউটার শিক্ষার ভবিষ্যৎ চিন্তা করে এসব শিক্ষককে এমপিওভুক্ত করতে আগামী বাজেটে অর্থ বরাদ্দ রাখার দাবি জানান তিনি।

অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তিনি। মানববন্ধন শেষে প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৭ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৫
ইএস/আরইউ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।