জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের পাশ্ববর্তী একটি একাডেমিক ভবনে তিনটি বিভাগের চলমান অচলাবস্থা নিরসনে এক ঘণ্টার মধ্যে ওই ভবন খালি করার নির্দেশ দিয়েছে জাবি প্রশাসন।
মঙ্গলবার (২৬ মে) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক সৈয়দ মোহম্মদ কামরুল আহছান এ তথ্য জানান।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তাত্ত্বিক বিজ্ঞান ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকদের জিম্মি করে বিভাগটি দখলে নিয়েছেন। পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চার শিক্ষক ও কয়েকজন কর্মচারি জিম্মি রয়েছেন বিভাগের ভিতরে। ওই দুই বিভাগের শিক্ষার্থীরা ভবনটিতে কাউকেই প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২৬ মে) দুপুরে দেড়টার দিকে ভূ-তাত্ত্বিক বিজ্ঞান ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের তালা ভেঙে নতুন তালা ঝুলিয়ে দিয়ে অবস্থান নেয়।
এসময় তারা পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি এ এন এম ফখরুদ্দিন, শিক্ষক এ এইচ এ সা’দৎ, মোহাম্মদ এমাদুল হুদা ও ফাহমিদা পারভীনসহ কয়েকজন কর্মচারী ভবনের ভেতরে আটকা পড়েন।
এ ঘটনার পর পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে তারা ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে তাদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে সাংবাদিকরা ভিতরে প্রবেশ করতে চাইলে তাদেরও প্রবেশ করতে দেয়নি ভূ-তাত্ত্বিক বিজ্ঞান ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি শরীফ উদ্দিন, শিক্ষক এমদাদুল ইসলাম, আবু সাঈদ মো. মোস্তাফিজুর রহমান এবং ভূ-তাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক হাসান ইমামের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীরা পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের তালা ভেঙে শিক্ষক ও কর্মচারিদের জিম্মি করে বিভাগ দখলে নেয়।
জিম্মি হওয়া শিক্ষক ফাহমিদা পারভীন বলেন, তারা হঠাৎ করে আমাদের বিভাগের তালা ভেঙে বিভাগটি দখলে নেয়। তারা আমার কক্ষটি দখল করে রেখেছে।
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি শরীফ উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সদস্য শরীফ এনামুল কবির, উপাচার্যসহ তিন বিভাগের শিক্ষকদের মধ্যে যে সমঝোতা হয়েছে তার পরিপেক্ষিতে আমরা ভবনের একাংশ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছি। কোনো শিক্ষককে জিম্মি করা হয়নি। তারা ইচ্ছা করলে চলে যেতে পারেন।
গত ৩০ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগকে ভবনের ৩য় তলা বরাদ্দ দেয়। পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ ওই ভবনের তৃতীয় তলায় উঠে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। সিন্ডিকেটের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে ভবনের ১ম থেকে ৩য় তলা পর্যন্ত হস্তান্তরের দাবিতে সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রেখে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন ভূ-তাত্ত্বিক বিজ্ঞান ও কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
বাংলাদেশ সময়: ২৩১১ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১৫
ওও/এমজেএফ/এসইউজে/এসএস