ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

বস্তিতে ঈদানন্দ পৌঁছে দিলো নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৫
বস্তিতে ঈদানন্দ পৌঁছে দিলো নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ঈদ আসে খুশির বার্তা নিয়ে। সেই খুশিকে সমাজের হতদরিদ্র পরিবারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে চেয়েছে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সোস্যাল সার্ভিসেস ক্লাব (এনএসইউএসএসসি)।



ঈদ উপলক্ষে ক্লাবটি কুড়িল বস্তির দুইশ পরিবারের হাতে ঈদসামগ্রী তুলে দিয়েছে। এ ঈদসামগ্রী পেয়ে হাসি ফুটে ওঠে শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার মুখে।
মঙ্গলবার দুপুরে এনএসইউএসএসসি ক্লাবের সদস্যরা  ঈদসামগ্রী বিতরণ করেন।

ক্লাব সদস্যরা জানান, গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ‘স্পন্সরিং অ্যান ঈদ’ শিরোনামে চারদিন ব্যাপী ক্যাম্পেইনে নগদ অর্থ ও দ্রব্য সামগ্রী নিয়ে এগিয়ে আসেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। এ কর্মসূচিতে মোট ৯১ হাজার টাকা আদায় হয়। তা দিয়েই ঈদসামগ্রী কেনা হয়েছে।

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, অর্থ আদায়ের পাশাপাশি স্থানীয় কুড়িল বস্তিতে দুইশ পরিবারকে চিহ্নিত করে তাদের কিছু কুপন সরবরাহ করা হয়। সে কুপন দেখিয়েই মঙ্গলবার ঈদসামগ্রী বিতরণ করেন তারা। ঈদসামগ্রীর প্রতিটি ব্যাগে ৫২০ টাকা সমমূল্যের সেমাই, তেল, মশলাসহ ঈদের দিনের ঐতিহ্যবাহী খাবার তৈরি করার সামগ্রী দেওয়া হয়।

নির্ধারিত সময়ে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টি উপেক্ষা করে কুপন হাতে করে হাজির হয়েছেন দুইশ পরিবারের সদস্যরা। শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই আগ্রহ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। এনএসইউএসএসসি সদস্যরা পরম মমতায় তাদের হাতে যখন প্যাকেট তুলে দিচ্ছিলেন, অসীম কৃতজ্ঞতার সঙ্গে তা গ্রহণ করছিলেন হতদরিদ্র পরিবারগুলোর সদস্যরা। আর ছোটদের মুখে দেখা যায়, খুশির ঝিলিক।  

জোনাকি নামে আট বছরের এক শিশু বাংলানিউজকে জানায়, ‘খুব ভালো লাগতাছে। ঈদের দিন এগুলো দিয়া মা ভালো ভালো খাবার রান্না করবো। সবাই মিলে খাবো। খুব মজা হবে। ’

আফরোজা বেগম বলেন, দুটো সন্তান নিয়ে বস্তিতে থাকি। স্বামী ঝালাইয়ের কাজ করেন। সুযোগ পেলে আমিও বিভিন্ন কাজ করি। অভাবের সংসারে ঈদের বাজার বলতে তেমন কিছুই করা হয় না। ছাত্রদের দেওয়া এসব জিনিস পেয়ে ঈদটা অন্যরকম কাটবে আমাদের!

এনএসইউএসএসসি’র সাবকমিটি সদস্য আসিফ মাহমুদ বলেন, গত চার বছর ধরে আমরা হতদরিদ্রদের মধ্যে ঈদসামগ্রী বিতরণ করে আসছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা অর্থই আমাদের সম্বল।

এনএসইউএসএসসি’র প্রেসিডেন্ট খালেদ মো. সিরাজ বলেন, ঈদ যে খুশির বার্তা নিয়ে আসে, হতদরিদ্র পরিবারের সেই খুশি পরিপূর্ণ রূপ পায় না। তারা হয়ত কোরবানির মাংস পেয়ে থাকেন। কিন্তু ঘরের অন্য সামগ্রী কিনতে সে মাংসগুলোও কমমূল্যে বিক্রি করতে বাধ্য হন।

তারা জানান, এদের অনেকেই ঈদে কবে ভালো খাবার খেয়েছেন, তাও মনে করতে পারেন না। সেই ভাবনা থেকেই আমরা চাল, তেল, ঘি, সেমাইসহ নানা ঈদসামগ্রী এসব পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এছাড়া রমজানে এতিমদের সঙ্গে ইফতার ছাড়াও দরিদ্রদের মধ্যে কাপড় বিতরণ করেছে এনএসইউএসএসসি সদস্যরা।

এ কর্মকাণ্ড আরো বিস্তৃত করার ইচ্ছা আছে বলেও বাংলানিউজকে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৫
জেপি/এবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।